ঢাকা, শুক্রবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে, স্বীকৃতি পেতে প্রথম স্ত্রীর অনশন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৩ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০২২
স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে, স্বীকৃতি পেতে প্রথম স্ত্রীর অনশন

বরিশাল : বিয়ের পর ২৩ বছরের সংসার স্বামী-স্ত্রীর। এর মধ্যে স্বামী দেশের বাইরে গেছেন।

ফিরে এসে দ্বিতীয় বিয়েও করেছেন, অস্বীকার করছেন প্রথম জনকে। তাই স্বামী ও নিজের স্ত্রী স্বত্ত্বার স্বীকৃতি পেতে অনশন শুরু করেছেন এক নারী।

ঘটনাটি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের একটি গ্রামের। ভুক্তভোগীর নাম আশা (আসল নাম প্রকাশ করা হলো না)। মঙ্গলবার (১২ জুলাই) সকাল থেকে স্বামীর বাড়ির আঙিনায় অনশন করছেন তিনি।

আশার বাবার বাড়ি একই ইউনিয়নের অন্য একটি গ্রামে। তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পূর্ব পরিচয়ের ভিত্তিতে ১৯৯৯ সালের ২০ জানুয়ারি স্থানীয় কবির তালুকদারের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সেটিও আদালতের মাধ্যমে। বিয়ের কিছুদিন পর দুবাই চলে যান তার স্বামী। এর দুই বছর পর আশাও দুবাই চলে যান। তার পাসপোর্টেও কবিরের নাম (স্বামীর) রয়েছে।

দেশে ফিরে বড় আয়োজন করে দুজন বিয়ের অনুষ্ঠান করবেন, কবিরের এমন প্রতিশ্রুতিতে দুবাইয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন আশা। প্রায় ২০ বছর একই বাসায় তারা থাকতেন। এ সময় আশার আয়কৃত সব অর্থ কবির নিজ অ্যাকাউন্টে রাখতেন।

আশার অভিযোগ, বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে কবির তার প্রায় ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। ৪ মাস আগে বিদেশে বসেই দ্বিতীয় বিয়ে করেন তিনি। এক সপ্তাহ আগে গোপনে দেশেও ফেরেন। এ তথ্য পেয়ে আশাও কদিন আগে দেশে ফেরেন। পরে আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে কবিরের বাড়িতে যান স্ত্রীর স্বীকৃতি আদায়ে। কিন্তু কবির তাকে আশ্রয় তো দেননি, বরং স্ত্রী হিসেবেও অস্বীকৃতি জানান।

বিষয়টি পরে মীমাংসা করবেন প্রতিশ্রুতি দিয়ে আশাকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদারসহ এলাকার লোকজন। কিন্তু দুদিন পার হয়ে যাওয়ার পরও কোনো সমাধানে না আসায় ফের কবিরের বাড়ি গিয়ে ওঠেন আশা। এ সময় নিজের পরিবারের লোকজনকে ঘরের ভেতর রেখে বাইরে থেকে তালা দিয়ে অন্যত্র পালিয়ে যান কবির।

স্বামী চলে যাওয়ার পর তার বাড়িতেই অনশন শুরু করেন আশা। পরে তিনি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করেন। পুলিশ সদস্যরা বিষয়টি জানার পর কবিরের বাড়ি এসে আশার সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় স্ত্রীর স্বীকৃতি না পেলে পরবর্তীতে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান আশা।

এ ব্যাপারে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, কবিরের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিষয়টি আমি শুনেছি। আমিসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আশাকে যাবতীয় প্রমাণাদি নিয়ে আসতে বলেছি। সঠিক তদন্ত পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আগৈলঝাড়া থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মিল্টন মণ্ডল বলেন, বিষয়টি জানার পর আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। থানায় লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময় : ২১১০ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০২২
এমএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।