ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘৯৯৯’ ফোন পেয়ে তালাবদ্ধ গৃহবধূকে উদ্ধার করল পুলিশ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৩ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২২
‘৯৯৯’ ফোন পেয়ে তালাবদ্ধ গৃহবধূকে উদ্ধার করল পুলিশ

বরগুনা: জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’-নম্বরে ফোন পেয়ে তালাবদ্ধ এক গৃহবধূকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২১ জুন ) বিকেলে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে ফোন পেয়ে আমতলী থানার পুলিশ গুরুতর আহত অবস্থায় ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে।

জানা গেছে, বরগুনার আমতলী উপজেলার আঠারগাছিয়া গ্রামের মিলন তালুকদারের মেয়ে লিজা বেগমের সঙ্গে গুলিশাখালী ইউনিয়নের গুলিশাখালী গ্রামের মানিক গাজীর ছেলে নান্নু গাজীর ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি বিয়ে হয়। স্বামীর চাহিদা মত টাকা এনে না দিলেই স্ত্রী লিজার ওপর চলত নির্যাতন।  

শনিবার সকালে লিজাকে তার বাবার বাড়ি থেকে ৩ লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলেন নান্নু গাজী। লিজা বাবার বাড়ি থেকে এত টাকা এনে দিতে অস্বীকার করলে নান্নু লাঠি দিয়ে তাকে বেদম পিটিয়ে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখেন। মারধরে সহায়তা করেন নান্নুর বাবা মানিক গাজী, ভাসুর শাহীন গাজী ও মোখলেছ গাজী। যৌতুকের টাকা এনে না দেওয়ায় মঙ্গলবার সকালে নান্নু, শ্বশুর মানিক গাজী, ভাসুর শাহীন ও মোখলেছ তাকে লাঠি দিয়ে দ্বিতীয় দফা পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখেন।  

লিজার বাবা মিলন তালুকদার মেয়েকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে ঘরে তালবদ্ধ করে রাখার খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ‘৯৯৯’-এ ফোন করেন। সেখান থেকে আমতলী থানাকে জানালে আমতলী থানার এসআই ইমাম হোসেন গুলিশাখালী গ্রামের নান্নু গাজীর ঘর থেকে গৃহবধূ লিজাকে গুরুতর আহত অবস্থায় বিকেল সাড়ে ৪টার সময় উদ্ধার করে আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করে।  

আমতলী থানার এসআই ইমাম হোসেন জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় গৃহবধূ লিজাকে উদ্ধার করে আমতলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অভিযুক্ত নান্নু গাজী বলেন, যৌতুকের জন্য নয় পারিবারিক কলহের জন্য মারধর করেছি। চিকিৎসা না করিয়ে বাড়িতে আটকে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

অভিযুক্ত নান্নু গাজীর বাবা মানিক গাজী বলেন, ছেলের বউ কথা শোনে না তাই মারধর করেছি। ছেলের বউকে মারতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি।

গৃহবধূ লিজার বাবা মিলন তালুকদার জানান, যৌতুকের জন্য নান্নু, তার বাবা মানিক গাজী, ভাই শাহীন ও মোখলেছ প্রায়ই আমার মেয়েকে মারধর করত। তারা আমার মেয়ের কাছে ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় গত শনিবার এবং মঙ্গলবার গাছের ডাল দিয়ে দু’দফা পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখে। ভয়ে আমি ওই বাড়িতে মেয়েকে উদ্ধারের জন্য যাইনি। তাই ‘৯৯৯’ ফোন দিয়েছি। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।  

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মিজানুর রহমান জানান, ‘৯৯৯’ থেকে ফোন পেয়ে গুলিশাখালী গ্রামে পুলিশ পাঠিয়ে নির্যাতিত গৃহবধূ লিজাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্ততি চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩১৬ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।