ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ মে ২০২৪, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নরসিংদীতে পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার ৫

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৫ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২২
নরসিংদীতে পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার ৫ গ্রেফতাররা।

নরসিংদী: নরসিংদীর রায়পুরায় পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বিদেশি ডলার, রিয়ালসহ ২৬ লাখ টাকা ডাকাতির ঘটনায় ৫ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

শুক্রবার (২৪ জুন) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্য্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান।

গ্রেফতাররা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পশ্চিমমেড্ডা এলাকার মৃত ইসমাইল মিয়ার ছেলে জয়নাল আবেদীন (৪৮), নবীনগর থানার মো. জাহাঙ্গীর আলম (৫০), কুমিল্লা জেলার হোমনা থানার দৌলতপুর গ্রামের মো. নাজির আহম্মেদ (৫৮), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মধ্যমেড্ডা এলাকার মৃত ঝারু মুন্সির ছেলে মো. রাজিব মিয়া (৩৩) ও পশ্চিমমেড্ডা এলাকার মো. শাহাজাহান মিয়া (৬০)।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ভৈরবের ব্যবসায়ী দেলুয়ার হোসেনের ছোট ভাই মো. আক্তার হোসেন (৩৪) গত ১৬ জুন বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় ভৈরব বাজার থেকে ব্যবসার কাজ শেষ করে নগদ দুই লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা, ১৮ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ টাকার সৌদী রিয়াল, পাঁচ হাজার ইউএস ডলার নিয়ে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি যাওয়ার পথে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক পার হয়ে রায়পুরার বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান নগর উত্তরপাড়া ব্রিজের ১০০ গজ দক্ষিণে পৌঁছালে পুলিশের পোশাক পরা অজ্ঞাতনামা ৬-৭ জন তাকে ধাওয়া করে। এ সময় আক্তার হোসেনের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে তাকে টানা হেঁছড়া করে বেদম মারধর করার পর ব্যাগে থাকা ২৬ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। ঘটনার সময় তার দুটি মোবাইল ফোনও ছিনিয়ে নেয়। এ সময় আক্তার হোসেনের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এলে ছিনতাইকারীরা একটি নোয়া সাদা রংয়ের মাইক্রোবাসে উঠে দ্রুত পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ব্যবসায়ী দেলুয়ার হোসেন রোববার রায়পুরা থানায় মামলা দায়ের করলে তদন্তে নামে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে গোপন সূত্র ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৫ জনকে গ্রেফতার করে।  

এসময় তাদের কাছ থেকে ২ সেট পুলিশের পোশাক, ১ জোড়া হ্যান্ডকাফ, ১টি বেল্ট, ২০০ ইউএস ডলার, ২০০০ সৌদি রিয়াল, ১১০০০ টাকা ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত নোহা গাড়িটি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সুপারের কার্য্যালয়ে মামলার বাদী দেলুয়ার হোসেন বলেন, আমি রায়পুরা থানার রামনগর গ্রামের বাসিন্দা। আর ভৈরব হাবিব সুপার মার্কেটে মোবাইল ফোনের ব্যবসা ও পাশাপাশি হজ এজেন্সির সঙ্গে কাজ করিয়া আসিতেছি। ঘটনার দিন আমার ভাইয়ের ডলার রিয়ালসহ ২৬ লাখ টাকা ছিনতাইকারীরা নিয়ে যায়। ছিনতাইকারীদের শরীরে পুলিশের পোশাক ছিল। তারা আমার ভাইকে মারধর করে গুরুতর আহত করে। বিষয়টি আমি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার করেছে। আমি তাদের যথাযথ বিচার ও বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।

নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান বলেন, গ্রেফতাররা পুলিশ পরিচয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। পুলিশ পরিচয়ে কোনো ঝামেলা ছাড়াই তারা অপরাধ করতে পারছিল বলে তারা পোশাকটি বেশি ব্যবহার করতো। জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনায় জড়িতের কথা স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ১৬টি মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলমান আছে ও বাকি আসামিদের ও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪২ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।