ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে, দুই বউ রেখে উধাও স্বামী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৯ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২২
গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে,  দুই বউ রেখে উধাও স্বামী

নীলফামারী: নীলফামারীর ডিমলায় স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন- এমন খবর পয়ে তার বাড়িতে স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে ৫ দিন ধরে অবস্থান করছেন কলেজছাত্রী আঁখি আক্তার (২৩)। এদিকে ঘটনা বেগতিক দেখে দুই বউকে রেখেই উধাও হয়েছেন প্রতারক স্বামী এহছানুল রাহাত (২৭)।

উপজেলার উত্তর আকাশকুড়ি গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।

বিবাহ নিবন্ধন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ তিতপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল মজিদের মেয়ে আঁখি আকতার ও নাউতারা ইউনিয়নের আকাশকুড়ি গ্রামের রফিজুল ইসলামের ছেলে রাহাত ৪ বছর আগে গোপনে বিয়ে করেন। আঁখি নীলফামারীতে সম্মান শ্রেণিতে লেখাপড়া ও রাহাত নারায়ণগঞ্জে ঝুট কাপড়ের ব্যবসা করতেন। প্রায় ১০ বছর আগে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

২০১৮ সালের ১৭ জুলাই কাজী অফিসে ২ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন আঁখি ও রাহাত। কিন্তু বিয়ের ৪ বছর পার হলেও বিষয়টি কাউকে জানাননি আঁখি। এ সময় রাহাতের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বার বার অনুরোধ করেন আঁখি। কিন্তু রাহাত তাতে রাজি না হয়ে বিভিন্ন ধরনের টালবাহানা করতে থাকেন এবং ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন।

এ অবস্থায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পারিবারিকভাবে নারায়ণগঞ্জে চুপিসারে দ্বিতীয় বিয়ে করেন রাহাত। সেই খবর পেয়ে আঁখি তার বাড়িতে আসলে তাকে মানসিক রোগী আখ্যা দিয়ে ঢুকতে বাধা দেয় রাহাতের পরিবারের লোকজন। এ সময় আঁখি বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

এ ঘটনা জানাজানি হলে বিষয়টি নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উদ্যোগে পরিবারের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হয়। কিন্তু কোনো প্রকার সমঝোতা না হওয়ায় স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে রাহাতের বাড়িতে অবস্থানের সিদ্ধান্ত নেন আঁখি।

এদিকে অবস্থা বেগতিক দেখে দুই স্ত্রীকে রেখেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন রাহাত। এ অবস্থায় রাহাতের ঘরের বারান্দাতে অবস্থান করছেন আঁখি।

তিনি বলেন, বিয়ের কথা গোপন রেখে স্বামী-স্ত্রী মিলে ঢাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার করেছি। এখন আমাকে স্ত্রী বলে অস্বীকার করছে। তাই আমি রাহাতের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছি। স্ত্রীর মর্যাদা না পেলে এ বাড়িতেই আত্মহত্যা করব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাহাতের বাবা রফিজুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি। আমার ছেলে বিয়ে করেছে এ কথা আগে জানলে আমি দ্বিতীয়বার তাকে বিয়ে করাতাম না। ছেলে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তবে আমি দু’জনকেই পুত্রবধূ হিসেবে মেনে নিয়েছে।
 
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আশিক ইমতিয়াজ মোর্শেদ মনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, রাহাত মোবাইল ফোনে দুই বিয়ের কথা স্বীকার করেছেন।

ডিমলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিশ্বদেব রায় জানান, এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০৫ ঘণ্টা, ০১ জুন, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।