ঢাকা: অনুদান ও উপবৃত্তির টাকা দেওয়ার নামে অভিনব কায়দায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র।
গ্রাহকদের ফোন দিয়ে কৌশলে পিন কোডের সঙ্গে কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যা যোগ-বিয়োগ করতে বলে পিনকোড হাতিয়ে নিতো।
গত ৩/৪ বছর ধরে অভিনব পন্থায় প্রতারণা চালিয়ে আসা একটি চক্রের ১২ সদস্যকে শনাক্ত করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এর মধ্যে মূলহোতা আশিকুর রহমানসহ (২৫) তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ মে) দিনগত রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মাতুয়াইল এলাকা থেকে আশিকুরকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মো. সাইফুল ইসলাম (৩০) ও মোক্তার হোসেন (৩৪) নামে আরো দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়।
বুধবার (২৫ মে) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর।
তিনি বলেন, প্রতারক চক্রের সদস্যরা গণহারে বিভিন্ন নাম্বারে ম্যাসেজ পাঠান। শিক্ষাবোর্ডের নামে ভুয়া নাম্বার দিয়ে যোগাযোগ করতে বলেন। কোনো শিক্ষার্থী বা অভিভাবক ফাঁদে পা দিলেই অর্থ খোয়া যেতো তাদের।
করোনার সময় উপবৃত্তির টাকা দেওয়া বন্ধ রাখা হয়। আর প্রতারকরা এই সুযোগে প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন অংকের টাকা তারা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়।
প্রতারণার কৌশল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চক্রের সদস্যরা প্রথমে দোকানে টাকা বিকাশ করার কথা বলে অবস্থান নেয়। কৌশলে বিকাশ গ্রাহকের লেনদেনের খাতার ছবি তুলে নেয় তারা।
পরের ধাপে তাদের কাজ পিন কোড সংগ্রহ করা। গ্রাহককে কল দিয়ে কথাবার্তার মাধ্যমে উপবৃত্তির যে পরিমাণ টাকা দেওয়া হবে মর্মে ঘোষণা দেওয়া হয়, তার সঙ্গে পাঠানো পিন কোডটি যোগ বা বিয়োগ করে সংখ্যাটি জানাতে বলা হয়। কিছু বুঝে উঠার আগেই গ্রাহকরা ফাঁদে পড়ে পিন কোডটি যোগ-বিয়োগ করে জানিয়ে দেয়। পরের ধাপে বিকাশ, নগদ বা রকেট অ্যাপস ব্যবহার করে টাকাগুলো বিভিন্ন জনের নাম্বারে সরিয়ে নেওয়া হতো।
ভুয়া এনআইডিতে নিবন্ধিত সিম প্রতারণায় ব্যবহার হচ্ছে উল্লেখ করে মুক্তা ধর বলেন, চক্রের দলনেতা আশিক মূলত ভুয়া এনআইডিতে রেজিস্ট্রেশন করা সিম কার্ডগুলো সংগ্রহ করেন। যে কারণে তাদের শনাক্ত করা কঠিন। এভাবে গত ২/৩ বছরে চক্রটি গ্রাহকদের ফাঁদে ফেলে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৭ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২২
পিএম/কেএআর