কক্সবাজার: কক্সবাজার সদর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল উদ্দিনকে (২৫) পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ জন মিলে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মামলার এক নম্বর আসামি আজিজুল হক সিকদার এ তথ্য দিয়েছেন বলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান উপ-অধিনায়ক মেজর মঞ্জুর মেহেদী। বুধবার (০৬ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
মেজর মঞ্জুর মেহেদী জানান, হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই আসামিদের গ্রেফতারে র্যাব অভিযান শুরু করে। ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ১ নম্বর আসামি আজিজুল হক সিকদার (৩৪) ও ২ নম্বর আসামি ফিরোজ আলমকে (৩৩) তাদের স্বজনদের ঘর থেকে গ্রেফতার করা হয়।
উপ-অধিনায়ক মঞ্জুর মেহেদী আরও বলেন, আজিজ ও ফিরোজ প্রাথমিকভাবে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অন্যদের বিষয়েও তথ্য দিয়েছে সে। আটককৃদের কক্সবাজার সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এর আগে মঙ্গলবার রাত সোয়া ১১ টার দিকে ১৭ জনের নামে সদর মডেল থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় আরও ৭-৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে নিহত ফয়সালের বড় ভাই নাছিরউদ্দীন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
এ ঘটনায় আজিজুল হক সিকদারসহ আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কক্সবাজার সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সেলিমউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
গত রোববার (৩ জুলাই) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের ডেইলপাড়া এলাকায় পুলিশের সামনেই কুপিয়ে হত্যা করা হয় ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল উদ্দীনকে। তিনি খুরুশকুল ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলনে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় প্রাণ হারান। ঘটনার আগে সম্মেলনস্থলে ফয়সাল নিজের প্রাণ বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা আওয়ামী লীগ নেতাদের অবহিত করেন।
আওয়ামী লীগের নেতারা পুলিশকে জানানোর পর সেখানে সদর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক আবু রায়হান তিন সদস্যের টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। তবে পুলিশের কাছে ফয়সাল উদ্দীন তাঁর নিরাপত্তাহীনতার ব্যাপারে জানানোর পরও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগের নেতারা এ ঘটনায় পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ করে আসছেন।
অবশ্য জেলা পুলিশ এ ঘটনায় পুলিশের দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামকে প্রধান করে সোমবার (০৪ জুলাই) এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি তিনদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।
নিহত ফয়সাল উদ্দিন কক্সবাজার সদর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও খুরুশকুল ইউনিয়নের কাউয়ারপাড়া এলাকার মৃত লাল মোহাম্মদের ছেলে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০২২
এসবি/এসএ
