ঢাকা, বুধবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ মে ২০২৪, ০৬ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

পুলিশের গাড়ি আটকে আসামি রেখে দেওয়ার চেষ্টা ব্যর্থ 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৮ ঘণ্টা, জুন ২, ২০২২
পুলিশের গাড়ি আটকে আসামি রেখে দেওয়ার চেষ্টা ব্যর্থ 

বরিশাল: আসামিকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে কারাগারে নেওয়ার পথে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বজনদের বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে আসামিকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

বুধবার (১ জুন) সন্ধ্যায় বরিশাল আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বরিশালে আগৈলঝাড়ার গৈলা বাজার সংলগ্ন এলাকা থেকে র‌্যাব-৮ এর বিশেষ অভিযানে ইয়াবা, একটি ওয়ান শুটারগান, দুইটি ওয়ান শুটারগান কার্তুজ ও মোবাইল ফোনসহ সজিব সরদার নামে একজনকে আটক করা হয়। মঙ্গলবার (৩১ মে) দিনগত রাতে তাকে আগৈলঝাড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়। পাশাপাশি র‌্যাবের ডিএডি আনসার আলী বাদী হয়ে অস্ত্র ও মাদক আইনে সজিব সরদারের বিরুদ্ধে আগৈলঝাড়া থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বুধবার সজিব সরদারকে বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়।

কোর্ট পুলিশের সূত্র বলছে, আদালতের বিচারক আসামি সজিবকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিলে, নিয়মানুযায়ী তাকে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়। বুধবার সন্ধ্যায় আসামী সজিব সরদারকে কারাগারে নেওয়ার পথে স্বজনরা পুলিশের গাড়ি ঘিরে ধরে।

প্রতক্ষ্যদর্শী সাংবাদিকদের সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সময় আসামির নারী স্বজনরা পুলিশের পিকআপের সামনে অবস্থান নেয়। তারা কখনো গাড়ির ঠেলে ধরেন,  আবার কখনো পুরুষ স্বজনরা গাড়ির সামনের সড়কে বসে পরেন। এতে আসামিবাহী গাড়ি বাধাগ্রস্থ হচ্ছিল। খবর পেয়ে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের নারী ও পুরুষ সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে স্বজনদের হটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে তারা আসামিকে বহনকারী গাড়ি কেন্দ্রীয় কারাগারের উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দেন।

কোতয়ালি ম‌ডেল থানার প‌রিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হো‌সেন ব‌লেন, আদালত প্রাঙ্গ‌ণে স্বজনরা ওই আসামি‌কে জেল হাজ‌তে পাঠা‌নোর সময় বাধা দি‌য়ে‌ছে সেই খব‌রে আমরা গি‌য়ে প‌রি‌স্থি‌তি নিয়ন্ত্রনে আনি।  

যদিও সজিব সরদারের স্ত্রী নওরীন জাহান মৌ বলেন, বাসা থেকে র‌্যাব সদস্যরা সুস্থ সজিবকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর মঙ্গলবার রাতে থানা পুলিশের কাছে
হস্তান্তর করা হয় তাকে। সেই সময় থেকেই তারা লক্ষ্য করেছেন ঠিকভাবে সজিব সরদার হাঁটতে পারছিল না।

তার দাবি সুস্থ সজিবকে নির্যাতন করায় তিনি হাঁটতে পারছেন না।  

স‌জিবের মা নাস‌রিন জাহান ব‌লেন, সজিবকে আনার পর আদালতে চিকিৎসার জন্য আবেদন করতে চেয়েছিলাম কিন্তু তা পারিনি। সজিবের চিকিৎসা প্রয়োজন তা না হলে চিরতরে বসে পড়বে। ষড়যন্ত্রকারীরা সজিবকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে।

এ বিষয়ে র‌্যাবের কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তারা যে অবস্থাতে আসামিকে গ্রেফতার করেছেন সে অবস্থাতেই থানায় হস্তান্তর করেছেন
বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন র‌্যাবের এক কর্মকর্তা।

আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সরোয়ার জানান, থানায় আসার পর আসামির সঙ্গে কোনো ধরণের খারাপ আচরণ করা হয়নি। মাদকসহ একাধিক মামলার পলাতক এ আসামির বাসায় অভিযান চালাতে গিয়ে ধস্তাধস্তি হতে পারে। সে কারণে থানায় দেওয়ার সময় র‌্যাব আসামির চিকিৎসাপত্রও দিয়েছে।

আর আদালতে যা হয়েছে তা নিজেকে বাঁচানোর জন্য অভিনয় হতে পারে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১০০১ ঘণ্টা, জুন ২, ২০২২
এমএস/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।