ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

জলবায়ু ঝুঁকি হ্রাসে খুলনায় ৯ দফা দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৭ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২২
জলবায়ু ঝুঁকি হ্রাসে খুলনায় ৯ দফা দাবি

খুলনা: খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) ২টি বস্তি ও বটিয়াঘাটা উপজেলার জলমা ইউনিয়ন ৪টি গ্রামের খানাসমূহের ঝুঁকি’র তথ্য উপস্থাপন এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জলবায়ু ঝুঁকি হ্রাসে ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (২৩ মে) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের শহীদ সাংবাদিক হুমায়ুন কবির বালু মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

কোস্টাল ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপের (সিডিপি) উদ্যোগে এবং ব্রেড ফর দ্যা ওয়ার্ল্ডের আর্থিক সহায়তায় স্ট্রেংদেনিং পিপল’স একশন অন ক্লাইমেট রিস্ক রিডাকশন এন্ড এনার্জি এফিসিয়েন্সি (স্পেস) আওতায় এসব খানার তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিডিপির খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী এসএম ইকবাল হোসেন বিপ্লব।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন এনসিআরবির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শ্যামল সিংহ রায়, পরিবেশ সুরক্ষায় উপকূলীয় জোটের আহ্বায়ক এসএম শাহনওয়াজ আলী, খুলনা প্রেসক্লাবের যুগ্ম-সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মুন্না, সিডিপির এসএমএ রহিম, ইন্দিরা ভট্টাচার্য, মাহমুদা আক্তার লিজা প্রমুখ ।

স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জলবায়ু ঝুঁকি হ্রাসে ৯ দফা দাবিসমূহ: বিনা সুদে ও দীর্ঘমেয়াদী কিস্তিতে গৃহ ঋণের ব্যবস্থা করা যাতে খানার অবকাঠামো জলবায়ু সহিষ্ণু করা যায়; নিরাপদ ও সুপেয় পানি নিশ্চিতকরণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে; ম্যানগ্রোভ ফরেস্টেশনের মাধ্যমে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলতে হবে; লবণাক্তটা হ্রাসে উদ্ভাবনী কার্যক্রম নিতে হবে; এর পাশাপাশি লবণ সহিষ্ণু চাষাবাদের ব্যাপক প্রসার ঘটাতে হবে; শিক্ষা এবং কারিগরি শিক্ষার প্রসারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে; আয়বর্ধনমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া ও স্বল্প সুদে/বিনা সুদে ঋণ দিতে হবে; সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতা বৃদ্ধি এবং তা যথাযথ ব্যক্তিবর্গের প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে; জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার পাশাপাশি ভবিষ্যৎ জলবায়ু পরিবর্তন রোধে স্থানীয় পর্যায়ে স্বল্প-কার্বন উৎপাদনকারী উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। শীত মৌসুমে জলমা গ্রামের ভুক্তভোগীদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণের ব্যবস্থা নেওয়া।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিপদাপন্ন দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। পৃথিবীর বিপদাপন্ন দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। ১৯৯১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ১৯১টি জলবায়ুজনিত দুর্যোগ মোকাবিলা করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় জনগোষ্ঠীর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো পদ্ধতিগতভাবে ঝুঁকি নিরূপণ।

খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলাধীন জলমা ইউনিয়নের ৪টি গ্রাম (কচুবুনিয়া, দাউনিয়াফাঁদ, মাথাভাঙ্গা এবং জলমা) ৪টি গ্রামের ৬৩১টি খানায় এবং খুলনা সিটি করপোরেশনের ২৪ এবং ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন ২টি বস্তির (সিমকীর বস্তি এবং লবনচরা বস্তি) ১৫৫টির সবগুলো খানাকে এই জরিপের আওতায় আনা হয়। যেখানে ১৫৫টি খানার ২১ দশমিক ২৯ শতাংশ নারী প্রধান খানা এবং গ্রামগুলোর ৬৩১টি খানার ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ নারী প্রধান খানা। এসব গ্রামে খানাসমূহের মাসিক গড় আয় ৯ হাজার ৯৪১ টাকা। এর মধ্যে দাউনিয়াফাঁদ গ্রামে গড় আয় সবচেয়ে বেশি (১৩,০৯৬ টাকা) এবং কচুবুনিয়া গ্রামে গড় আয় সবচেয়ে কম (৬,১২৩ টাকা)। বস্তি দু’টির খানাসমূহের মাসিক গড় আয় ১০ হাজার ৪১৯ টাকা। এর মধ্যে সিমকী বস্তিতে গড় আয় বেশি (১৩,৬৫৫ টাকা) এবং লবনচরা বস্তিতে গড় আয় কম (৮,৬৪০ টাকা)। জরিপের প্রাপ্ত তথ্যমতে শিক্ষার দিক দিয়ে গ্রামগুলো যথেষ্ট পিছিয়ে আছে। ১৭ দশমিক ১ শতাংশ গ্রামবাসী এখনো নিরক্ষর। শুধুমাত্র স্বাক্ষর করতে পারে ১৯ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্যদিকে, বস্তিতে নিরক্ষরতার হার ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ এবং স্বাক্ষরতার হার গ্রাম থেকে বেশি (৩২.৯%)।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৭ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২২
এমআরএম/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।