ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বেনাপোল কাস্টমসের সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়

উপজেলা করেসপন্ডেট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৬ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০২২
বেনাপোল কাস্টমসের সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়

বেনাপোল (যশোর): বেনাপোল কাস্টমস হাউজে ২০২১-২২ অর্থ বছরে ছয় হাজার ২৪৫ কোটি টাকার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে চার হাজার ৫৯৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। যা ঘাটতি আছে এক হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা।

এদিকে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা পাঁচ হাজার ১৫৮ কোটি টাকার বিপরীতে এই রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ ৫৫৮ কোটি আট লাখ টাকা। এছাড়া বেশ কয়েক বছর ধরে এনবিআরের দেওয়া রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে বেনাপোল কাস্টমস হাউস।

জানা যায়, ২০২১-২২  অর্থবছরে আমদানি পণ্য থেকে এনবিআর রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে ছয় হাজার ২৪৫ কোটি টাকা। এ হিসাবে রাজস্ব ঘাটতি হচ্ছিল দেড় হাজার কোটির বেশি। তবে বছরের শেষের দিকে রাজস্ব পূরণে শঙ্কা দেখা দেওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় পাঁচ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা। কিন্তু ৩০ জুন বছর শেষে চার হাজার ৫৯৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকা আদায়ে ঘাটতি থেকে যায় ৫৫৮ কোটি আট লাখ টাকা।  

এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে কাস্টমসে রাজস্ব ঘাটতি হয়েছিল দুই হাজার ৫৭ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ঘাটতি হয়েছিল তিন হাজার ৩৯২ কোটি ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ঘাটতি হয়েছিল এক হাজার ১৪৫ কোটি।

বেনাপোল সিএন্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, পদ্মা সেতু চালু হয়েছে এতে বাণিজ্যেও নতুন দিগন্ত উন্মোচন হবে দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গে পণ্য পরিবহনে। তবে সুষ্ঠুভাবে বাণিজ্য পরিচালনার জন্য বন্দরের অবকাঠামো বাড়ানো খুব জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন  থেকে ৭০০ ট্রাক পণ্য আমদানির চাহিদা থাকলেও বন্দরে জায়গার অভাবে ৪০০ ট্রাকের বেশি পণ্য আমদানি সম্ভব হচ্ছেনা। আবার ফর্কক্লিপ, কেনের অভাবে পণ্য খালাসের অপেক্ষায় মাসের পর মাস ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকছে। এতে লোকসানে পড়ে অনেক ব্যবসায়ীরা এপথে পণ্য আমদানি বন্ধ করেছেন। যার বিরূপ প্রভাব পড়েছে রাজস্ব আয়ের ওপর।

বাংলাদেশ সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামছুর রহমান জানান, বেনাপোল বন্দর থেকে ভারতের দ্বিতীয় বাণিজ্যিক শহর হিসাবে পরিচিত  কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮৫ কিলোমিটার। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়াতে এ বন্দর দিয়ে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যে আগ্রহ বেশি।

তিনি আরও জানান, এ বন্দরে আমদানি পণ্যের মধ্যে বড় একটি অংশ কেমিক্যাল ও খাদ্য দ্রব জাতীয় পণ্য। এখান থেকে বড় অংকের রাজস্ব আসে সরকারের। তবে সুষ্ঠু ও নিরাপদ বাণিজ্য পরিচালনায় বন্দর ও কাস্টমসে আজও গড়ে উঠেনি প্রয়োজনীয় অবকাঠামো। এতে গত ১০ বছর ধরে রাজস্ব আয়ে বিরূপ প্রভাব পড়ছে।

বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, বন্দরে নতুন জায়গা অধিগ্রহণ, ও বন্দরের নিরাপত্তা প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়েছে। শেষ হয়েছে সিসি ক্যামেরা বসানো ও অটোমেশন পদ্ধতি। তবে সব স্থাপনা নির্মাণ শেষ হতে এখনো দুই বছর সময় লাগবে।

বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার আজিজুর রহমান জানান, কেমিক্যাল ও খাদ্য দ্রব থেকে বড় রাজস্ব আসে। তবে বেনাপোল কাস্টমসে বিএসটিআই ও বিএসআইআরের অফিস না থাকায় এ ধরনের পণ্য আমদানিতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এতে রাজস্ব আয় কমে আসছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০২২
কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।