ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মেহেরপুর প. প. ডিডি শাহিন হাসানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৪ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০২২
মেহেরপুর প. প. ডিডি শাহিন হাসানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

মেহেরপুর: মেহেরপুর পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শাহিন হাসানের বিরুদ্ধে অনিয়ম, স্বেচ্ছচারিতা, কর্মচারীদের বদলির হুমকি, নারী কেলেংকারীসহ ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।  

তিনি বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনে (এসিআর) স্বাক্ষর করাতে কর্মচারীদের হয়রানি ও অবৈধভাবে অর্থ আদায় করেন বলেও অভিযোগ আনা হয়।

এসব কারণে তার বদলি দাবি করেছেন অধিনস্ত কর্মচারীরা।

সোমবার (৪ জুলাই) পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে মেহেরপুরে কর্মরত ৪২ জন কর্মচারীর স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র পাঠানো হয়েছে।

লিখিত অভিযোগপত্রে তারা বলেন, উপ-পরিচালক শাহিন হাসান সরকারি বেতনের সঙ্গে বরাদ্দ বাসা ভাড়া উত্তোলন করলেও অফিসের একটি ছোট কক্ষে বসবাস করেন। অফিসের কর্মচারীদের বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করতে তিনি প্রতি জনের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা ঘুষ নেন। আর টাকা না দিলে করা হয় নানা ধরনের হয়রানি। এছাড়া বদলিসহ কর্মচারীদের নানা ধরনের হুমকি দেন তিনি।

তারা আরও বলেন, কিছুদিন আগে গাংনী উপজেলার সাহারবাটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ক্লিনিকের উদ্বোধন উপলক্ষে অনুষ্ঠানের জন্য তিনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক শাহিনুজ্জামানের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা নিয়ে পুরোটাই পকেটস্থ করেন। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানে খরচ হয় মাত্র ১০ হাজার টাকা। সেই টাকা তিনি চাপ প্রয়োগ করে আদায় করেন দুই গরিব কর্মচারীর কাছ থেকে। এ নিয়ে কর্মচারীদের মধ্যে শুরু হয় চাপা ক্ষোভ।

অভিযোগে আরও জানানো হয়, শাহিন হাসান অফিসেরই একটি কক্ষে বসবাস করেন। আর প্রতিদিনই কোনো না কোনো নারী কর্মচারীর বাসায় দাওয়াত চেয়ে নেন। দাওয়াত না দিলে ওই নারী কর্মচারীকে হুমকিসহ নানাভাবে হয়রানি করেন তিনি।

সরেজমিনে মঙ্গলবার (৫ জুলাই) দুপুরে উপ-পরিচালকের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, মুজিবনগর অফিসের কর্মচারী নারগিছ খাতুনকে নিজের কার্যালয়ে সংযুক্তি করেছেন। এখানে তার কাপড় চোপড় ধোঁয়া, রুম পরিষ্কার করাসহ রান্নার কাজ করিয়ে নেন তিনি।

গিয়ে দেখা যায় নারগিছ খাতুন সেখানে রান্না করছেন। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্যারের হুকুমে এগুলো করতে হয়।

জানা গেছে, গত রোববার সদর উপজেলা অফিসের কর্মচারী মাহমুদা আক্তার বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করাতে আসেন। কিন্তু স্বাক্ষর না মেলায় কম্পিউটার অপারেটর সারজিনা খাতুনের মাধ্যমে এক হাজার টাকা ঘুষ পাঠিয়ে স্বাক্ষর নিতে হয়। এ নিয়ে সোমবার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাঠানো হলে ঘুষের টাকা ফেরত দেন তিনি।

এসব অভিযোগের বিষয়ে উপ-পরিচালক শাহিন হাসান বাংলানিউজকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে সব সত্য নয়। মাঝে মধ্যে অফিসের লোকজনের জন্যই অফিসে রান্না করাতে হয়। তাই নারগিছ খাতুনকে জেলা অফিসে সংযুক্ত রাখা হয়েছে। এছাড়া আমি অফিসের কক্ষ বাসা হিসেবে ব্যবহার করিনি। মাসিক দুই হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে সেখানে থাকি। এছাড়া নারী কর্মচারীদের বাসায় দাওয়াত নেওয়া, হয়রানি করা, বদলির হুমকি দেওয়ার বিষয়গুলো অস্বীকার করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, এখন থেকে এ অফিসে আর কোনো দুর্নীতি হবে না। স্টাফদের নিয়ে সোমবার একটি মিটিং করা হয়েছে। সেখানে জেলার সব কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে অফিস ভাড়া চুক্তিপত্রে দেখা গেছে সেটি গত ১ জুলাই ২০২১ সালে ভাড়া নেওয়া হয়েছে। তবে সেখানে আলাদা কোনো কক্ষ ভাড়ায় দেওয়া হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০২২
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।