ঢাকা, রবিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

শ্রমিকের স্বার্থে শ্রম আদালতের সংস্কার প্রয়োজন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২২
শ্রমিকের স্বার্থে শ্রম আদালতের সংস্কার প্রয়োজন

ঢাকা: শ্রম আইন ও শ্রম আদালতকে শ্রমিকদের বিচার পাওয়ার স্বার্থে সংস্কার করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান। তিনি বলেন, মালিকের টাকা আছে, শ্রমিকের টাকা নেই, মামলার দীর্ঘসূত্রিতা হলে শ্রমিকের কষ্টের সীমা থাকে না।

শনিবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, মামলার দীর্ঘসূত্রিতা হলে শ্রমিকরা মামলা থেকে সরে আসে, ফলে মামলায় হেরে যায় শ্রমিক। শ্রম আদালতে যেতে পারলেও হাইকোর্ট-সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার ক্ষমতা শ্রমিকদের নেই।

কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, শ্রমিকদের যখন পিঠ দেয়ালে ঠেকে যায়, তখনই তারা আদালতে আসে। মামলা জটের বিষয়টা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, ২৪ হাজার মামলা এখন বিচারাধীন।

তিনি বলেন, শ্রম আদালতগুলো তৈরি হয়েছে শ্রমিকদের তড়িৎ মুক্তি দেওয়ার জন্য। এখন যদি শ্রম আদালতে বিচার নিষ্পত্তি না করে হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টে যায়, তাহলে শ্রমিকের প্রায় ১ থেকে দেড় লাখ টাকা খরচ পড়বে।

আইনমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হচ্ছে, শ্রম আদালতের বিচারকদের অভিজ্ঞতা কম নয়। মামলা নিষ্পত্তির দীর্ঘসূত্রিতার কারণ হচ্ছে পারিপার্শ্বিক অবস্থা। এসব আদালতের বিচারকদের প্রয়োজনে বিদেশে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

আনিসুল হক আরও বলেন, যদি হাইকোর্টে যাওয়ার সুযোগ না দেওয়া হয় তবে সংবিধানকে মান্যতা দেওয়া হবে না। ফলে আইন বাতিল হবে। ইনডিরেক্ট হলে সংবিধানের স্পিরিট নষ্ট হবে। দুপুর ১টার পরে শ্রম আদালতে আর কাজ হয় না। আদালতের প্রতি জনগণের আস্থা ফেরাতে হবে।

আইনমন্ত্রী আরও বলেন, আইন পরিবর্তনশীল, থেমে থাকে না। আইনের পরিবর্তন সমাজের চাহিদা অনুযায়ী হবে। বিদ্যমান আইনে যদি সুবিধাগুলি আনতে পরি তাহলে আইন পরিবর্তনের প্রয়োজন হয় না।

আইন সচিব গোলাম সারওয়ার বলেন, দ্রুত সময়ে বিচারক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। অন্য যেসকল সংকট রয়েছে সেগুলো শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় দেখবে।

সংসদ সচিব মইনুল কবির বলেন, বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান করেছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনা করেছে। যেটা বিশ্বের কোনো দেশ করেনি। সেই উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে শ্রমিকদের কল্যাণে কাজ করতে হবে। তাদের সন্তানদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, মামলার দীর্ঘসূত্রিতার কারণে ন্যায়বিচার থেকে ন্যায় শব্দ ম্লান হয়ে যাচ্ছে। মামলার দীর্ঘসূত্রিতা রোধ করতে শ্রম ট্রাইবুনাল থেকে আপিল বিভাগে যেতে পারলে একটি ধাপ কমবে বিচার প্রক্রিয়ার। তাহলে মামলার জট কমবে।

শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার অধীর চন্দ্র বালা বলেন, বর্তমানে ১০টি শ্রম আদালত চালু আছে। নতুন তিনটি আদালত চালু হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা ও গাজীপুরে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. সেলিনা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিচারপতি মো. ফারুক, আইএলও, বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটিআইনেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২২ 
এনবি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।