ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ মে ২০২৪, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

‘ইউক্রেন ইস্যুতে বাংলাদেশ রাশিয়ার নীরব সমর্থক’

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৮ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২২
‘ইউক্রেন ইস্যুতে বাংলাদেশ রাশিয়ার নীরব সমর্থক’

ঢাকা: ইউক্রেন ইস্যুতে বাংলাদেশ রাশিয়ার নীরব সমর্থক বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, ইউক্রেন ইস্যু ঘিরে বর্তমানে যে বৈশ্বিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, এতে বাংলাদেশ রাশিয়ার পক্ষে নীরব সমর্থন দিয়ে চলেছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) রাজধানীতে আয়োজিত এক লেকচার অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞরা এসব মতামত দেন।

‘বাংলাদেশ-রাশিয়া সম্পর্ক: অপরিহার্যতা, সম্ভাবনা এবং ঝুঁকি’ শীর্ষক এই লেকচারের আয়োজন করে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ‘ল’ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স (বিলিয়া)।

লেকচার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) শাব্বির আহমেদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ-রাশিয়ার বন্ধুত্ব সময়োর্ত্তীণ। দুই দেশ বন্ধু হিসেবে দীর্ঘ সময় পাড়ি দিয়েছে।

তিনি বলেন, ইউক্রেন ইস্যুতে বাংলাদেশ যে অবস্থান নিয়েছে, সেটা সবার জানা। এই ইস্যুতে জাতিসংঘে তিন রেজুলেশন আনা হয়। বাংলাদেশ এর দুইটাতে বাংলাদেশ ভোট দানে বিরত ছিল। আমাদের পররাষ্ট্র নীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়’। সে অনুযায়ী এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আগামী দিনে রাশিয়া-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

লেকচারে বিশেষ অতিথি রাশিয়া দূতাবাসের ডেপুটি চীফ অব মিশন একাতেরিনা সেমেনোভা বলেন, ২০২১ সালে বাংলাদেশ-রাশিয়ার মধ্যে তিন বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়েছে। তবে ইউক্রেন পরিস্থিতিতে সাপ্লাই চেইন ও অর্থ স্থানান্তর যেন আমরা ভালোভাবে সম্পন্ন করতে পারি, সে লক্ষ্যে নতুনভাবে উদ্যোগ নিয়েছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভাষার জন্য আন্দোলন করেছে। তবে ডনবাসবাসীদেরও ভাষার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সেখানে রাশিয়ান ভাষা ব্যবহারে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এই বিষয়টি সবার জানা প্রয়োজন। ইউক্রেন ইস্যুতে বাংলাদেশের ভূমিকা ইতিবাচক বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দা রোজানা রশিদ বলেন, দীর্ঘদিন দুই পরাশক্তি শীতল যুদ্ধে লিপ্ত ছিল। তবে শীতল যুদ্ধে বাংলাদেশ লাভবান হয়েছে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খুব উষ্ণ ছিল। তবে আশির দশক থেকে বাংলাদেশ চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ঝুঁকে পড়ে। তবে বর্তমানে দুই দেশ আবার উষ্ণ সম্পর্ক উপভোগ করছে।

তিনি বলেন, ইউক্রেন ইস্যুতে বাংলাদেশ নীরবে রাশিয়াকে সমর্থন দিয়ে আসছে। এছাড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে রাশিয়ার সহযোগিতা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গবেষণা বিভাগের মহাপরিচালক নওরীন আহসান বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই গত ৫০ বছর বাংলাদেশ-রাশিয়া দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উপভোগ করছে। ১৯৭১-৭৫ পর্যন্ত বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন বিশেষ করে বিদ্যুৎখাতে অবদান রেখেছে রাশিয়া।

তিনি বলেন, ৬ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী রাশিয়া থেকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেছে। তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদে অবদান রেখেছে। রাশিয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে।

লেকচার অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক হুমায়ুন কবির, বিলিয়ার পরিচালক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। এতে সভাপতিত্ব করেন বিলিয়ার চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার এম আমীরুল ইসলাম।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২২
টিআর/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।