ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

জ্বালানি তেলের খাজনা মওকুফ করার দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২২
জ্বালানি তেলের খাজনা মওকুফ করার দাবি

ঢাকা: জ্বালানি তেলে ৩৭ শতাংশ খাজনা মওকুফ করার দাবি জানিয়েছে দেশের দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত জনতা।

বুধবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব ভবনের সামনে এক মানবন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে ইমতিয়াজ আহমেদ নামে এক বক্তা বলেন, নতুন দামে ডিজেল ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ ও পেট্রোল ১৩০ টাকা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয়ের কথা বলা হলেও এ মূল্য প্রকৃত নয়। সরকারের নানা প্রকার শুল্ক ও কর সহকারে এ দাম। এ মুল্যের মধ্যে শুল্ক ১০ শতাংশ, ভ্যাট ১৫ শতাংশ, অগ্রিম আয়কর ৫ শতাংশ, অগ্রিম ভ্যাট ৫ শতাংশসহ মোট শতকরা ৩৭ শতাংশ হচ্ছে সরকারি শুল্ক ও কর। এ যেন রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে এক বিরাট লাভজনক ব্যবসা।

তিনি আরও বলেন,ডিজেলের প্রকৃত মূল্য ৮৩ টাকার সঙ্গে শুল্ক ও কর ৩১ টাকা মিলিয়ে নতুন মূল্য ১১৪ টাকা, পেট্রোলের প্রকৃত মূল্য ৯৪ টাকার সঙ্গে শুল্ক ও কর ৩৬ টাকা মিলিয়ে নতুন মূল্য ১৩০ টাকা এবং অকটেনের প্রকৃত মূল্য ৯৮ টাকার সঙ্গে শুল্ক ও কর ৩৭ টাকা মিলিয়ে নতুন মূল্য ১৩৫ টাকা করা হয়েছে।

মানববন্ধনে মুহম্মদ রাহাত নামে এক বক্তা বলেন, জ্বালানি তেলের এ অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে ব্যাপক হারে বেড়েছে পরিবহণ ভাড়া। আর যেহেতু পরিবহণের সঙ্গে দৈনন্দিন সকল মৌলিক খাত জড়িত, তাই জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ সকল জীবন ব্যয় কয়েকগুন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি দেশের ৯৯ শতাংশ জনগণের জন্য সামাল দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এভাবে মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে দেশের দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মৃত্যু ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।

মানববন্ধনে মুহম্মদ নুরুল শান্ত নামে এক বক্তা বলেন,জনগণের জন্যই রাষ্ট্র, জনগণের জন্যই সরকার।  সেই জনগণকে পেষণ করে রাষ্ট্র তার লাভজনক ব্যবসা অব্যাহত রাখতে পারে না।  আজকে যদি কোনো সাধারণ ব্যবসায়ী ১০০ টাকায় ৩৭ টাকা লাভ করতো, তাহলে সেটাকে অতি উচ্চ লাভ হিসেবে দেখা হতো। ম্যাজিস্ট্রেট ঐ ব্যবসায়ীর ব্যবসা সিলগালা করতো, পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতো। একজন সাধারণ ব্যবসায়ীর ১০০ টাকায় ৩৭ টাকা লভ্যাংশকে যদি অনৈতিক হিসেবে দেখা হয়, তাহলে রাষ্ট্র কিভাবে কোটি কোটি জনগণের কাছ থেকে ৩৭ শতাংশ লাভে ব্যবসা করে? এ ব্যবসা চলতে থাকলে দেশে দুর্ভিক্ষ সুনিশ্চিত। এর ফলে দেশের কোটি কোটি দরিদ্র ও মধ্যবিত্তের মৃত্যু অবধারিত।

মানববন্ধনে আশরাফুর সজীব বলেন, দেশের দরিদ্র ও মধ্যবিত্তকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষার একমাত্র উপায় হলো- জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে এ অতি লাভজনক ব্যবসা থেকে সরে আসা। জ্বালানি তেল থেকে ৩৭ শতাংশ খাজনা সদৃশ্য আয়কর ও শুল্ক বাদ দেওয়া। সরকার অনেক পণ্যের থেকে শুল্ক বা কর মওকুফ করে। তাহলে জ্বালানি তেলের মতো জনগণের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় থেকে জোর-জবরদস্তি করে ৩৭ শতাংশ শুল্ক ও কর কেন নিতে হবে?

মানবন্ধনে বক্তারা তাদের দাবিতে আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের গরীর ও মধ্যবিত্তদের বাঁচা-মরার দাবি হচ্ছে জ্বালানি তেল শতভাগ কর ও শুল্কমুক্ত করে প্রকৃত মূল্য হিসেবে ডিজেল ৮৩ টাকা, পেট্রোল ৯৪ টাকা এবং অকটেন ৯৪ টাকা নির্ধারণ করা।  

বাংলাদেশ সময়: ০০০২ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২২

এমএমআই/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।