নোয়াখালী: সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বিএম কনটেইনার ডিপোয় আগুন নেভাতে গিয়ে নিভে গেছে ফায়ার ফাইটার মো. আলাউদ্দিনের (৩৬) প্রাণপ্রদীপ।
রোববার (৫ জুন) দুপুরে নিহতের বাবা আব্দুর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, আলাউদ্দিন আমার সেঝো সন্তান। সে সীতাকুণ্ডের কুমিরা ফায়ার সার্ভিসে কাজ করতো। শনিবার রাতের ঘটনায় সে আগুন নেভাতে গিয়েছিল। হাসপাতাল থেকে খবর দিল আমার ছেলে মারা গেছে। তার ৩ বছরের একটা ছেলে আছে।
সন্তান হারিয়ে পাগলপ্রায় আলাউদ্দিনের মা মমতাজ বেগম। তাদের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, ঘরে বসে আহাজারি করছেন মমতাজ। চিৎকার করে বলছেন, আমার বাপে কই গেল। তারে আমার কাছে আইনা দেন। সে কোনো দিন কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করে নাই। আমার পোলারে আইনা দেন।
নিহতের বড় ভাই নাসির উদ্দীন জানান, আলাউদ্দিন গতরাতে ইউনিটের সদস্য হিসেবে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। বিস্ফোরণের পর থেকে তিনি নিখোঁজ হন। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ভাইয়ের নিহতের খবর পান তারা।
শনিবার (৪ জুন) বিএম কনটেইনার ডিপোয় বিস্ফোরণ ও আগুনের ঘটনা ঘটে। রাত ৯টায় বিস্ফোরণের পর আগুন ধরে যায়। রোববার (৫ জুন) বিকেল পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ঘটনাস্থলে কাজ করছে সেনাবাহিনীর ২৫০ সদস্য ও ফায়ার সার্ভিসের ২৫ ইউনিট।
ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আনিসুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, এখনও উদ্ধার অভিযান চলছে। ডিপোয় বিপুল পরিমাণ ‘হাইড্রোজেন পার অক্সাইড’ দাহ্য রাসায়নিক থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হচ্ছে।
এ ঘটনায় নিহত এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪৩ জন। নিহতদের মধ্যে আলাউদ্দিনসহ ফায়ার সার্ভিসের ৮ কর্মী রয়েছেন। অগ্নিদগ্ধ অসংখ্য ভুক্তভোগী বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আগুন নেভাতে নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, ৫ জুন, ২০২২
এমজে