ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

ইউএনওর নামে যৌন হয়রানির অভিযোগ করে নিরাপত্তাহীনতায় কলেজছাত্রী!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট    | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৫ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২২
ইউএনওর নামে যৌন হয়রানির অভিযোগ করে নিরাপত্তাহীনতায় কলেজছাত্রী!

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুর হোসেনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনা কলেজছাত্রী তার উপর হামলার আশঙ্কা করছেন। বুধবার (২৫ মে) দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ওই কলেজছাত্রী নিজের আশঙ্কার কথা জানান।

 

তিনি অভিযোগ করেন, মনজুর হোসেন এলাকার মাদকাসক্ত লোকজনদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাকে মানসিকভাবে হয়রানি করছেন ও হুমকি দিচ্ছেন।

লিখিত বক্তব্যে ওই কলেজছাত্রী বলেন, মনজুর হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার পর তিনি (ইউএনও) নিজে বাদি হয়ে আমার নামে পর্ণগ্রাফি অ্যাক্টে ঢাকায় একটি মামলা করেছেন। মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে। মামলায় দ্বিতীয় স্বাক্ষী করা হয়েছে আমার গ্রামের এক ব্যক্তিকে, যার বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় মাদক, চুরি, ডাকাতি হত্যা ও ধর্ষণের মামলা রয়েছে।

কলেজছাত্রী আরও বলেন, মনজুর হোসেন তার প্রভাব খাটিয়ে দিনের পর দিন আমার ছবি এডিট করে ভুয়া ভিডিও দিয়ে এলাকায় ছড়িয়ে দিচ্ছেন। তাছাড়া নাম সর্বস্ব কিছু অনলাইন পত্রিকায় ভুয়া সংবাদ পরিবেশন করিয়ে সামাজিকভাবে হেয় করে যাচ্ছেন।

এ অবস্থা রক্ষা পেতে এবং তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানি মূলক মামলার সুষ্ঠ তদন্তের দাবি জানিয়ে ওই কলেজ ছাত্রী প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সকলের মানবিক দৃষ্টি আশা করেছেন।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২০ অক্টোবর ওই কলেজছাত্রী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগে বলেন, বাসাইলের ইউএনও মো. মনজুর হোসেনের সঙ্গে তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে পরিচয় হয়। বিয়ের কথা বলে ইউএনও তার সরকারি বাস ভবনে ডেকে শারীরিক সম্পর্ক করেন। পারিবারিকভাবে তার (ছাত্রীর) বিয়ে অন্য জায়গায় ঠিক হলে তিনি বিয়ের জন্য ইউএনওকে বলতে থাকেন। ইউএনও বিয়ের কথা বলে তাকে বাড়ি চলে আসতে বলেন এবং টাঙ্গাইল শহরের পাওয়ার হাউজের কাছে একটি বাসা ভাড়া নেন। সেই বাসায় তারা দুই মাস থাকেন।  

গত বছর ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে তাকে (ছাত্রী) নিয়ে ইউএনও ভারতের কলকাতায় যান। সেখান থেকে উড়োজাহাজে করে হায়দ্রাবাদ গিয়ে দুজন চিকিৎসা নেন। সেখানে অবস্থানকালে পাসপোর্ট দেখে জানতে পারেন মনজুর হোসেন বিবাহিত। ভারতে ১২ দিন অবস্থানের পর ৫ অক্টোবর তারা ফিরে আসেন। তারপর থেকে ইউএনও তাকে এড়িয়ে চলতে থাকেন।  

তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন শৃঙ্খলা অধিশাখা থেকে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসককে এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। জেলা প্রশাসনের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সোহানা নাসরিন তদন্ত করেন। মনজুর হোসেনের ওই কলেজ ছাত্রীর অনৈক সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয় তদন্ত প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনটি জেলা প্রশাসক মন্ত্রী পরিষদ বিভাগে পাঠিয়ে দেন।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত বছরের নভেম্বর মাসে ইউএনও মো. মনজুর হোসেন বাসাইল থেকে ঢাকায় বদলি হন। এরপর চলতি বছরের ৪ মার্চ ইউএনও হিসেবে তাকে কিশোরগঞ্জের একটি উপজেলায় পদায়ন করা হয়। কলেজছাত্রীর অভিযোগের বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর তাকে প্রত্যাহার করা হয়।


বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৪ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২২
এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।