ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কচুয়ায় হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ‘মুক্তি সরোবর’

মুহাম্মদ মাসুদ আলম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২২
কচুয়ায় হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ‘মুক্তি সরোবর’ প্রকল্পের নমুনা

চাঁদপুর: চাঁদপুরের কচুয়া পৌরসভায় প্রায় ৩৫ হাজার লোকের বসবাস। আয়তন ১০ বর্গ কিলোমিটার।

‘ক’ শ্রেণির পৌরসভা হলেও প্রতিষ্ঠার পর থেকে কোনো ধরনের বিনোদন কেন্দ্র ছিল না।  

পৌরবাসীর কথা চিন্তা করে ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই প্রায় ১ একর ৯৬ শতাংশ পরিত্যক্ত পুকুরে ‘মুক্তি সরোবর’ নামে বিনোদন কেন্দ্র গড়ার উদ্যোগ নেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। এর ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেন তিনি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে এখন দৃষ্টিনন্দন বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণ কাজ চলমান। এটি নির্মাণের জন্য প্রাথমিকভাবে ৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে বরাদ্দ আরও বাড়াতে হবে বলে জানিয়েছে প্রকৌশল বিভাগ।

খোঁজ নিয়ে ও কচুয়া পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কচুয়া পৌরসভা ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। বর্তমান সরকারের আমলে এটি ‘ক’ শ্রেণিতে উন্নীত হয়। ধাপে ধাপে পৌরসভার যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ অন্যান্য উন্নয়ন হলেও কোনো বিনোদন কেন্দ্র ছিল না। পৌরসভার সব শ্রেণি-পেশার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল একটি বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণ করার। তারই পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রকল্প তৈরি করে ২০২০ সালে ‘মুক্তি সরোবর’ বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণ কাজের টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এরপর ২০২১ সালে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এরই মধ্যে ৬০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ শেষ করতে আরও ছয় থেকে আট মাস লাগবে।

প্রকৌশল বিভাগের তথ্য মতে, বিনোদন কেন্দ্রটিতে শিশুদের জন্য খেলার ব্যবস্থা, বয়স্কদের জন্য হাঁটার ব্যবস্থা, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য মুক্তমঞ্চ নির্মাণ হচ্ছে। এটি নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে শুধুমাত্র কচুয়া পৌরবাসী নয়, পুরো উপজেলার মানুষ বিনোদন এবং সময় কাটানোর সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি কচুয়ার ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সমৃদ্ধ হবে।

কচুয়ার সংস্কৃতি কর্মী প্রিন্স মাহমুদ হাসান বাংলানিউজকে বলেন, পৌর এলাকার লোকজনের বিনোদন কেন্দ্র ছিল না। যার কারণে অর্থ ও সময় অপচয় করে দূরে গিয়ে লোকজন সময় কাটাতেন। এখন এটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে এখানেই সব বয়সী মানুষ আসবেন। বিশেষ করে যুবকরা খারাপ কাজে লিপ্ত না হয়ে এখানে এসে বিনোদনের সুযোগ পাবেন। বর্তমান চিত্র

চাঁদপুর জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মো. সালাউদ্দিন ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, আগামী ৫০ বছরেও কচুয়া পৌরসভায় এত বড় দৃষ্টিনন্দন একটি বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণ হবে আশা করিনি। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মেয়রের এমন উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।  

কচুয়া বাজারের ব্যবসায়ী মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, আমাদের কচুয়ায় বিনোদনের কোনো জায়গা ছিল না। সরকারের উদ্যোগে এ বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণ হলে আমাদের শিশু সন্তানদের জন্য অনেক উপকার হবে। আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি পাবে। বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন আসবেন। ব্যবসা উন্নত হবে।

কচুয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি প্রিয়তোষ পোদ্দার বলেন, এ বিনোদন কেন্দ্রটি নির্মাণ হলে সংস্কৃতি চর্চার একটি সুযোগ হবে। শিগগিরই এটি উদ্বোধন হবে, সেই প্রত্যাশায় পৌরবাসী।

কচুয়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জাকির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, কচুয়ায় একটি বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণের জন্য সংসদ সদস্যের কাছে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানানো হচ্ছিল। এখন এটি নির্মাণ হচ্ছে। আশা করি, আমাদের পরিবারের লোকজন এবং বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন এসে বিনোদনের সুযোগ পাবেন। এতে ব্যবসায়ীদেরও লাভ হবে।

কচুয়া পৌরসভার মেয়র মো. নাজমুল আলম স্বপন বাংলানিউজকে বলেন, এটি নির্মাণ হলে কচুয়া পৌরবাসী এবং জনগণ সারাদিন পরিশ্রমের পর একটু হলেও বিশ্রামের সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি খাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে এবং বয়স্ক লোকজন হাঁটা-চলার সুযোগ পাবেন। আগামী ছয় থেকে আট মাসের মধ্যে এটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি। এরপরই আমরা এটি জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেব।

কচুয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী মো. ফজলুল হক বাংলানিউজকে বলেন, এটি পরিকল্পনা করার সময় আমি ছিলাম না। আমি নয় মাস আগে এখানে এসে যোগদান করেছি। তখন প্রকল্পের প্রায় ৪০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। এটি নির্মাণের জন্য প্রাথমিকভাবে ৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়। কিন্তু প্রকল্পে এটির চার পাশে দেয়াল ছিল। আরও কাজ করতে হচ্ছে। এটি নির্মাণ করার জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ লাগবে। কমপক্ষে ১৫-১৬ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে। অতিরিক্ত বরাদ্দ ও কাজের বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলরা পরিদর্শনে এসেছেন। আশা করি, নির্ধারিত সময়ে এটির কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারব।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad