ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে ঝুঁকিতে সড়ক ও রেলসেতু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৯ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২২
অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে ঝুঁকিতে সড়ক ও রেলসেতু

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার গড়াই নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। প্রভাবশালীরা নিয়মের কোনো তোয়াক্কা না করে এসব বালু উত্তোলন করছেন।

 

কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের গড়াই নদীর ওপরের মীর মোশারফ সেতু ও রেল ব্রিজের পাশ থেকে অবৈধভাবে বালু তোলার কারণে ঝুঁকিতে রয়েছে সেতু দুটি। যা বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ এর ৪ নম্বর ধারার ‘খ’ উপধারায় স্পষ্ট লঙ্ঘন।

জেলা রাজস্ব বিভাগের তথ্যমতে, জেলার ২১টি বালু মহালের মধ্যে উল্লেখিত জয়নাবাদ, রাহিনীপাড়া ও ছেউড়িয়া মৌজাভুক্ত ৭১ একর জমির উপরিউস্থ ৬৬ লাখ টাকা সরকারি মূল্যমানের বালু মহালটি চলতি অর্থ বছরে কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি। গড়াই নদীর উপরিউস্থ রেল ও সড়ক সেতুর নিকটস্থ বালু মহাল থেকে যারা বালু উত্তোলন করছেন তা অবৈধভাবেই করছেন।

স্থানীয় ট্রলি চালক আমিরুল বলেন, প্রতিদিন এখান থেকে বেকু (এক্সাভেটর), বেলোটার দিয়ে সরাসরি ব্রিজের নীচ থেকে শত শত ড্রাম ট্রাক, ট্রলি ভরে দিচ্ছেন। প্রতি ড্রাম ট্রাক থেকে ১ হাজার ৭শ এবং ছোট ট্রলি প্রতি ২৫০ টাকা করে টোল নিচ্ছেন ইজারাদারের লোক।

কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিরুল ইসলামের অভিযোগ, কুষ্টিয়া রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের মীর মোশাররফ হোসেন সেতু সংলগ্ন নদীর মধ্য থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে সেতুটি চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে, এমন বিষয়টি জানিয়ে প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছি।

তিনি আরও বলেন, সরেজমিনে দেখে এসেছি সেখানে অন্তত ডজন খানেক এক্সাভেটর এবং বেলোটার (মাটিকাটা যন্ত্র) ব্যবহার করে ট্রাক ভর্তি করে দেওয়া হয়। যতদূর শুনেছি সাংবাদিক রাশেদ সাহেবরা ওখান থেকে বালু উত্তোলন করছেন। আইন না মেনে অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে এই বালু উত্তোলনের ফলে শত কোটি টাকার সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হলে এ অঞ্চলের সমগ্র যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর প্রভাব পড়বে।
যততত্র বালু উত্তোলনের ফলে ইতোমধ্যে নতুন নির্মিত শেখ রাসেল হরিপুর কুষ্টিয়া সংযোগ সেতু চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।

বালু উত্তোলনের কথা স্বীকার করে এসএম রাশেদ দাবি করেন, বালু মহালের ইজারা নিয়েই সেতুর ভাটি থেকে আমরা বালু তুলছি। আমাদের যেখানে দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে সেখান থেকেই বালু তুলছি। এতে সেতুর কিছু হবে না।

কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ‘জেলার মোট ২১টি বালু মহাল আছে ইজারাযোগ্য। এর মধ্যে চলতি অর্থ বছরে সবগুলি ইজারা দেওয়া হয়নি। যেগুলি ইজারা দেওয়া হয়েছে, এবং যারা ইজারা নিয়েছেন, তাদের আইনগত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০-এর বিধি অনুসরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।  

কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের মীর মোশাররক হোসেন সেতুটি জয়নাবাদ, রাহিনীপাড়া ও ছেউড়িয়া মৌজাভুক্ত ৭১ একর জমির বালু মহালের মধ্যে স্থাপিত। এই বালু মহালটি চলতি অর্থ বছরে কোনো ইজারা দেওয়া হয়নি। সেই সঙ্গে বিধি অনুযায়ী নদীর উপরিউস্থ সড়ক বা রেলসেতু যেখানে আছে সেখানে উজান এবং ভাটির এক হাজার মিটার বা এক কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে কোনোভাবেই বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। কেউ এই আইন অমান্য করে বালু উত্তোলন করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৭ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২২
আরএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।