ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

খুলনায় ফের চালু নগর পরিবহন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০২২
খুলনায় ফের চালু নগর পরিবহন

খুলনা: দীর্ঘ অপেক্ষার পর চাকা ঘুরল খুলনায় নগর পরিবহনের (টাউন সার্ভিস)। প্রায় আড়াই বছর বন্ধ থাকার পর সোমবার (১ আগস্ট) সকাল ৮টায় ফিতা কেটে ফুলতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে রূপসা ঘাট পর্যন্ত খুলনায় নগর পরিবহন চালু করা হয়েছে।

খুলনা মোটর বাস মালিক সমিতির উদ্যোগে নগর পরিবহন চালু হওয়ায় রূপসা-ফুলতলা রুটের যাত্রীদের মধ্যে স্বস্তি বিরাজ করছে। বাস চালু হওয়ায় আয়ের পথ খুলে গেল চালকসহ পরিবহন শ্রমিকদের।

জানা গেছে, বর্তমানে খুলনার ফুলতলা থেকে রূপসা ঘাট পর্যন্ত মাহেন্দ্র ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া জনপ্রতি ৬০-৭০ টাকা, যা নগর পরিবহণে ছিল ২০ থেকে ২৫ টাকা। এসব ভোগান্তি ও ভাড়া বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত যাত্রীরা। দীর্ঘ আড়াই বছর বন্ধ থাকার পর নগর পরিবহন চালু হওয়ায় খুশি যাত্রীরা।

এ রুটের যাত্রীরা বলছেন, স্বল্প সময় আর স্বল্প খরচেই আমরা যাতায়াত করতে পারব।  

খুলনা মোটর বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোল্লা মুজিবর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, নগর পরিবহন চালুর জন্য নিরাপদ সড়ক চাই সম্প্রতি সময়ে জোর দাবি জানিয়ে আসছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ আড়াই বছর পর নগর পরিবহন চালু করেছি। সকাল ৮টায় ফুলতলা থেকে রূপসার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে। ৩০ মিনিট পর পর বাস চলবে। প্রাথমিকভাবে ৫-৬টি বাস দিয়ে নগর পরিবহন চালু করা হয়েছে। প্রতিটি বাসের সিট সংখ্যা ৪০ থেকে ৪৮। প্রয়োজন হলে আরও বাস নামানো হবে।

তিনি বলেন, রূপসা থেকে ফুলতলা পর্যন্ত সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে ৩০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। এই রুটে নগর পরিবহন চলাচলের জন্য ফুলতলা থেকে দৌলতপুর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য ১০ টাকা এবং সাধারণ যাত্রীদের জন্য ১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

নগর পরিবহনের চালক রুবেল বাংলানিউজকে বলেন, প্রথম দিন তাই যাত্রী একটু কম। দুই এক দিন গেলে কাঙ্ক্ষিত যাত্রী পাওয়া যাবে। এ জন্য প্রচার প্রচারণা ও বাস বাড়াতে হবে।

জানা যায়, দেশ স্বাধীনের পর ৬০টি বাস নিয়ে খুলনা শহরে ‘নগর পরিবহন বা টাইন সার্ভিস’ সেবা চালু হয়। ২০১৭ সালে ৫৫টি বাসই চলাচলের যোগ্যতা হারায়। এর পরের বছরই শহরে গণপরিবহন সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২০১৮ সালে শহরের নগর পরিবহন সেবা বন্ধ হওয়ায় ক্ষোভ সৃষ্টি হয় সাধারণ মানুষের মধ্যে। একই বছরে অনুষ্ঠিত হয় খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক নির্বাচনী ইশতেহারে ‘নগর পরিবহন’ পুনরায় চালুর প্রতিশ্রুতি দেন। ২০১৯ সালে খুলনা মোটরবাস মালিক সমিতির উদ্যোগে ৪টি গণপরিবহন চালু হয়। কিন্তু ইজিবাইক, মাহেন্দ্রা ও সিএনজির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা প্রভাবশালীদের কাছে হার মেনে করোনার আগেই সেগুলো ফের বন্ধ হয়ে যায়।

দীর্ঘদিন নগর-পরিবহন বন্ধ থাকায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ, শিক্ষার্থী ও শ্রমজীবীরা। ইজিবাইক, মাহেন্দ্র ও সিএনজি অটোরিকশায় যথেচ্ছা ভাড়া আদায়, বেপরোয়া চলাচলে দুর্ঘটনা, চালকদের অসদাচরণ, যানজটসহ নানা রকমের অত্যাচার সহ্য করে আসছিল নগরবাসী।

নগরবাসীর ভোগান্তি কথা তুলে ধরে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) খুলনা মহানগর কমিটি বেশ কিছুদিন ধরে নগর পরিবহন চালুর দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। এ দাবিতে তারা খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল, খুলনা জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার ও বিআরটিএ কর্মকর্তাদের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে।

নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি এসএম ইকবাল হোসেন বিপ্লব বাংলানিউজকে বলেন, বহুল প্রতীক্ষিত খুলনায় নগর পরিবহন চালু হয়েছে। এতে স্বল্প আয়ের মানুষ, শিক্ষার্থী ও শ্রমজীবীরা অল্প খরচে যাতায়াত করতে পারবে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে নগর পরিবহন চালুর দাবি জানিয়ে আসছিলাম। আমাদের সে দাবিকে বাস্তবায়ন করা খুলনা মোটর বাস মালিক সমিতিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ০১ , ২০২২
এমআরএম/এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।