ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পরিবেশ অশান্ত করলে ‘আম-ছালা’ দুটোই যাবে: প্রধানমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৯ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০২২
পরিবেশ অশান্ত করলে ‘আম-ছালা’ দুটোই যাবে: প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখছেন শেখ হাসিনা।

ঢাকা: বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা বিবেচনা করে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর আন্দোলন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘পরিবেশ অশান্ত করলে আমও যাবে, ছালাও যাবে। তখন আর বেতন বাড়বে না।

বেতনহীন হয়ে যেতে হবে। ’

মঙ্গলবার (০৭ জুন) ঐতিহাসিক ‘৬-দফা দিবস’ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এ সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে বেতন বাড়ানোর আন্দোলন যদি করতে যায়, এই রপ্তানি যদি বন্ধ হয়- গার্মেন্টসসহ সব কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। তখন আমও যাবে, ছালাও যাবে। বেতন আর বাড়বে না। চাকরিই চলে যাবে। যখন ঘরে ফিরে যেতে হবে, তখন কী করবেন?’

উসকানি দাতাদের বিষয়ে সর্তক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যে নেতারা উসকানি দিচ্ছেন তারা কাদের প্ররোচনায় উসকানি দিচ্ছেন সেটাও একটু ভেবে দেখতে হবে। ’

সরকার প্রধান বলেন, ‘বেসরকারি খাতে আমরা কত দেবো! আমরা তো ভর্তুকি দিয়েই যাচ্ছি। সব ধরনের প্রণোদনা দিয়েছি। এর বেশি দেওয়া সম্ভব নয়। সেটা মাথায় রেখে চলতে হবে। নেতাদের তো কোনো অসুবিধা নেই, তারা যেখান থেকে উসকানি পাচ্ছেন সেখান থেকে ভালো অংকের টাকা পাবেন। কিন্তু শ্রমিকদের ভাগ্যে কী হবে? এদের রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে ক্ষতিই তো করা হবে। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমানে যে দেশে আমরা পণ্য রপ্তানি করি তাদের ক্রয়ক্ষমতা সীমিত হয়ে যাচ্ছে এবং দিনে দিনে আরও খারাপ হচ্ছে। আমরা আমেরিকায়-ইউরোপে পণ্য পাঠাই, সব জায়গায় জিনিসের দাম বেড়েছে। সেখানে মানুষ কত দুরাবস্থায় আছে, কত মানুষ না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। সেই তুলনায় বাংলাদেশে এখনও আমরা অন্ততপক্ষে সবার খাদ্য, ওষুধ দিয়ে যেতে পারছি। যদি কেউ কোনো রকম অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে যায় তাহলে আমি বলবো শেষে এ-কূল, ও-কূল দুকূল সব হারাতে হবে। এটা যেন মনে থাকে। ’

মন্দা মোকাবিলায় সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘করোনার সময় আমরা কারখানা বন্ধ হতে দিইনি। চালু রাখার সব সুযোগ করে দিয়েছিলাম। এখন সুবিধা পাচ্ছি- রপ্তানি বাড়ছে আমাদের। আমাদের ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আসছে। বিনিয়োগের সুযোগ আসছে। আমরা সেগুলো কাজে লাগাচ্ছি। কারো কথায় অশান্তি সৃষ্টি করলে দেশের ক্ষতি, নিজেরও ক্ষতি। ’

বিভিন্ন সময় শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন আমরা কত দফা বাড়িয়েছি, যারা এক হাজার ৬০০ টাকা পেতেন তারা ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার; তাছাড়া ওভারটাইম, অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যথেষ্ট বেশি পাচ্ছেন। হ্যাঁ, জিনিসপত্রের দাম কিছু বেড়েছে এটা ঠিক। এটা যে আরও কত বাড়বে- তারও কোনো ঠিক নেই। এটা বিশ্বব্যাপী বাড়ছে। বরং আমাদের দেশে তাও আমরা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি। ’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমি দেখতে পাচ্ছি কয়েকদিন আগে গার্মেন্টস শ্রমিকরা আন্দোলন করেছেন। আন্দোলন করবেন ঠিক আছে কিন্তু আমরা তো সেখানে প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছি, টাকা দিয়েছি। ভর্তুকি দিয়ে গার্মেন্টেসের কর্মী-শ্রমিকরা যাতে সরাসরি বেতনটা পায় সেই ব্যবস্থা করেছি। আমরা সরাসরি ফোনের মাধ্যমে এই শ্রমিকদের টাকা দিয়েছি। মালিকদের হাতে তো দেইনি। ’

আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সভা সঞ্চালনা করেন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৯ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০২২
এমইউএম/এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।