ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দেশের সব চা বাগানে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২২
দেশের সব চা বাগানে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট

মৌলভীবাজার: দৈনিক মজুরি ১২০ থেকে বাড়িয়ে করে ৩০০ টাকা করার দাবিতে শনিবার (১৩ আগস্ট) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য শ্রমিক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন। দেশের ১৬৭ টি চা বাগানের মত মৌলভীবাজারের ৯২টি চা বাগানের শ্রমিকরা অংশ নিচ্ছে এ ধর্মঘটে।

শ্রীমঙ্গল উপজেলার ফিনলে টি কোম্পানি, সাতগাঁও টি, নাহার, এম আর খান, ইস্পাহানি, মির্জাপুর, জঙ্গল বাড়ি, মাজদিহি চা বাগান, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার হামিদিয়া, প্রেমনগর, মৌলভী চা বাগান, কমলগঞ্জ উপজেলার কুরমা, চাম্পারায়, ফুলবাড়ি ও নুরজাহান, ভাড়াউড়া চা বাগানসহ রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখার বিভিন্ন চা বাগানে চতুর্থ দিনের মতো শুক্রবার (১২ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত ২ ঘণ্টা কর্মবিরতি, প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে চা শ্রমিকরা।

চা শ্রমিকরা জানান, তাদের হাঁড়ভাঙ্গা খাটুনিতে প্রতি বছর চা শিল্পে রেকর্ড চা উৎপাদন হচ্ছে। ২০২১ সালে দেশের ইতিহাসে চায়ের রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন ৯৬ মিলিয়ন কেজি চা হয়েছে। কিন্তু তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন আজও হয়নি। চা শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর দুটি চুক্তি বাস্তবায়ন করা হলেও বারবার মার খাচ্ছেন চা শ্রমিকরা।

দেশের অন্যতম বৃহৎ চা শিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রায় দেড় লক্ষাধিক চা শ্রমিকদের মজুরি দৈনিক ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে গত ৯ আগস্ট মঙ্গলবার থেকে মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থিত ৯২টি চা বাগানসহ দেশের ১৬৭টি চা বাগানে কর্ম বিরতি পালন করে চা শ্রমিকরা। তাদের মত দাবি না মানায় অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে চা শ্রমিকরা।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের বালিশিরা ভ্যালির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা বলেন, বর্তমান সময়ে বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কারণে আমাদের চা-শ্রমিকরা দৈনিক ১২০ টাকা মজুরি দিয়ে অনেক কষ্টে দিনযাপন করছেন। প্রতিটি পরিবারে খরচ বেড়েছে। আমরা একাধিক সময়ে বাগান মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করছি। চা শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাগান মালিকদের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী মজুরি বাড়ানোর করার কথা থাকলেও মালিকরা চুক্তি ভঙ্গ করছেন। চা শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর এ দাবি দীর্ঘদিনের। প্রতি বছর মজুরি বাড়ানোর কথা থাকলেও গত ৩ বছর ধরে নানা টালবাহানা করে মজুরি বাড়ানো হচ্ছে না। এতে করে চা শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে আমরা কঠোর আন্দোলনের ডাক দিয়েছি।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল জানান, আমরা প্রায় ৫ দিন ধরে ২ ঘণ্টার ধর্মঘট দিয়ে চেয়েছিলাম যাতে সহজে আমাদের দাবিগুলো পূরণ হয়ে যায়। কিন্তু হয়নি। তাই আমরা বাধ্য হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি- আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

শনিবার (১৩ আগস্ট) সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাগানে কাজ বন্ধ রেখে পূর্ণ দিবস ধর্মঘট পালন করা হবে। প্রতিটি উপজেলায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল সহকারে এই আন্দোলন পরিচালনা করবেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২২
বিবিবি/এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।