ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নগরবাসীর চাহিদা যোগানে ব্যর্থ খুলনা ওয়াসা!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০২২
নগরবাসীর চাহিদা যোগানে ব্যর্থ খুলনা ওয়াসা!

খুলনা : পানির দাম বাড়িয়েছে খুলনা ওয়াসা। কিন্তু নগরবাসী বলছেন, সরকারি সংস্থাটি তাদের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ।

এ অবস্থায় বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তারা।

এ লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা। এতে নগরবাসীর চাহিদা যোগানে খুলনা ওয়াসা ব্যর্থ বলে উল্লেখ করা হয়।

সোমবার (৮ আগস্ট) দুপুরে খুলনা নাগরিক সমাজের উদ্যোগে এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। সংগঠনের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আ. ফ. ম মহসীন ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. বাবুল হাওলাদার স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেছেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, পদ্মাসেতু নির্মাণসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বহুমুখী উন্নয়নে আপনার (প্রধানমন্ত্রী) ঐকান্তিক ভূমিকা প্রশংসার দাবী রাখে। আপনার সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে খুলনা নাগরিক সমাজ সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছে।

খুলনা নগরবাসী ওয়াসা কর্তৃপক্ষর কাছ থেকে যে দুর্ভোগ মেনে আসছেন তা থেকে পরিত্রাণ পেতে একটি উন্নয়নমুখী সরকার প্রধান হিসেবে আপনার কাছে আমাদের এ আবেদন। আপনাকে অবগত করতে চাই, খুলনা ওয়াসা সম্প্রতি প্রতি ইউনিট আবাসিক পানির মূল্য ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ ও বাণিজ্যিক পানির মূল্য ২৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ বাড়িয়েছে। যা ১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

খুলনা ওয়াসা নগরবাসীর চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত সুপেয় বা বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে অনেকটাই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। গ্রাহকদের অর্থের বিনিময়ে কেনা সেবার মান নিশ্চিত না করে এহেন অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি অযৌক্তিক। খুলনা ওয়াসা মূল্য বৃদ্ধির আগে কোনো গণ-শুনানির ব্যবস্থাও করেনি। বর্তমান বাস্তবতায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে মানুষ অনেকটা সঙ্কটের মধ্যে আছে। করোনাভাইরাসের প্রভাবে দরিদ্রতা বেড়েছে।

খুলনার সরকারি পাটকলসহ বিভিন্ন শিল্প-কারখানা বন্ধ হওয়ার কারণে অসংখ্য মানুষ বেকার হয়েছে। নগরবাসীর একটা অংশ অর্থকষ্টে দিননিপাত করছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সঙ্কটের প্রভাবে ও দেশের অর্থনৈতিক সংকটজনক অবস্থায় ওয়াসার পানির মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নগরবাসীর জন্য মানবিক নয়।

আমরা ইতোপূর্বে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ওয়াসার এই অযৌক্তিক ও আইন বিরোধী পানির বর্ধিত মূল্য আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছি। অথচ, খুলনা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ আমাদের এই গণদাবী গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করেনি। তাই আপনার কাছে এই বিষয়ে সুদৃষ্টির জন্য আমাদের এই নিবেদন করতে বাধ্য হয়েছি।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, খুলনা একটি শিল্প ও বন্দর নগরী। এটি দেশের দেশের তৃতীয় বৃহত্তম শহরও বটে। শিল্প নগরী হিসেবে খ্যাত খুলনা নগরবাসীদের পর্যাপ্ত ও সুপেয় পানির চিন্তা করে ২০০৮ সালে খুলনা ওয়াসা প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক এই যে, ওয়াসা আজও খুলনা নগরবাসীর পানির চাহিদা পূরণ করতে পারেনি। কিন্তু অদ্যাবধি পানির মূল্য বৃদ্ধি করেছে ৫ বার।

করোনা ও খুলনার শিল্প কারখানার একটি বড় অংশ বন্ধ থাকার কারণে নগরীতে দরিদ্রতার হার বেড়েছে। অনেকেই বেকার জীবন-যাপন করছেন। অনেকেই অর্থসঙ্কটে ভুগছেন। এমতাবস্থায় ওয়াসা কর্তৃক পানির বর্ধিত মূল্য নগরবাসীর জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।

স্মারকলিপি প্রদানের সময় জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি খুলনা মহানগর সভাপতি শেখ মফিদুল ইসলাম, গণ সংহতি আন্দোলন খুলনা জেলা আহ্বায়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল, সোনালী ব্যাংকের সাবেক ডিজিএম এফএম মনিরুজ্জামান, ওয়ার্কার্স পার্টি নেতা দেলোয়ার উদ্দীন দিলু, অধ্যাপক সঞ্জয় সাহা, বীর মুক্তিযোদ্ধা নিতাই পাল, সরদার আবু তাহের, কবি সৈয়দ আব্দুল হাকিম, কাজী জাভেদ খালিদ পাশা জয় প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময় : ১৯২০ ঘণ্টা, ৮ আগস্ট, ২০২২
এমআরএম/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।