ঢাকা, শনিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

‘পদ্মা সেতুর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৭ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০২২
‘পদ্মা সেতুর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো’

বরিশাল: পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবসময় একটি সুস্থ-সবল জাতিকে দেখতে চেয়েছিলেন। আসলে একটা জাতির মেরুদণ্ড সঠিক থাকে সেই দেশের মানুষের সুস্থ-সবল থাকার ওপরে।

একটা সুস্থ জাতি মানে সেই দেশের উন্নয়ন আর একটা অসুস্থ জাতি মানে তারা উন্নয়ন করতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ আমরা লক্ষ্য স্থির করেছি ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের ভেতরে সমৃদ্ধশালীর দেশে পৌঁছাবে। আর এ লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে একটা সুস্থ-সবল জাতির প্রয়োজন।

শনিবার (৪ জুন) বরিশাল শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত আউটার স্টেডিয়ামে বিভাগীয় পর্যায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, বালক (অনূর্ধ্ব-১৭) ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, বালিকা (অনূর্ধ্ব-১৭)-২০২২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০১৮ সালে শুরু করা হয়। দেশের কিশোর-কিশোরীদের লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর জন্যই এ খেলার আয়োজন করা হয়েছে। ফুটবল খেলার জন্য সব থেকে বেশি শারীরিক যোগ্যতার প্রয়োজন হয়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের যুব সমাজের জন্য খেলাধুলাটা অনেক দরকার। ইন্টারনেটের যুগে যুব সমাজসহ সব বয়সী মানুষের ইন্টারনেটের প্রতি ঝোঁক রয়েছে। কিন্তু বেশি ঝোঁক থাকে কিশোর-কিশোরীদের, তাই বেশির ভাগ ছেলে-মেয়েরা ক্লাসের বাইরে সময় পেলেই খেলাধুলা না করে ইন্টারনেটের পেছনে সময় ব্যয় করে। ট্যাব-মোবাইল-ইন্টারনেট সবকিছুরই দরকার রয়েছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশে পৌঁছেছি, আমরা সমদ্ধশালী দেশের কাতারেও পৌঁছাবো। এজন্য আমাদের দেশ-বিদেশের সম্পর্কে জানতে হবে। আজকাল লেখাপড়া করতেও ইন্টারনেটের প্রয়োজন হচ্ছে। আগে যা আমরা লাইব্রেরিতে গিয়ে জানতাম, তা এখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসেই জানা যাচ্ছে। তাই এটার দরকার আছে। তবে দরকার থাকলেও মনে রাখতে হবে শারীরিক উৎকর্ষতা ও শারীরিক যোগ্যতার খুবই প্রয়োজন। শারীরিকভাবে সুস্থ না থাকলে আমরা বেশিদিন ইন্টারনেটও দেখতে পারবো না। চোখে ও মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। সুতরাং সবকিছুর মধ্যে ব্যালেন্সের প্রয়োজন আছে।

আমি আহ্বান করবো আজ যারা খেলাধুলায় আগ্রহী আছো, তোমাদের দেখে যেন সবার আগ্রহ বাড়ে। যাতে তাদের মানসিক বিকাশ ঘটে, মনের ভেতর প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব সৃষ্টি হয় এবং কর্মজীবনে যেটা সবাইকে অনেক সাহায্য করবে। আজ গোটা দুনিয়াটাই হলো প্রতিযোগিতামূলক। যে ঘরে বসে থাকবে তার বাড়িতে কোনো দিন সাফল্য নিয়ে আসবে না।

এ সময় তিনি অভিভাবকদের প্রতি আবহান জানিয়ে বলেন, আপনাদের সন্তানদের পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে খেলাধুলার প্রতিও আগ্রহী করুন। মনে রাখবেন যারা খেলাধুলা করে তারা মাদক থেকে দূরে থাকে। এজন্য ছেলে-মেয়েরা যত খেলাধুলার প্রতি আকৃষ্ট থাকবে, ততই তারা মাদক থেকে দূরে থাকবে।

পুলিশ প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনাদের ওপর নির্ভর করে ভবিষ্যৎ। আপনারা যদি মাদকের ছোবল থেকে আমাদের কিশোর-কিশোরীকে বাঁচাতে পারেন, তাহলে বঙ্গবন্ধুর যে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা পৌঁছাতে পারবো। সেখানে আপনাদের ওপর বিশাল গুরু দায়িত্ব রয়েছে। মাদক থেকে যাতে আমাদের ছেলে-মেয়েরা দূরে থাকতে পারে, সেজন্য প্রচণ্ডভাবে এগিসেভলি পেট্রোলিং করবেন। মাদকের আখড়াতে রেট করবেন, এর সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনুন। যাতে তারা সমাজের ভেতর মাদক ছড়িয়ে দিতে না পারে।

তিনি আরও  বলেন, ফুটবলে বরিশালের ঐতিহ্য ছিল। আজ গোটা দেশ থেকে পর্তুগাল ও ব্রাজিলে ছেলে-মেয়েদের পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের বরিশালের কেউ নেই। আমি আশা করবো ভবিষ্যতে তোমারাও যেতে পারবে, সেভাবে নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। তোমাদের মনে রাখতে হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা তিনি বাস্তবায়ন করেছিলেন। তিনি স্বাধীন দেশ চেয়েছিলেন বাঙালি জাতির জন্য আর তা তিনি দিয়েছেন। তার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা স্বপ্ন দেখেছিলেন বাংলাদেশ সমৃদ্ধশালী হবে, আর আজ আমরা সে পথে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ এ পদ্মা সেতুর জন্য তার কাছে সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো। আমরা অবহেলিত ছিলাম, আমাদের ঢাকায় যেতে কত কষ্ট, সময় ব্যয় করতে হত এখন আর তা লাগবে না। আজ তার জন্য গোটা বরিশাল বিভাগে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন হয়েছে, হচ্ছে। তাই তোমাদেরও লক্ষ্য স্থির করতে হবে, যাতে তোমরাও সে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারো।

বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিন উল আহসান।

বরিশালের ৬টি জেলার সমন্বয়ে ৬টি বালক ও ৬টি বালিকাসহ মোট ১২টি দল বিভাগীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করবে। ৪ থেকে ৭ জুন পর্যন্ত এ টুর্নামেন্টের খেলা চলবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৪ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০২২
এমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।