ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

জামালপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের নামে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপনডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০২২
জামালপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের নামে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

জামালপুর: জামালপুর সদরের শরিফপুর ইউপির চেয়ারম্যান আলম আলীর বিরুদ্ধে অর্ধ শতাধিক সরকারি প্রকল্পের বিপুল অংকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে ঘুরে প্রকল্পের নামে সরকারি অর্থ আত্মসাতের সত্যতা পাওয়া গেলেও অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

আর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অভিযোগের প্রমাণ মিললে নেওয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা।

জামালপুর সদরের সবচেয়ে বড় ও বেশি জনসংখ্যার ইউনিয়ন শরিফপুর। পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ ঘেঁষা এই ইউনিয়নে ২০১৯-২০২০, ২০২০-২০২১, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠানো উন্নয়ন, সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন মসজিদ, কবরস্থান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সড়ক উন্নয়নে অর্ধশতাধিক প্রকল্পর বিপরীতে নগদ টাকা চাল/গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। এসব প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থ কাজ না করে পুরোটাই আত্মসাত করেছে চেয়ারম্যান আলম আলী।

২০২১-২২ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কাবিখা প্রকল্পের আওতায় সদর উপজেলার গোদাশিমলা বাজার থেকে ঢেংগারগড় তেঁতুলতলা বাজার পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রায় ৯ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয় সরকার। সরেজমিনে গেলে ঢেংগারগড় গ্রামের মোহাম্মদ আলী এ প্রতিবেদককে জানান, এই সড়কের গত এক যুগে এক কোদাল মাটিও ফেলা হয়নি। সরকার যদি এই রাস্তার জন্য কোনো বরাদ্দ দিয়ে থাকে তাহলে পুরোটাই আত্মসাত করা হয়েছে। এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না।

২০১৯-২০ অর্থ বছরের আওতায় ঢেংগারগড় কপালীপাড়া মসজিদ থেকে নয়াপাড়া তোতার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণে ৮ মেট্রিক টন, নয়াপাড়া হতে দেওয়ালের ঘাট পর্যন্ত রাস্তায় মাটি ভরাট ১৫ মেট্রিক টন, ঢেংগারগড় হুছির বাড়ি থেকে সুরুজ বাজার হয়ে সিঙ্গাবিল পর্যন্ত রাস্তা পুনঃসংস্কারের জন্য ২৪ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিলেও তিন প্রকল্পের কোথাও এক টুকরা মাটি পড়েনি।

দেয়ালের ঘাট এলাকার রহিমা বেগম জানান, কাগজে লেখা ওই বরাদ্দের কোনো কাজ রাস্তায় হয়নি।

জয়রামপুর-রঘুনাথপুর শশাখালী খালের উপরের ব্রিজের দুই পাশের এপ্রোচ সড়কের জন্য ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হলেও কাজ না করেই পুরো টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানালেন, ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ব্রিজ কোনো কাজেই আসছে না এপ্রোচ না থাকার কারণে।

এডিবির অর্থায়নে শরিফপুর বাজার থেকে মাদ্রাসা হয়ে রেললাইন পর্যন্ত রাস্তা সিসিকরণ প্রকল্পে ৫ লাখ টাকায় অর্ধেক কাজ হলেও জয়রামপুর বন্দেরবাড়ি রাস্তায় ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিলেও কোনো কাজ হয়নি বলে স্থানীয়রা জানান।

গ্রামীণ রাস্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা, ঈদগাহ মাঠ, কবরস্থান উন্নয়নে সরকার প্রতিবছর বরাদ্দ দিলেও তা লোপাট হওয়ায় দুর্ভোগ বাড়ছে গ্রামের মানুষের।

সরকারি প্রকল্পের নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শরিফপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলম আলী।

জামালপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটুস লরেন্স চিরান সাংবাদিকদের জানান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে প্রধান করে তিন সদস্যেও কমিটি গঠন করা হয়েছে। অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০২২
নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।