ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কর্মসংস্থান-বাসস্থানের দাবি জন্মান্ধ অঞ্জনার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৯ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২২
কর্মসংস্থান-বাসস্থানের দাবি জন্মান্ধ অঞ্জনার

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় কর্মসংস্থান ও বাসস্থানের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জন্মান্ধ উচ্চ শিক্ষিত সংগীতশিল্পী অঞ্জনা রানি হালদার।

মঙ্গলবার (২৮ জুন) কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের আব্দুর রাজ্জাক মিলনায়তনে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে অন্ধ শ্রুতিলিপির মাধ্যমে নিজের অসহায় জীবনালেখ্যের করুন চিত্র তুলে ধরে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জন্মান্ধ অঞ্জনা।

লিখিত বক্তেব্যে কুষ্টিয়া পৌর এলাকার বিবি নন্দী সড়কস্থ অর্পিত সরকারি জমির ওপর পরিত্যক্ত ঘরে বসবাসকারী শারীরিক প্রতিবন্ধী মান্দারি হালদার ও ফুলমালা হালদারের কন্যা অঞ্জনা বলেন, জন্ম থেকেই আজন্ম পাপের করুন পরিণতি অন্ধত্বের কাছে মাথানত না করে নানা ঘাত-প্রতিঘাত ও প্রতিকুলতা পেরিয়ে নিজেকে একজন যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয়কে ধারন করে তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন নিজেকে। কুষ্টিয়ার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী স্কুল থেকে শুরু করে প্রাইমারি, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে সর্বশেষ ইতিহাস বিষয়ে স্নাতক সম্মানসহ স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন ২০১৭ সালে। একই সঙ্গে কুষ্টিয়া শিল্পকলা একাডেমি থেকে ৪ বছর মেয়াদী সংগীত শিক্ষায় ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করেছেন। বিদ্যমান অবস্থায় ন্যূনতম জীবন ধারনযোগ্য একটা কর্মসংস্থান এবং মাথা গোঁজার মতো একটা ঠাঁয় পেতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন।  

এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিজে সরাসরি প্রধানন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে দুরাবস্থার নিরসনের আবেদন করতে চাই।  

এ সময় অঞ্জনার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রতিবেশী রেহানা আহমেদ, অঞ্জনার মা ফুলমালা হালদার, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আল মামুন সাগর, সাধারণ সম্পাদক আনিসুজ্জামান ডাবলু, এডিটরস ফোরামের সভাপতি মজিবুল সেখসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীরা।

অঞ্জনার মা ফুলমালা হালদার বলেন, ‘শিক্ষা জীবনে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েও কৃতিত্বের সাক্ষার রেখেছেন অঞ্জনা। সমাজের কোনো না কোনো ক্ষেত্রে কাজ করে নিজের অবদান রাখার মতো যোগ্য হয়ে উঠেছে। ’ কিন্তু দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় হলো- অসহায় ভূমিহীন জন্মান্ধ অঞ্জনার সরকারি চাকরির বয়স শেষ হয়েছে আরও আগেই। নিজের ন্যূনতম জীবন ধারনে এক চিলতে মাথা গোঁজার ঠাঁইসহ একটা কর্মসংস্থানের আবেদন নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছি কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলে দাবি ফুলমালা হালদারের।

তবে এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সমাজ সেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক) মুহাম্মদ মুরাদ হোসেন বলেন, ‘অঞ্জনা জন্মগতভাবেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী অঞ্জনা হালদার সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী। শিক্ষা জীবন শেষ করে এখন তিনি একটা কাজের দাবি করছে ভালো কথা, তবে তাকেই বিষয়টি আমাদের কাছে এসে পরিষ্কার করতে হবে যে অঞ্জনা কী ধরনের কাজ করার যোগ্যতা রাখে। তাহলে ওর সক্ষমতা অনুযায়ী একটা কাজ পাইয়ে দেওয়ার মতো চেষ্টা আমরা সম্মিলিতভাবেই করতে পারি। ’

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৮ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২২
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।