ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

হুমকির মুখে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা

ভাঙনে দিশেহারা তেঁতুলিয়া পাড়ের মানুষ

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৪ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২২
ভাঙনে দিশেহারা তেঁতুলিয়া পাড়ের মানুষ

ভোলা: বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই  ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে ভোলার তেঁতুলিয়া নদী। ভেদুরিয়া লঞ্চঘাট এলাকা থেকে চর চটকিমারা খেয়াঘাট পর্যন্ত সাড়ে ৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে শুরু হয়েছে নদীভাঙন।

 এরই মধ্যে বিলীন হয়ে গেছে শতাধিক ঘরবাড়ি, বিস্তীর্ণ ফসলের ক্ষেতসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।   হুমকির মুখে রয়েছে একটি মডেল মসজিদ, ২টি বাজার, একটি গ্যাস কূপ, একটি টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, লঞ্চঘাট ও হাজারো ঘড়বাড়ি।
 
এদিকে  ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন শেষে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।

সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে ভোলা সদরের ভেদুরিয়া ইউনিয়নের লঞ্চঘাট, চর চটকিমারা ও মাঝিরহাট পয়েন্টসহ বিভিন্ন এলাকা দিয়ে তেঁতুলিয়ার ভাঙন চললেও কোনো বাবস্থা নেওয়া হয়নি। এতে বহু মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। নদীভাঙন থেকে রক্ষায় কয়েকবার মাববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করেছেন এলাকাবাসী। এ বছরও শুরু হয়েছে ভাঙন। লঞ্চঘাট ও চর চটকিমারা পয়েন্টে ভাঙনের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি।  

এলাকাবাসী আরও জানান, এ বছরও বর্ষা শুরুতেই তেঁতুলিয়ার ভাঙন তীব্র রূপ নিয়েছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন নদীর পাড়ের বাসিন্দারা। এরই মধ্যে বিস্তীর্ণ এলাকা তেঁতুলিয়ার গর্ভে চলে গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মনজু ইসলাম জানান, গত এক মাস ধরে নদীভাঙন চলছে। এভাবে চললে ভেদুরিয়াকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।

চর চটকিমারা এলাকার বাসিন্দা তছির আহমেদ বলেন, এ পর্যন্ত ৭ বার বাড়িঘর ভেঙেছে, এখন ৮ম বারের মতো ভাঙনের মুখে রয়েছি। কোথায় যাব তার কোনো ঠিক ঠিকানা নেই।

একই এলাকার বাসিন্দা মো. ইউসুফ বলেন, আমাদের বাড়িতে ১৪টি ঘর ছিল, নদী ভাঙনের কারণে ১০টি পরিবার অন্যত্র চলে গেছে, আমার ঘরটাও ভাঙনের মুখে। কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।


ভেদুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বলেন, আমার ইউনিয়নে ভয়াবহ ভাঙন চলছে। এরই মধ্যে শতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে রয়েছে বহু স্থাপনা।

এদিকে ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় গত রোববার  (২২ মে বিকালে) ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছে পাউবো ও উপজেলা প্রশাসনের একটি প্রতিনিধি দল। ভাঙনের ভয়াবহতা দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তারা।

ভোলা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা জানতে পেরেছি অনেকদিন ধরে ভেদুরিয়া ইউনিয়নে নদীভাঙন চলছে।   স্থানীয় সংসদ সদস্য (ভোলা-১) তোফায়েল আহমেদ এবং জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে বেশ কয়েকটি স্পটে ভাঙন দেখতে পেয়েছি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাউবোকে বলা হয়েছে।

এ ব্যাপারে ভোলা পাউন্নবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান জানান, ভাঙন কবলিত এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখেছি। ভাঙন রোধে দ্রুত  ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে তেঁতুলিয়ার ভাঙন থেকে ঐতিহ্যবাহী ভেদুরিয়াকে দ্রুত রক্ষার দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৪ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।