ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পঞ্চম শ্রেণী পাস করেই তিনি ডাক্তার!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০২২
পঞ্চম শ্রেণী পাস করেই তিনি ডাক্তার!

ঠাকুরগাঁও: নামের আগে দেওয়া আছে ডাক্তার। নিয়মিত দেখছেন রোগী।

প্রেসক্রিপশন লিখেও দিচ্ছেন ওষুধ। আবার সেই ওষুধ কিনতে হবে ওই ডাক্তারের দোকান থেকেই। যদিও তার শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত। এভাবেই প্রতিনিয়ত গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দেহন বাজারের নুরুজ্জামান বাবুল ওরফে ডা. বাবুল।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের দেহন বাজারে একটি ওষুধের দোকানের সঙ্গে ডাক্তারের চেম্বারের সাইনবোর্ড। তাতে লেখা, ডাক্তার নুরুজ্জামান বাবুল, ডিএমএফ ঢাকা, শিশু ও মেডিসিন চিকিৎসক।

প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ও বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রোগী দেখা হয় বলে চলছে মাইকিং! তবে ওই ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় বলে অভিযোগ করছে এলাকাবাসী।

বাবুলের কাছে চিকিৎসাসেবা নেওয়া ভুক্তভোগী আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, আমার জ্বর হয়েছিল। আমি তার কাছে চিকিৎসা নিতে গেলে তিনি আমাকে কিছু হাই এন্টিবায়োটিক ওষুধ দেন। তবে আমার পরিচিত এক বড় ভাই ওষুধগুলো দেখেই খেতে মানা করেছেন। পরে আমাকে অন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান। সেই ডাক্তারের দেওয়া প্যারাসিটামল খেয়ে আমি সুস্থ হই।

আরেক ভুক্তভোগী রাবেয়া খাতুন বলেন, আমি মাথা ব্যথার কথা জানিয়ে তার কাছে ওষুধের পরামর্শ চাই। তিনি অনেকগুলা ওষুধ লিখে দেন। তবে সুস্থতার বদলে আমি আরও অসুস্থ হই। পরে শহরের এক মেডিসিন ডাক্তারের শরণাপন্ন হই। সেই ডাক্তার আগের খাওয়া ওষুধগুলো ভুল ছিল বলেন জানান।

এলাকার ব্যবসায়ী আলতাফুর বলেন, বাবুল আমাদের সামনেই বড় হয়েছে। আমরা জানি ও প্রাইমারি স্কুলের গণ্ডি পার হয়নি। তাই আমরা তার কাছে চিকিৎসা নিই না। তবে অনেকে অজান্তে চিকিৎসা নিতে এসে প্রতারণার স্বীকার হচ্ছেন। চিকিৎসার মতো এ রকম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সাবধান থাকা উচিত। দ্রুতই ওই ভুয়া ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে বড় বিপদ হতে পারে।

এই বিষয়ে কথা হয় ভুয়া ডাক্তার বাবুলের সঙ্গে। ডাক্তারি পড়ালেখা বা কোনো ধরনের প্রশিক্ষণের কাগজ দেখতে চাইলে, নেই বলে অকপটে স্বীকার করেন বাবুল। সেসঙ্গে চেম্বারের পাশে থাকা ওষুধের দোকানের লাইসেন্সও নেই বলে স্বীকার করেন তিনি।  

যেখানে ব্যানার করছি সেখানে ভুল করে ডাক্তার লিখে ফেলছে আর মেডিসিন চিকিৎসক লিখছে। আর এই এলাকার আশেপাশে কোনো ডাক্তার নেই। তাই আমি যা চিকিৎসা দিচ্ছি তাতে মানুষের উপকারই হচ্ছে বলে জানান বাবুল।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু তাহের মোহাম্মদ সামসুজ্জামান বলেন, চিকিৎসার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে কোনো সমঝোতার সুযোগ নেই। বিষয়টি জানা ছিল না। দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২২ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০২২
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।