ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মুহিতের মূল চিন্তাই ছিল বাংলাদেশ, স্মরণসভায় বক্তারা

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৪ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২২
মুহিতের মূল চিন্তাই ছিল বাংলাদেশ, স্মরণসভায় বক্তারা আবুল মাল আবদুল মুহিতের স্মরণসভা | ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: প্রয়াত সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তাঁর দীর্ঘ জীবন মানুষের জন্য কাজে লাগিয়ে গেছেন, তাঁর মূল চিন্তাই ছিল বাংলাদেশ। আবুল মাল আবদুল মুহিতের স্মরণসভায় বক্তারা এ কথা বলেন।

বুধবার (১৫ জুন) রাজধানীর হোটেল শেরাটনের গ্র্যান্ড বলরুমে এ স্মরণসভার আয়োজন করে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

আলোচকদের মধ্যে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ।

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ব্যক্তিগত জীবনে আমি তাঁকে চাচা বলে ডাকতাম। কারণ, তিনি আমার বাবার সিনিয়র কলিগ ছিলেন। আর আমার নানাবাড়িও সিলেটে।

তিনি বলেন, কিছু মানুষ আছেন, যারা চলে যাওয়ার পরেও সেলিব্রেট করতে হয়। আবুল মাল আবদুল মুহিতও তেমন একজন। তাঁকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম অনুসরণ করবে।

স্পিকার বলেন, মুহিত মোট ১১ বার, এর মধ্যে টানা ৯ বার জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ করেছিলেন। এখন জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশন চলছে, তবে আজ তিনি নেই। আমরা তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। যুক্তিসঙ্গত প্রস্তাব ও নীতি তিনি গ্রহণ করতেন। তার গভীর প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা ছিল। তিনি সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন। সে কারণেই তিনি বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পেরেছিলেন।

শিরীন শারমিন আরও বলেন, নারীদের অগ্রযাত্রায় তিনি বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলেন। সামাজিক নিরাপত্তা, নারীদের জন্য ভাতা, নারী ক্ষুদ্র উদ্যক্তাদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রেখেছিলেন।



তিনি বলেন, তাঁর বয়সের কারণে কোনো কাজ বাধাগ্রস্ত হয়নি। তিনি একই সাথে ছিলেন সাংস্কৃতিকমনা। নানা কাজে থাকলেও তিনি সিলেটকে কখনো ভুলে যাননি। সিলেটের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ছিল গভীর। তাঁর অবদান চিরদিন সিলেটবাসী ও বাংলাদেশ স্মরণ করবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, মুহিত ভাই ১৯৯৯ সালের দিকে দেশ নিয়ে হতাশায় ছিলেন। সে সময় ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ কোন দিকে যাচ্ছে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। তারপর ২০০১ সাল থেকে তিনি দেশের জন্য কাজ শুরু করেন। দেশকে কীভাবে উন্নয়ন করা যায়, সেই চিন্তা শুরু করেন। দেশের আগামী ভবিষ্যৎ কী হবে, সেটা নিয়ে কৌশল প্রণয়নে যুক্ত ছিলেন।

তিনি বলেন, মুহিত ভাই জিনিয়াস ছিলেন। তার সেই প্রতিভা কাজে লাগিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের উন্নয়নে কাজে লাগানোর জন্য শেখ হাসিনা তাঁকে সুযোগ দিয়েছিলেন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, মুহিত ভাইয়ের জ্ঞানের পরিধি ছিল বিশাল। তাঁর কাছ থেকে অনেক কিছু আমি জেনেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্যও তাঁর বিশেষ অবদান ছিল। দেশীয় সফটওয়ার যেটা আমরা বানাতে পারি, সেই সফটওয়ার আমদানি বন্ধের জন্য তাঁকে অনুরোধ করেছিলাম। তিনি সেটা করেছিলেন। ইন্টারনেটে ভ্যাট কমিয়ে দেওয়ার জন্যও তিনি অবদান রেখেছিলেন। তাঁর কাছে পুরো বাংলাদেশ ঋণী। আমরা পুরো জাতি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেন, আমরা সময় নষ্ট করে ফেলি। তবে তিনি দীর্ঘ জীবন মানুষের জন্য কাজে লাগিয়ে গেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি বিশেষ অবদান রেখেছেন। তাঁর মূল চিন্তাই ছিল বাংলাদেশ। আর তিনি ছিলেন স্বাধীনতার পক্ষে।

ইমরান আহমেদ আরও বলেন, মুহিত সিলেটের সন্তান হলেও শুধু সিলেটের জন্য তিনি কাজ করেননি। তিনি ছিলেন পুরো বাংলাদেশের। সারা দেশের জন্য তিনি ছিলেন নিবেদিত প্রাণ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম এ মুবিন খান। এতে আরও বক্তব্য রাখেন প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. আনোয়ার হোসেন খান, বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর শিকদার, আবুল মাল আব্দুল মুহিতের বোন ড. শায়লা খাতুন প্রমুখ।

গত ২৯ এপ্রিল দিবাগত রাত ১২টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সাবেক অর্থমন্ত্রী মরহুম আবুল মাল আবদুল মুহিত। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৮ বছর।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৬ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২২
টিআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।