ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

শিশু সুরক্ষায় আলাদা অধিদপ্তর বাস্তবায়নে আইনমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১১ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২২
শিশু সুরক্ষায় আলাদা অধিদপ্তর বাস্তবায়নে আইনমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: শিশুর অধিকার ও সুরক্ষায় বিদ্যমান আইনে পরিবর্তনের বাস্তবমুখী পদক্ষেপসহ শিশুদের জন্য আলাদা অধিদপ্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ওয়ার্ল্ড ভিশন’ আয়োজিত শিশু অধিকার বিষয়ক আইনের পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

 

ওয়ার্ল্ড ভিশনের পরিচালক টনি মাইকেলের পরিচালনায় এ অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীর নেতৃত্বে ওয়ার্ল্ড ভিশনের প্রকল্প ‘শিশুর সুরক্ষায় বাংলাদেশে প্রচলিত আইনগুলো পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ’ তুলে ধরা হয়।  

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিডের কারণে শিশুদের জন্য আলাদা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে যত দ্রুত সম্ভব শিশুদের জন্য আলাদা অধিদপ্তর করা হবে। এছাড়া শিশুদের সুরক্ষা ও উন্নয়নের জন্য সরকারের বিদ্যমান আইনে শিশুদের বয়স সংক্রান্ত যা যা পরিবর্তন প্রয়োজন, সরকার তার বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে’।  

শিশুরা দেশের সবচাইতে মূল্যবান সম্পদ, কেননা তাদের হাত ধরেই আসবে সমষ্টিগত উন্নয়ন। শিশুর উন্নয়ন ও শিশু সুরক্ষায় সরকারের ঐকান্তিক ইচ্ছা ও উদ্যোগের পরও শিশুর সুরক্ষা ও নিরাপত্তা সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত করা এখনও সম্ভব হয়নি। শিশুর পরিপূর্ণ সুরক্ষায় শুধু আইন পর্যাপ্ত নয়, আইন বাস্তবায়নে প্রয়োজন সচেতন জনগোষ্ঠী প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাসের সভাপতি শামসুল হক টুকু বলেন ‘ সরকার, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, এনজিওসহ সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা ছাড়া শিশু অধিকার সুরক্ষা করা সম্ভব নয়। শিশু সুরক্ষার জন্য শিশুদেরকে রাজনৈতিক ও ধর্মীয়ভাবে অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে। মাদ্রাসার শিশুদের টুপি পড়িয়ে দিয়ে রাস্তায় চাঁদা আদায় করতে দাঁড় করিয়ে দেয়, এগুলো বন্ধ করতে হবে।

শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাস সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন করবে বলে জানান সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী টুকু।

প্যানেল আলোচনায় অতিথি হিসেবে অংশ নেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকু, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব গোলাম সারোয়ার ও গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরী।  

অনুষ্ঠানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিশু অধিকার বিষয়ক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।  

বক্তারা বলেন, শিশুর সুরক্ষায় বাংলাদেশে প্রচলিত আইনগুলোর পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ দেখানো হয়েছে বিদ্যমান বিভিন্ন আইনে শিশুর বয়স নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন সংজ্ঞা যা শিশুর সুরক্ষা ও উন্নয়নে জটিলতা সৃষ্টি করছে। তাই শিশুদের জন্য প্রচলিত আইন ও নীতিমালাগুলোর সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সরকারের দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন।  

শিশুদের সর্বোত্তম কল্যাণে ওয়ার্ল্ড ভিশন প্রদত্ত সুপারিশসমূহ:  শিশুর বয়স নিয়ে বিভ্রান্তি ও অসঙ্গতি দূর করা, শিশুর সার্বজনীন সংজ্ঞা নির্ধারণ করা, বিয়ের ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের জন্য পৃথক বয়স নির্ধারণ না করা, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে মনিটরিং ব্যবস্থা শক্তিশালী করা এবং বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

এছাড়াও শিশু আইন ২০১৩ এর আলোকে অনতিবিলম্বে বিধিমালা প্রণয়ন করা, বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় শিশুবান্ধব আদালত প্রতিষ্ঠা করা, শিশুশ্রমিক নিয়োগকারীদের জন্য শাস্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করা, শিশু আইন ২০১৩ এ শারীরিক শাস্তির পাশাপাশি শিশুর মানসিক শাস্তির বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫, আগস্ট ১২, ২০২২
এনবি/জেআইএম
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।