ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

প্রধান সড়কগুলোতে হাট-বাজার, দুর্ঘটনা বাড়লেও নেই হেলদোল!

জুলফিকার আলী কানন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৫ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২২
প্রধান সড়কগুলোতে হাট-বাজার, দুর্ঘটনা বাড়লেও নেই হেলদোল! ফাইল ফটো

মেহেরপুর: প্রধান সড়ক ঘেঁষে প্রায় ২৫টিরও অধিক হাট বসে মেহেরপুর জেলায়। মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কটি ৫৮ কিলোমিটার।

এর মধ্যে মেহেরপুরের অংশে রয়েছে প্রায় ২৫ কিলোমিটার।

মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক সড়কের দু’পাশে গোপালপুর, মদনাডাঙ্গা, গাঁড়াডোব রাইসমিল পাড়া, বাঁশবাড়িয়া, গাংনী, চেংগাড়া, জোড়পুকুরিয়া, তেরাইল, ছাতিয়ান, বাওট, আকুবপুর বসে বড় বড় হাট বাজার। আঞ্চলিক এই মহাসড়কটিতে দ্রুতগতির যান চলাচলে নিয়মিত ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। প্রতিনিয়তই প্রাণহানি আর পঙ্গুত্ব বরণ করছে মানুষ।

মহাসড়কের পাশ ঘেঁষে বড় বাজার রয়েছে মেহেরপুর বাজার। যেখানে সপ্তাহের শুক্রবার-মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সড়কে থাকে মানুষের জটলা। দূরপাল্লার পরিবহনের কারণে প্রায় এখানে থেমে চলতে হয়। এই এলাকায় ইতোপূর্বে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা যায়।

ট্রাকের ড্রাইভার ঝন্টু ফকির, ইন্তাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, মেহেরপুর থেকে বিভিন্ন সবজি বোঝায় করে প্রতিদিনই অর্ধশতাধিক ট্রাক নিয়ে চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া দিয়ে ঢাকার পথে যেতে হয়। কিন্তু মেহেরপুর বাজারে এসে ঝামেলা তৈরি হয়। মানুষ পথ ছাড়তে চায় না। এছাড়া গাংনী, পুড়াপাড়া, বাঁশবাড়িয়া, বাওট বাজার তো পুরো সড়কের উপরে বসে। এতো প্রতিবন্ধকতা নিয়ে যেকোনো সময় দুর্ঘটনায় পড়তে হয়।

মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের আমঝুপি, বারাদী, দরবেশপুর প্রতিদিনই কোনো না কোনো স্থানে হাট বসে। মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা প্রধান সড়কের ওপরে। এনিয়ে ছোটবড় দুর্ঘটনা নিয়মিতই ঘটে বলে জানান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

১৭ কিলোমিটর দূরত্ব মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়কের উপর চকশ্যামনগর, মোনাখালি, দারিয়াপুর, পুরন্দরপুর, কেদারগঞ্জ মোড়ে সপ্তাহের প্রতিদিনই একেক হাট একেকদিন বসে।

ঠান্টু মিয়া ও আসাদুজ্জামান নামের কাঁচাবাজার ব্যবসায়ীরা জানান, রাস্তায় বসে ব্যবসা করতে মন চাইনা। এখানে জীবনের নিরাপত্তা থাকেনা। রাস্তার ওপর হাট বাজার বসানোর কারণে এখানে যানজট হয়, কিন্তু জিনিস তো বিক্রি করতে হবে।

মেহেরপুর জেলার এই তিনটি সড়কে প্রতিবছর কয়েক শত প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। শুধু রাস্তা পারাপার হতে গিয়েই অনেক মানুষ মারা যান বলে জানান গাংনী শহরের বাসিন্দা আজিজুল হক রানু। তিনি বলেন, গাংনী শহরসহ মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে রাস্তার দু’পাশে হাট বসার কারণে প্রচুর ভিড় হয়। হাটের দিন মানুষ রাস্তা পার হতে গিয়ে অনেকে গাড়ি চাপায় পড়েন।

মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের শহরের মধ্যে মেহেরপুর হাট, আমঝুপি, বারাদী, দরবেশপুরে রাস্তার জায়গাতেই হাট ও বাজার রাস্তার দু’পাশ দিয়ে। ফলে ব্যস্ত এই সড়কটি যেন হাটবাজারের এক মৃত্যু ফাঁদ, জানিয়েছেন স্থানীয়রা।  

খলিলুর রহমান নামে স্থানীয় এক শিক্ষক বাংলানিউজকে জানান, মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কটি এতো ব্যস্ত সড়ক। এই সড়কে প্রতিদিন শতশত ভারী যান চলাচল করে। এখানে রাস্তা পার হওয়া খুব কঠিন। বাজার এলাকায় প্রতি মাসেই নিয়মিত দুর্ঘটনা ঘটে।

মেহেরপুর জেলা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) ফেরদৌস বাংলানিউজকে জানান, মহাসড়ক ঘেঁষে কোনো হাটবাজারই বৈধ নয়। এমনকি যেকোনো সড়কে মানুষের বেশি সমাগমই নিষিদ্ধ। এতে যান চলাচল ব্যাহত হয় সেই সঙ্গে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা শতভাগ থাকে। আমরা চেষ্টা করি এসব এলাকার মানুষকে সচেতন করতে। যেন তারা রাস্তা বাদ দিয়ে হাটবাজার বসান এবং চলাচল সাবধানে করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৯ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।