ঢাকা, বুধবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ মে ২০২৪, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গরিবের মাংসের হাটেও চাঁদাবাজি!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১১ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২২
গরিবের মাংসের হাটেও চাঁদাবাজি!

ফেনী : কোরবানি দিতে পারেন না, এমন জনগোষ্ঠীর মাংস সংগ্রহের একমাত্র উপায় কারও দান। আবার মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়েও তারা মাংস সংগ্রহ করেন।

প্রান্তিক জনগোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত এসব মানুষের একাংশ কোরবানির সময় গরু-মহিষের মাংস সংগ্রহ করে বিক্রিও করে থাকেন। সে মাংস আবার কেনেন তাদের মতোই কিছু মানুষ, যারা অন্তত ঈদের দিনটিতে মাংস খেতে চান। বিভিন্ন জেলা-উপজেলার পাড়া-মহল্লায় বা বাজারের পাশে বসে তাদের মাংস বিক্রির হাট। এমন হাটেও চাঁদাবাজি হয়!

রোববার (১০ জুলাই) ঈদের দিনও গরিবের মাংসের হাটে এমন চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে ফেনীর রেলস্টেশন এলাকা থেকে।

জানা গেছে, সকাল থেকে বিভিন্ন বাসা-বাড়ি থেকে সংগ্রহ করে আনা মাংস বিক্রির উদ্দেশে এ হাটে বসেন কয়েকজন প্রান্তিক বিক্রেতা। মাংস বিক্রির এক পর্যায়ে কয়েকজন চাঁদাবাজ এসে তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে যান। এতে বিপাকে পড়েন বিক্রেতারা।

স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকবছর ধরে গরিব মানুষেরা এলাকাটিতে সংগ্রহ করা কোরবানির মাংস বিক্রি করতে বসেন। রোববারও সকাল থেকে অনেকেই এখানে বসে মাংস বিক্রি করছিলেন। ছিন্নমূল ও দরিদ্র লোকজন ফেনীর বিভিন্ন স্থান থেকে এসে এ হাট থেকে মাংস কেনেন। বাদ যান না হোটেল ব্যবসায়ীরাও। কিন্তু চাঁদাবাজদের কাছ থেকে রেহাই পাননি তারাও।

তাদের ভাষ্য, এসব গরিব-দুঃখী মানুষ মাংস সংগ্রহই বা কতটুকু করতে পারেন। মানুষের বাড়ি থেকে চেয়ে আনা মাংস বিক্রি করতে হয়তো দুই-তিনদিন একটু ভালো খাবার খাবেন। কিন্তু চাঁদাবাজদের কারণে সেটিও সম্ভব হয় না তাদের।

হাটে আসা গরিব মাংস বিক্রেতারা অভিযোগ করে জানান, সকাল থেকে তারা অনেক কষ্ট করে মাংস খুঁজে এনে যখন বিক্রি করতে বসেন, ‘গণ্ডির’ নামে কিছু লোক তাদের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে যায়। সৃষ্টিকর্তার কাছে তাদের শুভ বোধের দোয়া করেন এসব প্রান্তিক বিক্রেতা।

কবির আহমদ নামে এক বিক্রেতা জানান, তিনি সারাদিন শহর ঘুরে ২০ কেজির মতো মাংস সংগ্রহ করেছেন। অর্ধেক খাওয়ার জন্য রেখে বাকিটা বিক্রির জন্য আনেন রেলওয়ে বাজারে। সেখানে চাঁদাবাজির শিকার হন তিনি। বিক্রিত মাংসের টাকার ওপর তাকে গণ্ডি দিতে হয়েছে।

কারা গণ্ডির টাকা তুলছেন এমন তথ্য না দিতে পারলেও এ বিক্রেতার ইঙ্গিত ছিল পৌর হকার্স মার্কেট বাজার কমিটির দিকে। কিন্তু এ অভিযোগ উড়িয়ে দেন কমিটির সদস্য আবু তালেব রনি।

রনি বলেন, রেলওয়ের পাশের অস্থায়ী বাজারটি পৌর হকার্স মার্কেটের পাশেই। এখানে বাজার কমিটির কেউ চাঁদা তুলছে না। কিছু মাদকসেবী এই কাজটি করছে। আমরা জানতে পেরে সেই সব চাঁদাবাজকে ধাওয়া করেছি।

চাঁদাবাজির এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় কোনো অভিযোগ হয়নি। বিক্রেতারা বলছেন, ভয়ে তারা এমন পদক্ষেপ নেননি। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে ফেনী জিআরপি পুলিশের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো. নোফিল বলেন, এমন কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। বিষয়টি সম্পর্কে আমরা জানিও না। তবে, অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 
বাংলাদেশ সময় : ১৮১২ ঘণ্টা, ১০ জুলাই, ২০২২
এসএইচডি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।