ঢাকা, শনিবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

কোরবানি ঘিরে ব্যস্ত বরিশালের খামারিরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৮ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২২
কোরবানি ঘিরে ব্যস্ত বরিশালের খামারিরা

বরিশাল: পবিত্র ঈদুল আজহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদ সামনে রেখে গবাদিপশুর পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন বরিশালের খামারিরা। ক্রেতা পর্যায়ে বরিশাল অঞ্চলে মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি থাকায় বেশিরভাগ খামারেই বড় আকৃতির গরুর দেখা তেমন মিলছে না।

এদিকে জেলায় এখন পর্যন্ত কোরবানিযোগ্য পশুর চূড়ান্ত সংখ্যা জানাতে পারেনি প্রাণিসম্পদ দপ্তর। তবে বিগত বছরগুলোর মতো এবারেও কোরবানির চাহিদা পূরণে পাশের জেলাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে গবাদিপশুর আমদানি ঘটাতে হবে বলে জানিয়েছেন তারা।

এছাড়া কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা পশুর চাহিদা না থাকায়, প্রাকৃতিক ও নির্ভেজাল পদ্বতিতে মোটাতাজাকরণ পদ্বতির পশুর চাহিদা বেশি থাকবে বলে জানিয়েছেন খামারিরা। আর এতে করে খামারিরা ভালো দর পাবেন বলেও মনে করা হচ্ছে।

হিসাব বলছে, শুধু বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে দুই শতাধিক খামারে কয়েক হাজার গবাদিপশু মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে।

উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের বাশাইল গ্রামের খামারি শামীম শিকদার বলেন, ২০১২ সালে ২০টি দেশি প্রজাতির ষাঁড় কিনে সেগুলোকে মোটাতাজাকরণ শুরু করি। তবে এখন আমার এ খামারে ৫০টির মতো  ষাঁড় ও ৬টি মহিষ রয়েছে রয়েছে। যার মধ্যে অনেকেগুলো দেখতে বেশ ভালো আকারের হয়েছে। সামনে কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে কিছু গরু বিক্রির চিন্তাও করছি।

তিনি বলেন, সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে খড়, খৈল, ভুষি ও কাঁচা ঘাস খাইয়ে গরুগুলো মোটাতাজা করা হয়েছে। এই পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করার খরচ একটু বেশি হলেও কোন রকমের ঝুঁকি নেই। আর ক্রেতারাও এ ধরনের গরুর প্রতি আগ্রহী।  

উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের আস্কর গ্রামের শহিদুল ইসলাম জানান, তিনি এ বছর ১২টি গরু মোটাতাজা করছেন। গরুর কোন সমস্যা মনে হলেই উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের লোকজনদের কাছ থেকে চিকিৎসা ও পরামর্শ নিয়ে থাকেন। তবে গো-খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় মোটাতাজাকরণ ব্যয় অনেকটা বেড়েছে। কোরবানিতে তিনি গরুগুলো বিক্রি করতে চাচ্ছেন এবং আশা করছেন ভালো দরও পাবেন।

নুর ফিসারিজের মালিক কাজী নজরুল ইসলাম বলেন, ভারতীয় গরু আসা কমে যাওয়ায় এখন খামার ব্যবসায় জোড় দিয়েছি। বর্তমানে আমার খামারেও ২০টি গরু রয়েছে। যেগুলোকে সন্তানের মতই লালন-পালন করা হচ্ছে। আর ভালো দর পেলে আগামীতে পশুর সংখ্যা আরো বাড়ানোর চিন্তাভাবনা রয়েছে।

তিনি জানান, গ্রাম থেকে গরু কিনে পরে প্রায় ৮ মাস ধরে নিজ খামারে রেখে সেগুলোকে লালন-পালন করছেন। আর গোটা পদ্বতিটা একবার রপ্ত করতে পারলে এবং পশু বিক্রি করে ভালো অর্থ পেলে এ পেশায় আসতে উৎসাহিত হবেন অনেকে।

সেইসাথে খামার ব্যবসায় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতাও দরকার বলে জানান তিনি।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান তরফদার বলেন, উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে প্রায় দুই শতাধিক ছোট-বড় গরুর খামার রয়েছে। যেগুলোর খোঁজ-খবর প্রতিনিয়ত রাখা হচ্ছে। আমাদের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে একেবারেই প্রাকৃতিক ও নির্ভেজাল পদ্ধতিতে গরু লালন-পালন করেছেন বিভিন্ন খামারি। সেইসাথে গরু মোটাতাজাকরণের ক্ষেত্রে কোন রকম ক্ষতিকারক ওষুধ কিংবা ইনজেকশন ব্যবহার না করার পরামর্শও প্রতিনিয়ত খামারিদের দিয়ে থাকি।

আর গরু মোটাতাজাকরণের বিষয়ে খামারিদের সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দিতে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা মাঠে পর্যায়ে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নূরুল আলম।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৬ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২২
এমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।