ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মানব পাচারকারী চক্রের ২ সদস্য গ্রেফতার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০২২
মানব পাচারকারী চক্রের ২ সদস্য গ্রেফতার

ঢাকা: রাজধানীর পল্টন থানা এলাকা থেকে সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্রের মূলহোতা আবুল হোসেনসহ চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। অভিযানে ৩ নারী ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়েছে।

এ সময় আসামিদের কাছ থেকে ৩১টি পাসপোর্ট, ডকুমেন্ট ২২ পাতা, ২টি মোবাইল, ৩টি সিমকার্ড জব্দ করা হয়। গ্রেফতার অপরজন হলেন, মোছা. আলেয়া বেগম (৫০)।

সোমবার (৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লেফট্যানেন্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল-মোমেন।

তিনি বলেন, রোববার বিকেলে নয়া পল্টনের সিটি হার্ট শপিং কমপ্লেক্সের ৬ষ্ঠ তলার কনকর্ড অ্যাপেক্স রিক্রুটিং এজেন্সির অফিসে অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্রের মূলহোতা আবুল হোসেন ও তার সহযোগী মোছা. আলেয়া বেগমকে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, আবুল হোসেনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে বৈধ প্রতিষ্ঠান কনকর্ড অ্যাপেক্স রিক্রুটিং এজেন্সির আড়ালে নারী পাচার ও নারী নির্যাতনের মতো অপকর্ম করে আসছিলেন। তিনি মূলত এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান। তার এ কাজের অন্যতম সহযোগী আলেয়া বেগমসহ অসংখ্য দালাল রয়েছে। দালালদের মাধ্যমে তিনি সমাজের বেকার, অল্পশিক্ষিত, অসচ্ছল ও দরিদ্র পরিবারগুলোর বিবাতিত/তালাকপ্রাপ্ত নারীদের মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে অধিক বেতনের চাকরি, বিমানে চড়ার অভিজ্ঞতা, রাজকীয় থাকা খাওয়া সুবিধা, স্মার্টফোন দেওয়া, হজার করার মতো প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাঠিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

বিদেশে যাওয়ার পর পাচার করা নারীদের জানালাবিহীন কক্ষে আটকে রাখা হতো। ২-৩ দিন পর ওই সমস্ত দেশের নাগরিকরা তাদের বাসায় নিয়ে যায়। বাসায় নিয়ে যাওয়ার পর তাদের দিয়ে সব ধরনের কাজ করানো, খাবারের উচ্ছিষ্ট খেতে দেওয়া বা অনাহারে রাখা এবং অকারণে বেধড়ক মারধরের মাধ্যমে অমানবিক নির্যাতন করা হতো।

গ্রেফতার আসামি আলেয়া বেগমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি এই মানব পাচারকারী চক্রের অন্যতম সহযোগী এবং দালাল হিসেবে কাজ করেন। তিনি এর আগে বিজয় নগরের আল ফালাহ এজেন্সির মাধ্যমে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩৮/৩৯ জন নারী এবং ২০২১ সাল থেকে আবুল হোসেনের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান কনকর্ড অ্যাপেক্স রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে মোট ১২ জন নারীকে বিদেশে পাঠান। আলেয়া মূলত গ্রামাঞ্চল থেকে বিভিন্নভাবে প্রলুব্ধ করে নারীদের এজেন্সির অফিসে নিয়ে আসতেন। তিনি বিদেশে যাওয়া ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে টিপসই নিয়ে সুবিধামতো চুক্তিপত্র টাইপ করে নিতেন।

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, তারা সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। আবুল হোসেন কনকর্ড অ্যাপেক্স রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক। তারা দীর্ঘদিন ধরে কনকর্ড অ্যাপেক্স রিক্রুটিং এজেন্সি পরিচালনা করে সাধারণ লোকজন বিশেষ করে নারীদের পাসপোর্টসহ বিভিন্ন ডকুমেন্ট নিয়ে প্রসেসিং করে সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঠিয়ে থাকেন। তারা বিদেশে পাঠানোর কথা বলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়ে বিভিন্ন সমস্যা দেখিয়ে তা আত্মসাৎ করেছেন বলে স্বীকার করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০২২
এসজেএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।