ঢাকা, সোমবার, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৩ জুন ২০২৪, ২৫ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

গাড়ির অপেক্ষায় শত শত যাত্রী, টিকিটের দামে নৈরাজ্য

স্বপন চন্দ্র দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০২২
গাড়ির অপেক্ষায় শত শত যাত্রী, টিকিটের দামে নৈরাজ্য

সিরাজগঞ্জ: ঈদের সপ্তম দিনেও সিরাজগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে বাসষ্ট্যান্ড ও কাউন্টারগুলোতে। যারা টিকিট নামের সোনার হরিণ পেয়েছেন তারা নির্দিষ্ট বাসের অপেক্ষায় বসে আছেন।

অনেকেই আবার টিকিট না পেয়ে বাসষ্ট্যান্ডে অবস্থান করছেন, কোনমতে যদি একটি গাড়ি পান,  সেই আশায়।

এদিকে ঈদের পর থেকেই টিকিট বিক্রিতে নৈরাজ্য চলছে। দেড় থেকে দুইগুণ বেশি দাম দিয়ে টিকিট নিতে হচ্ছে যাত্রীদের। তবে এসব যাত্রীর টিকিটে টাকার অংক লেখা হচ্ছে না কাউন্টার থেকে।

শনিবার (১৬ জুলাই) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে সিরাজগঞ্জ শহরের বাজার স্টেশন এলাকায় এসআই পরিবহন, অভি এন্টারপ্রাইজ ও সেবা লাইন পরিবহনের কাউন্টারে এমন চিত্র দেখা যায়।

দেড় ঘণ্টা যাবত বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র আতিক। তিনি দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের এসআই বাসের টিকিট কেটেছেন ৪৫০ টাকা দিয়ে। বিকেল সাড়ে ৩টার সময়ও তারা গাড়ি আসেনি। এমন অবস্থা বেসরকারি চাকরিজীবী তুহিনেরও।

একটি বেসরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ইসমাইল হোসেন বলেন, আমি ৫শ টাকা দিয়ে টিকিট নিয়েছি। আড়াইটায় গাড়ি কাউন্টারে থাকার কথা ছিল। কিন্তু এখন বিকেল চারটা পার হলেও গাড়ির কোনো খবর নেই।

আমেরিকান একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন মাসুদ রানা। তিনি বলেন, সাড়ে ৫শ টাকায় টিকিট কেটেছি। কিন্তু গাড়ি খবর নেই। একই অবস্থার কথা জানান, ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলামও।

সব যাত্রীই জানান, ঈদের আগেই তারা অতিরিক্ত দামে টিকিট কেটেছেন। এছাড়া কোনো উপায়ও নেই। ঢাকাগামী সব বাস কাউন্টারেই টিকিটের মূল্য একই।

তারা আরও বলেন, নির্ধারিত সময়ে কোনো গাড়িই আসছে না। কাউন্টার থেকে বলা হচ্ছে টাঙ্গাইলের দিকে যানজটের কারণে গাড়িগুলো আটকে আছে।

এ বিষয়ে এসআই পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার আলম হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব পাশে যানজটের কারণে আমাদের ১০/১২টি গাড়ি আটকে আছে। এ কারণে যাত্রীরা নির্দিষ্ট সময়ে গাড়ি পাচ্ছেন না।

বেশি ভাড়া নেওয়ার ব্যাপারে সেবা লাইন পরিবহনের মালিক রনি সাহা বলেন, মালিক সমিতিই এই ভাড়া নির্ধারণ করেছে। আমরা সেই মোতাবেকই ভাড়া নিচ্ছি।  

এ বিষয়ে জানতে জেলা বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি লিটন সরকার ও সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তারা রিসিভ করেননি।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট লুৎফুন নাহার বাংলানিউজকে বলেন, বাসগুলোতে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার থেকে বেশি নিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা শিগগিরই বিষয়টি দেখছি।  

এদিকে পোশাককর্মীসহ শত শত শ্রমজীবী মানুষ ঢাকায় কর্মস্থলে ফেরার জন্য বাসষ্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছেন। তবে তাদের কাছে গাড়ির টিকিট নেই। তাই বাসের ভেতরে কোনমতে দাঁড়িয়ে হোক; কিংবা ট্রাক, পিকআপসহ কোনো যানবাহন পাওয়া যায় কিনা সেই অপেক্ষায় রয়েছেন তারা।

সাবিনা খাতুন নামে এক পোশাককর্মী বস্তাপুটলি নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন যে কোন যানবাহনের। কিন্তু দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত তার ভাগ্যে কোনো গাড়ি মেলেনি। আজকের (১৬ জুলাই) মধ্যে না যেতে পারলে চাকরি নিয়ে সমস্যা হবে বলে জানান তিনি। একই অবস্থার কথা জানালেন রনি, শামসুন্নাহার, সায়েদুল ইসলাম, রোজিনা খাতুনসহ বেশ কয়েকজন পোশাককর্মী।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।