ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

৩ ঘণ্টার বৃষ্টিতে ময়মনসিংহ নগরীর ১২ এলাকায় জলাবদ্ধতা!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ২, ২০২২
৩ ঘণ্টার বৃষ্টিতে ময়মনসিংহ নগরীর ১২ এলাকায় জলাবদ্ধতা!

ময়মনসিংহ: মাত্র তিন ঘণ্টার বৃষ্টিতে ময়মনসিংহ নগরীর অন্তত ১২টি এলাকা পানিবন্দী হয়ে পড়েতে দেখা যায়। এতে সড়কে জমে থাকা পানি উপচে পড়ে বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে।

সোমবার (১ আগস্ট) বিকেলে ময়মনসিংহ নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

পানিবন্দী এলাকাগুলো হচ্ছে- নগরীর কলেজ রোড, ডিবি রোড, হামিদ উদ্দিন রোড, কৃষ্টপুর, ফুলবাড়ি বাইলেন, নন্দীবাড়ি, সাবেহ আলী রোড, নাটক ঘরলেন, সানকিপাড়া, গুলকীবাড়ি রোড, চরপাড়ার নয়াপাড়া, আউটার স্টেডিয়াম প্রমুখ।

তবে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে আশার বাণী। তারা বলেন, অনেক এলাকায় বর্তমানে ড্রেন ও সড়কের কাজ চলছে। আগামী বছরের মধ্যে এ সমস্যা আর থাকবে না।

পুরো আষাঢ় মাস জুড়ে ময়মনসিংহে বৃষ্টির তেমন একটা দেখা পাওয়া যায়নি। তবে শ্রাবণের ১৭তম দিনে সকাল ১০টা থেকে প্রায় দেড়টা পর্যন্ত থেমে থেমে চলে ভারী বর্ষণ। এতে নগরীর প্রায় সবগুলো সড়ক অথৈ পানিতে তলিয়ে যায়।

এ সময় নগরীর সানকিপাড়া, জিলা স্কুল মোড়, গুলকীবাড়ী, নতুন বাজার, কৃষ্টপুর, চরপাড়া, গাঙ্গিনাপাড়াসহ নগরীর প্রায় সবগুলো সড়কে পানি জমে যাওয়ায় যান চলাচলে ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি হয়। এতে স্কুল শেষে বাসায় ফেরার পথে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা পড়েন ভোগান্তির মুখে। এ সময় যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতেও দেখা গেছে যানবাহন গুলোতে।

খবরের সত্যতা স্বীকার করে নগরীর নতুন বাজার এলাকার ট্রাফিক সদস্য মো. কিশোর জানান, সকাল পৌণে ১০টার দিকে শুরু হয়ে দুপুর প্রায় দেড়টা পর্যন্ত থেমে থেমে চলে বৃষ্টি। এতে সড়কে পানি জমে যাওয়ায় কিছুটা যানজট সৃষ্টি হয়। তবে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে পানি সরে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

নগরীর আকুয়া এলাকার রিক্সা চালক মো. আবুল কাশেম জানান, সকাল সাড়ে ৯টায় আকুয়া সিকদার বাড়ি থেকে বাতির কলে যাত্রী নিয়ে এসেছিলাম। এরপর বৃষ্টি শুরু হয়। কয়েক ঘণ্টার এই বৃষ্টিতে সারা শহরের সড়কে পানি জমে যায়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বৃষ্টি হওয়ায় নগরীর পুরোহিত পাড়ার বাইলেন রোডে হাঁটু পানি জমে যায়। এমনকি সেই পানি মানুষের বাসা-বাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও মন্দিরে ঢুকে পড়ে। একই অবস্থা দেখা যায় নগরীর কৃষ্টপুর, ভাটিকাশর ও আউটার স্টেডিয়ামসহ অনেক এলাকায়।

নগরীর অটো চালক আলী হোসেন বলেন, নগরীর ড্রেনগুলো ময়লায় ভরে থাকে। তদারকি না থাকায় পানি না যেতে পেরে এ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক বাসিন্দা জানান, নগরীর শেওড়া, মাকরজানি এবং গোয়ালকান্দি খাল বেদখল করে ভরাট করে রেখেছেন প্রভাবশালীরা। পানি নিস্কাশনের জন্য এ খালগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

এর আগে গত ১৭ জুন মাত্র কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে নগরীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হয় স্থানীয়দের। এমন পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী মহল ও নাগরিক নেতাদের অভিযোগ, ড্রেন ও সকড় নির্মাণে পর্যাপ্ত বরাদ্ধ থাকলেও পরিকল্পিতভাবে সেগুলো করা হয় না। ড্রেন ও খাল খনন না করায় এবং সড়ক নির্মাণের সময় পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা সঠিক ভাবে না রাখায় এমন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী মো. ইউসুফ আলী বলেন, নগরীর অনেকগুলো এলাকায় ড্রেন ও সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে। সেগুলো শেষ হলে আর জলাবদ্ধতা থাকবে না। আশা করি আগামী বছরের মধ্যে এ সমস্যার স্থায়ী সামাধান হয়ে যাবে।

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামূল হক টিটু বলেন, বেশি বৃষ্টি হলে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়। তবে জলাবদ্ধতা নিরসনে উন্নয়ন কাজ চলছে। নগরীর শেওড়া, মাকরজানি এবং গোয়ালকান্দি খাল ভরাট ও বেদখল হয়ে যাওয়ায় এই জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ। তবে এ সমস্যা দূর করতে চার বছর মেয়াদী প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। খুব বেশি দিন নগরবাসীকে জলাবদ্ধতার ভোগান্তি পোহাতে হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০২২
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।