ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বরিশালের লঞ্চে ভাড়ার চিত্র উল্টা!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২২
বরিশালের লঞ্চে ভাড়ার চিত্র উল্টা!

বরিশাল: সড়ক ও নৌপথে যাত্রীসেবায় নিয়োজিত পরিবহনগুলোর নতুন ভাড়া নির্ধারণের পর তা আদায় শুরু হয়েছে। নতুন ভাড়া নিয়ে যাত্রী ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া থাকলেও বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদেরই।

তবে এ চিত্রের উল্টোটা ‍ঘটেছে বরিশাল-ঢাকা রুটের লঞ্চের কেবিনের ক্ষেত্রে। জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর কেবিনের যাত্রীদের থেকে পুরনো ভাড়াই আদায় করা হচ্ছে।  

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের তথ্যানুযায়ী, বরিশাল-ঢাকা ১৫০.৫ কিলোমিটার নৌপথের জন্য ডেক ভাড়া জনপ্রতি ৪৩১ টাকা। সেই হিসাবে ডেক ভাড়ার চারগুণ সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া ১ হাজার ৭২৪ এবং ডাবল কেবিনের ভাড়া ৩ হাজার ৪৪৮ টাকা হয়।

যদিও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল-ঢাকা বর্তমান নৌ-রুটের দূরত্ব ১৬১ কিলোমিটার। আর এ নৌপথের নতুন ও বর্তমান ডেকের ভাড়া সরকার নির্ধারিত হিসাব অনুযায়ী আসে ৪৫৯ টাকা। আর ডেক ভাড়ার চারগুণ হিসাবে সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া ১ হাজর ৮৩৬ টাকা এবং ডাবল কেবিনের ভাড়া ৩ হাজার ৬৭২ টাকা।

তবে যাত্রীদের কাছ থেকে আগের সাড়ে ৩শ’ থেকে ডেক ভাড়া বাড়িয়ে ৪শ’ টাকা রাখা হলেও, কেবিনের ক্ষেত্রে আগের ভাড়াই রাখা হচ্ছে জানিয়ে সুন্দরবন লঞ্চ কোম্পানির কাউন্টার ম্যানেজার জাকির হোসেন বলেন, সব লঞ্চে যাত্রীদের কাছ থেকে ডেকের নতুন নির্ধারিত ভাড়া ৪৫৯ টাকার স্থলে ৪শ’ টাকা আদায় করা হচ্ছে। আর কেবিনের ক্ষেত্রে আগের ভাড়াই রাখা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে নন এসি সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া ১ হাজার টাকা ও এসি সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া ১১শ’ টাকা রাখা হচ্ছে।  

অপরদিকে ডাবল কেবিনের ক্ষেত্রে নন এসি ২ হাজার এবং এসি ২২শ’ টাকা রাখা হচ্ছে।

 

 

একই কথা জানালেন বরিশাল-ঢাকা রুটের বিলাসবহুল সুরভী লঞ্চ কোম্পানির ম্যানেজার মো. রেশাদ। তিনি বলেন, তাদের কোম্পানির দুটি লঞ্চ নিয়মিত ঢাকা-বরিশাল রুটে যাত্রীসেবা দিচ্ছে। একটি লঞ্চের চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে যে দুটি লঞ্চ চলছে তাতে সিঙ্গেল কেবিনের বর্তমান ভাড়া ১১শ’ টাকা আর ডাবল কেবিনের ভাড়া ২২শ’ টাকা আদায় করা হচ্ছে। যাত্রীদের কথা বিবেচেনা করে নতুন নির্ধারিত কেবিনের ভাড়া আদায় করা হচ্ছে না। সেইসাথে সোফার ভাড়াও পূর্বের নিয়মানুযায়ী ৭শ’ টাকাই নেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের কাছ থেকে।

এদিকে ঢাকা-বরিশাল রুটে চলা এমভি মানামীর সুপারভাইজার শাহাদাৎ ইসলাম শুভ বলেন, নভেম্বরে তেলের দাম বাড়ানোর পর ডেকের ভাড়া ৩৫২ টাকা করা হয়। তখন সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া ১ হাজার ৪০০ টাকা করা হলেও পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর ডেক ভাড়া ২ থেকে আড়াইশত টাকায় নামানো হয় এবং সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া ১ হাজার টাকা আর ডাবল কেবিন ২ হাজার থেকে ২২শ’ টাকা করা হয়। এতে ধীরে ধীরে যাত্রী বাড়লেও, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় এবার লঞ্চের ভাড়া বেড়েছে। যদিও বাড়তি ভাড়ায় যাত্রী নেওয়া শুরু করলে আবারও যাত্রী কমতে থাকবে। তাই কেবিনের ভাড়া আগের মতো রেখেই ডেকের ভাড়া সাড়ে তিনশত থেকে ৪শ’ টাকা করা হয়েছে। সরকার নির্ধারিত ভাড়া থেকে ৫৯ টাকা কম নেওয়া হচ্ছে।

লঞ্চ পরিচালনাকারীদের মতে, সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায় শুরু করলে কেবিনের যাত্রী কমে যাবে। আর দক্ষিণাঞ্চলের কেবিন নির্ভর এ লঞ্চগুলোতে যাত্রী কমলে লোকসান হবে। তাই সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাড়া রাখার চেষ্টা করছেন তারা।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থার সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, নৌমন্ত্রণালয় সারাদেশের মানুষের কথা চিন্তা করে ৩০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করেছে। এটা দিয়েই আমাদের ভাড়া সমন্বয় করে চলতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২২
এমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।