ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বন্দরে ধর্ষণের শিকার তরুণীর আত্মহনন: মেম্বারসহ গ্রেফতার ২

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪২ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০২২
বন্দরে ধর্ষণের শিকার তরুণীর আত্মহনন: মেম্বারসহ গ্রেফতার ২

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের বন্দরে ধর্ষণের শিকার তরুণীর আত্মহত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার ২ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (৭ জুন) গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।

৬ জুন দুপুরে ওই তরুণীর মা বাদী হয়ে অভিযুক্ত নুরুল আমিন ও তার স্ত্রী শ্যামলী বেগম ও স্থানীয় মেম্বার কচিসহসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে বন্দর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ মামলা দায়ের করেন।

এ ঘটনায় পুলিশ মামলা দায়েরের ওই দিন বিকেলে বন্দর উপজেলার ফরাজিকান্দা এলাকায় অভিযান চালিয়ে একই এলাকার মৃত আনিছুজ্জামান মিয়ার ছেলে উল্লেখিত মামলার এজাহারভুক্ত আসামি কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল মোমেন কচি (৫২) ও ৭ জুন আলীনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে উক্ত এলাকার মৃত আউয়াল মিয়ার ছেলে উল্লেখিত মামলার এজাহারভুক্ত আসামি দবির চৌধুরীকে (৪৫) গ্রেফতার করেছে।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা বন্দর থানার উপ-পরিদর্শকব(এসআই) সাইফুল আলম পাটোয়ারী জানান, গ্রেফতারকৃত মেম্বার কচি ও দবিরকে উল্লেখিত মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

৬ জুন সোমবার সকালে ভুক্তভোগী তার নিজ বাড়িতে আত্মহত্যা করে। ভুক্তভোগী তরুণী দীর্ঘদিন ধরেই বন্দরের কলাগাছিয়া ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামের নুরুল আমিন ওরফে নুরুর (৪৫) ধর্ষণের শিকার হয়ে আসছিলেন। এই ঘটনায় গত ২৯ মে থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করলে ক্ষিপ্ত হয়ে ধর্ষণের ধারণকৃত ভিডিও ছড়িয়ে দেন নুরু।

ওই তরুণীর বোনজামাই বলেন, ‘ভুক্তভোগী আমার স্ত্রীর বড় বোন। অর্থনৈতিকভাবে তাদের অবস্থা ভালো না হওয়ায় তিনি নুরুর বাড়িতে রান্নার কাজ করতেন। এক পর্যায়ে তাকে ধর্ষণ করেন নুরু। সেই ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন তারই স্ত্রী। সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মাসের পর মাস নির্যাতন করে আসছিলো। সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হলে সামাজিকভাবে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাতে ব্যর্থ হলে থানায় মামলা দায়ের করি আমরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নুরু তার মুঠোফোনে থাকা ভিডিও ছড়িয়ে দেন। ঘটনার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন ভুক্তভোগী। নুরু তার স্ত্রীকে ব্যবহার করে পাল্টা ধর্ষণ মামলা দায়ের করে ভুক্তভোগীর পিতা ও বোনজামাইয়ের বিরুদ্ধে। পাল্টাপাল্টি মামলার ঘটনার পর ৫ জুন স্থানীয় মেম্বারসহ অন্যান্য লোকজন এই ঘটনায় বিচার বসায়। তারা চাচ্ছিলেন মামলা থাকলেও এখানে মীমাংসা করে মামলা নিষ্পত্তি করে দিতে। কিন্তু তারা মাতব্বররা জানান, নুরু বিদেশে পালিয়ে গেছেন। সালিসে তারা নুরুর পক্ষ নিয়ে উল্টো ভুক্তভোগীকেই দোষারোপ ও গালমন্দ করেন। এক পর্যায়ে তাদের এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলেন। এসব ঘটনায় অপমান অপদস্তের শিকার হয়ে সোমবার সকালে ঘর খালি থাকার সুযোগ পেয়ে আত্মহত্যা করে ভুক্তভোগী।

এ ব্যাপারে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা গণমাধ্যমকে জানান, আত্মহত্যার ঘটনায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্থানীয় মেম্বার কচিসহ ২ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের জন্য আমাদের অভিযান চলছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৯ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০২২
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।