ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

এতিম আঙ্গুরীর বিয়ে, আয়োজন ছিল ৬০০ লোকের!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২২
এতিম আঙ্গুরীর বিয়ে, আয়োজন ছিল ৬০০ লোকের! আঙ্গুরীর বিয়ে

ফরিদপুর: ধুমধাম আয়োজন। ৬০০ লোকের খাবারের আয়োজন।

সাজানো গেটসহ ছিল প্যান্ডেল। এসেছিলেন ৫০ জনের বরযাত্রী। দেখে মনে হবে যেন কোনো ধনী পরিবারের সন্তানের বিয়ের অনুষ্ঠান। কিন্তু এই আয়োজন শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে বেড়ে ওঠা বাবা-মা হারা আঙ্গুরীর জন্য। বাবা-মা পরিবার না থাকলেও সব আয়োজন সম্পূর্ণ করেই বিয়ে হলো আঙ্গুরীর।  

ফরিদপুর শহরের বায়তুল আমানের বাসিন্দা আঙ্গুরীর বাবা মোতালেব শেখ মারা যান জন্মের আগেই, চার বছর বয়সে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান মা ঝর্না বেগম। এরপর আঙ্গুরী নানির কাছে থাকা শুরু করলেও কিছুদিনের মধ্যে নানিও মারা যান। পরে স্থানীয় এক সমাজকর্মীর মাধ্যমে আঙ্গুরীর জায়গা হয় ফরিদপুর শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে।  

শনিবার (২০ আগস্ট) দুপুরের দিকে সেই আঙ্গুরীর বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে জেলা শহরের কমলাপুরের পুনর্বাসন কেন্দ্রে। বর শহরের বায়তুল আমান এলাকার ইউনুছ সরদারের ছেলে মুরাদ সরদার।

এই কেন্দ্রের উপ-প্রকল্প পরিচালক সৈয়দা হাসিনা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, আঙ্গুরী যখন এখানে আসে, তখন তার বয়স ছিল ৫ বছরের একটু বেশি। এখন আঙ্গুরীর বয়স ১৮ বছর। দীর্ঘ ১২টি বছর সে এখানে ছিল। ১৮ বছর হওয়ার পর সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা ওর জন্য একটা উপযুক্ত পাত্র খুঁজতে থাকি। ওর দাদা বাড়ির এলাকারই একজন পাত্র পেয়ে যাই। ছেলে ফার্নিচারের ব্যবসা করে। মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবারের একটি মেয়ের যেভাবে বিয়ে হয়, ঠিক সেভাবেই বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। কনের কিছুর কমতি করা হয়নি, যাতে ওদের মনে কোনো কষ্ট না থাকে। বিয়েতে জামা-কাপড়সহ বিভিন্ন উপহার তাদের দেওয়া হয়েছে।  

উল্লেখযোগ্য, মেয়েকে একটি সেলাই মেশিন দেওয়া হয়েছে, আর ছেলেকে তার কাজের সহায়ক হয়, এমন কিছু করা হবে, যদি ছেলেটি তা চায়।  

তিনি আরও বলেন, বর মুরাদ সরদার ৫০ জন সঙ্গীসহ এসছিলেন, দুই লাখ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ে পড়ানো হয়েছে।

বিয়েতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জেলা প্রশাসক (ডিসি) অতুল সরকার, সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. কামরির ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্যা, পৌর মেয়র অমিতাভ বোস, ফরিদপুরে কর্মরত বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের নেতারা, এনজিও ব্যক্তিত্ব, ব্যবসায়ীসহ ছয় শতাধিক অতিথি।

এমন আয়োজনে বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছে দেখে খুশি বিয়ের পাত্র-পাত্রী। পাত্রী আঙ্গুরী সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন, যাতে তাদের নতুন জীবন সুখের হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।