ঢাকা, বুধবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ মে ২০২৪, ০৬ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ফরিদপুরে হঠাৎ বাড়ছে পদ্মার পানি, প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল

হারুন-অর-রশীদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৫ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২২
ফরিদপুরে হঠাৎ বাড়ছে পদ্মার পানি, প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল

ফরিদপুর: হঠাৎ বন্যার প্রভাব পড়তে শুধু করেছে ফরিদপুরে। ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পদ্মার পানি অব্যাহত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এতে চর অধ্যুষিত নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে।

পদ্মার গোয়ালন্দ পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৬ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে জেলার পদ্মা, মধুমতি, আড়িয়াল খাঁ ও কুমার নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হতে শুরু করেছে। বর্তমানে বিপৎসীমার ১ মিটার নিচে দিয়ে পদ্মার পানি প্রবাহিত হলেও আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে তা অতিক্রম করার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ফরিদপুর সদরের নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের আইজুদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী এলাকার মাসুদ সরদার বাংলানিউজকে জানান, গত ৭-৮ দিন ধরে পদ্মার পানি বৃদ্ধি পেলেও দু’দিন ধরে সেটির মাত্রা আরও বেড়েছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি পেলে কয়েকদিনের মধ্যে অনেক বাড়িতে পানি ওঠা শুরু হবে।

একই ইউনিয়নের কাইমুদ্দিন ডাঙ্গী এলাকার হাজেরা খাতুন (৭০) বাংলানিউজকে বলেন, দু’দিন ধইরা যেমন কইরা পানি বাইড়্যা বাইস্যা অ্যয়ে, তাতে বয়্যে (ভয়ে) আছি। কি থ্যাইকা কি অ্যয়ে (হয়ে) যায়।

ফরিদপুর জেলা সদরের নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান মুস্তাক বলেন, ইউনিয়নে হু হু করে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত দু’দিনে প্রায় ১ ফুট পানি বেড়েছে। এ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৫০০ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বাদামসহ অন্যন্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

পার্শ্ববর্তী চরমাধবদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মির্জা সাইফুল ইসলাম আজম বলেন, হঠাৎ পানি বৃদ্ধিতে এ ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষের বাদাম ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি পেলে কয়েকদিনের মধ্যে পাট ও তিল ক্ষেতও তলিয়ে যাবে। এছাড়া চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের অন্তত ৪৫০ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ফরিদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা বাংলানিউজকে জানান, হঠাৎ বন্যার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিনই ফরিদপুরের পদ্মা, মধুমতি নদী ও আড়িয়াল খাঁ নদের পানি বাড়ছে। পদ্মার পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে বিপৎসীমার ১ মিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমার লেভেল ৮ দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার)। তবে এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে দুই-তিন দিনে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দীপক কুমার রায় বলেন, ত্রাণ বিতরণের মতো বন্যা এখনও হয়নি। তবে, বন্যা মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে। ইতোমধ্যে ফরিদপুরের ৯টি উপজেলার ইউএনওকে সাত টন করে ত্রাণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ১৫০ টনের বেশি ত্রাণ মজুদ আছে। বন্যা মোকাবিলায় তেমন কোনো সমস্যা হবে না আশা রাখছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২২
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।