ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সরকারি ‘স্বপ্নযাত্রা’ অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে রাজনৈতিক সভায় ইউপি চেয়ারম্যান 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২২
সরকারি ‘স্বপ্নযাত্রা’ অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে রাজনৈতিক সভায় ইউপি চেয়ারম্যান 

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত ‘স্বপ্নযাত্রা’ নামক অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে রাজনৈতিক সভায় যোগ দিয়েছেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আল্লামা মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ।

তিনি বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা।

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় কমলনগরের চরকাদিরা থেকে রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের খাসের হাটের চমকা বাজার এলাকায় যান তিনি। সেখানে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলতাফ মাস্টারের জামাতা মো. মুরাদের বাড়িতে একটি রাজনৈতিক সভা ছিলো ইসলামী আন্দোলনের।  

জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে ইউনিয়ন পরিষদে দেওয়া ‘স্বপ্নযাত্রা’ নামক অ্যাম্বুলেন্স কোনো ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক কাজে ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ওই ইউপি চেয়ারম্যান রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত অ্যাম্বুলেন্সটি নিয়ে সেখানে অবস্থান করেন। এ সময় উপস্থিত সংবাদিকরা তাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করে এসেছেন বলে জানান। যদিও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়েছেন- তিনি এ বিষয়ে কিছু জানতেন না।  

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বিভিন্ন ইউনিয়নের একটি করে অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছেন। উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে স্ব-স্ব  ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে অ্যাম্বুলেন্সের সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। সঠিক নিয়মে অ্যাম্বুলেন্স পরিচালনার জন্য একটি নীতিমালা তৈরী করে দেন জেলা প্রশাসক। নীতিমালা অনুযায়ী শুধুমাত্র ভর্তিযোগ্য ও ভর্তিকৃত রোগীরা হাসপাতাল থেকে বাড়ি বা বাড়ি থেকে হাসপাতালে আসা-যাওয়া করার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করতে পারবে। কোনো অবস্থাতেই রোগী বহন ছাড়া অন্য কোনো কাজে ব্যবহার কার যাবে না। এছাড়া ব্যক্তিগত অথবা রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে নীতিমালায়।  

কিন্তু কমলনগরের চর কাদিরা ইউপি চেয়ারম্যান খালেদ সাইফুল্লাহ এসব নীতিমালা অমান্য করে ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক কাজে অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহার করেছেন। এর আগেও রাজনৈতিক কাজে তিনি অ্যাম্বুলেন্সে করে যাতায়াত করেন। এতে জনমনে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।  

জানতে চাইলে চেয়ারম্যান খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, আমি ইউএনও এবং সহকারী কমিশনারের (ভূমি) অনুমতি নিয়েই এখানে এসেছি।  
অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া হয় না, তাই তিনি নিজেই ভাড়া নিয়ে আসছেন জানিতে বলেন, চরকাদিরার ফজুমিয়ারহাট বাজারে দুটি প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স আছে। তাই ইউনিয়ন পরিষদের অ্যাম্বুলেন্সে ভাড়া হয় না। কিন্তু চালককে বেতন দিতে হয়। এজন্য আমি ভাড়া হিসেবে অ্যাম্বুলেন্সটি এনেছি। অন্যকোনো গাড়ি আনলেও আমাকে ভাড়া দিতে হতো।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব প্রাণ গোবিন্দ দাস বাংলানিউজকে বলেন, অ্যাম্বুলেন্সটি ইউনিয়নের নির্দিষ্ট একটি জায়গায় থাকার কথা। চেয়ারম্যান এটা দিয়ে অন্য কোথাও গেছে কিনা, সেটা আমার জানা নেই। তবে ব্যক্তিগত কাজে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের নিয়ম নেই।  

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে কোনো রাজনৈতিক কাজে অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহার কার যাবে না। আমি খোঁজ-খবর নিচ্ছি।  

মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ এর আগে একটি মাহফিলের তার দেওয়া এক বক্তব্য নিয়ে আলোচনায় আসেন। বক্তব্যে তিনি এলাকার উচ্চ স্বরে গান-বাজনা করলে ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং কোনো অভিভাবক বোরকা ছাড়া মেয়েদের স্কুলে না পাঠানোর বক্তব্য দিয়ে আলোচিত এবং সমালোচিত হন।

বাংলাদেশ সময়: ০১১০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২২
এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।