ঢাকা, রবিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ মে ২০২৪, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দেশে খাদ্য নিয়ে কোনো হাহাকার নেই: কৃষিমন্ত্রীর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৬ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২২
দেশে খাদ্য নিয়ে কোনো হাহাকার নেই: কৃষিমন্ত্রীর বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: শহরে যারা চাকুরীজীবী ও সীমিত আয়ের মানুষ তাদের কষ্ট হচ্ছে স্বীকার করে নিলেও কৃষিমন্ত্রী দাবি করেছেন খাবার নিয়ে দেশে কোনো হাহাকার নেই।

শুক্রবার (১০ জুন) বিকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করে ড. আব্দুর রাজ্জাক।

চালের দাম বেড়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সরু চালের দাম বেড়েছে। কারণ, দেশের মানুষ এখন চিকন চাল খায়। সে চালের দাম ৬৪-৬৫ টাকা। মোটা চালের দাম কিন্তু বাড়েনি। সেটা ৪৫ থেকে ৪৬ টাকার মধ্যে রয়েছে। গ্রাম বাংলার বিপুল সংখ্যক মানুষ সরু চাল খায়। ৬০-৭০ ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে। সরকার ৬০-৭০ ভাগ মানুষকে সহায়তা দিচ্ছে।

সারে অনেক ভর্তুকি দিতে হচ্ছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, সার দাম চারগুণ বেড়েছে। এখন পর্যন্ত ভর্তুকিতে ২৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছি। এই যে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে, সেটা গ্রামের মানুষ পাচ্ছে। কৃষকদের কাছেই যাচ্ছে। সেটা ডিলারের মাধ্যমে দেওয়া হয় ফলে এটা নিয়ে নয়-ছয়ের সুযোগ নেই। আমরা যদি এটা না দিতাম তাহলে কৃষির অবস্থাটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াত? উৎপাদনসহ কৃষকের আয় কমে যেত। তারা খাদ্য ও অর্থসহ নানা রকম সংকটে পড়তো।

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মানুষের আয় কিন্তু বেড়েছে। আমরা সেটাই চাই। এ সরকারের একটাই কথা; আমরা নিজেরাই স্বয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছি। যে উৎপাদন সেটা দিয়ে দেশে কোনো খাদ্য সংকট বা হাহাকার, দুর্ভিক্ষ সে ধরনের কিছু হবে না। যদি বিদেশ থেকে খাদ্য কিনতেও না পারি আন্তর্জাতিক বাজারের অস্থিরতার কারণে তাহলেও সেরকম কোনো অবস্থা হবে না। ইনশাল্লাহ আমরা সে অবস্থা দেশকে নিয়ে গেছি।

তিনি বলেন, বিজ্ঞানীরা যে জাত আবিষ্কার করেছেন, সেটা দিয়ে ৫০ থেকে ৬০ ভাগ উৎপাদন বাড়াতে পারবো। সরকার এজন্য সারের ওপর প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছে। ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে খাওয়াচ্ছি। তারপরও যারা নিম্ন আয়ের মানুষ তাদের আগে ১০ টাকা কেজিতে এবার ১৫ টাকা কেজিতে চাল দেওয়া হবে। বাজেটে প্রস্তাব করা হয়েছে ৫০ লাখ পরিবারকে খাবার দেবো। এছাড়া নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মধ্যে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। আমাদের একটাই লক্ষ্য- মানুষ যাতে পুষ্টি জাতীয় খাবার খেতে পারে।

কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, আস্তে আস্তে চালের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে হবে। আগে ৪১৭ গ্রাম চাল খেত একজন। এখন সেটা ৩৭০গ্রামে নেমেছে; এটা ভালো লক্ষণ। জাপানসহ পৃথিবীর কোনো দেশে ২০০ গ্রামের বেশি চাল খায় না।

বাংলাদেশ মানুষ এখন ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে চায় না। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমি দেখেছি, আয়ের সাথে যদি তুলনা করেন তাহলে অবশ্যই দাম বেড়েছে। খাদ্যের কিছুটা ক্রাইসিস হচ্ছে। এ মুহূর্তে কৃষকরা পেঁয়াজ, আলুর দাম কম বলে বিক্রি করতে পারছে না। মুরগির দাম কম থাকায় সমস্যায় পড়ছে খামারিরা। আবার কিছু কিছু পণ্যের দাম কমও আছে।

কৃষিমন্ত্রী রাজ্জাক আরও বলেন, গমের দাম বেশি৷ ইউক্রেন- রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে গমের আমদানি কমেছে। সেজন্য চালের উপর চাপটা বেড়েছে। এজন্য দাম বেড়েছে। কিছু মানুষ সরু চাল খেতে পারে। বাংলাদেশে তারা সেটা এফোর্ট করতে পারে। তবে শহরের যারা সীমিত আয়ের মানুষ তাদের বেশ কষ্ট হচ্ছে। এটা আমি স্বীকার করি কিন্তু দেশে কোনো খাদ্য নিয়ে হা হা কার এই মুহূর্তে নেই।

বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, গভর্নর ফজলে কবির, এনবিআর চেয়ারম্যান রহমতুন মমিন, অর্থ বিভাগের সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, জুন ১০,২০২২
জিসিজি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।