সাভার, (ঢাকা): সাভারের আশুলিয়া এলাকায় টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কটির বেহাল অবস্থা। বছরের পর বছর ধরে অনুন্নত সড়কটিতে মাঝে মধ্যে রাবিশ (বর্জ্য) ফেলে সংস্করণ করা হয়, তাও নামে মাত্র।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই সড়কটি হাঁটু পানি জমে। ফলে ছোট ছোট গর্তে রিকশার চাকা পড়ে ঘটে দুর্ঘটনা। সিএনজি-মোটরসাইকেল আরোহীদেরও পোহাতে হয় ব্যাপক ভোগান্তি। কয়েকদিন পর্যন্ত পানি জমে থাকায় প্রাইভেট কার, মাইক্রো ও বাসযাত্রীদেরও সমস্যায় পড়তে হয়।
মঙ্গলবার (১৭ মে) সকালে আশুলিয়া ইউনিয়নের টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড বৃষ্টি হয়েছিল। এতে জামগড়া এলাকা পর্যন্ত সড়কটিতে পানি জমে যায়। দূর থেকে দেখে সড়কটিকে নদীর মতো মনে হচ্ছিল।
দুপুর একটার দিকে ইপিজেড এলাকার গার্মেন্টসকর্মীদের খাবারের বিরতি হয়। এ সময় শ্রমিকরা করাখানা থেকে নিজ নিজ বাড়ি যাচ্ছিলেন। সড়কের পানি থাকায় বাধ্য তা মাড়িয়ে নিজ গন্তব্যে যেতে হচ্ছিল তাদের। এ সময় অনেকের পরনেরর পোশাক ভিজে যায়। সড়কের ছোট-বড় গর্তে পড়ে বিভিন্ন পরিবহন আটকে যেতে দেখা গেছে। সড়কের দুপাশে থাকা দোকানগুলোর মেঝে পর্যন্ত পানিতে ডুবে যায়।
জামগড়া এলাকায় মেসার্স আর আর স্টিল ফার্নিচারের কর্মী রফিকুল আলম জানান, বৃষ্টি হলে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কে পানি জমা নতুন ঘটনা নয়। বৃষ্টি না থাকলেও ড্রেনের পানি ওঠে। বৃষ্টি হলে দোকানের ফার্নিচার তুলে রাখতে হয়। গত ৫-৭ বছর ধরে এ অবস্থা দেখে আসছেন তিনি। বর্ষাকালে তাদের ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয়। সামনে বর্ষা, কীভাবে তারা এ সময় পার করবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন দোকান মালিক।
বিভিন্ন পরিবহনের চালক-হেলপারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাস্তার কোথায় গর্ত আছে, কোথায় নেই- পানি জমে থাকায় সে ব্যাপারে তারা ধারণা করতে পারেন না। পানির কারণে ঠিকমতো যাত্রীও তুলতে পারেন না। জোরে চালাতেও পারেন না কারণ, রাস্তার পাশে দোকানে বা বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন গালাগাল দেয়।
পোশাক কারখানার শ্রমিকরা জানালেন, প্রতিদিন এ সড়কটি দিয়ে তাদের যাতায়াত করতে হয়। সড়কে ওঠার পর তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বছরের পর বছর। এ দুর্ভোগ দেখার মতো কেউ নেই বলেও তারা মন্তব্য করেন। অনেকে আবার জানান, এ সড়কে ঠিকভাবে গণপরিবহন পাওয়া যায় না। গেলেও বাড়তি ভাড়া গুনতে হয় তাদের। বর্তমান অবস্থা এমন সামনের বর্ষাকালে নৌকা দিয়ে যাতায়াত করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন অনেকে।
জানা গেছে, বছর খানেক হলো সড়ক ও জনপথ টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কটি ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাছে হস্তান্তর করেছে। এরপর থেকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প সড়কটির দেখভালের দ্বায়িত্বে রয়েছে।
এ ব্যাপারে কথা হলে প্রকল্প পরিচালক মো. সাহবুদ্দিন খান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা পানি নিষ্কাশনের জন্য অনেক দিন থেকেই চেষ্টা করছি। এ সড়কের পানি একমাত্র বের হওয়ার জায়গা হচ্ছে নয়নজুলি খাল। কিন্তু খালটি এখন মৃতপ্রায়। তাই অল্প বৃষ্টি হলেই পানি জমতে শুরু করে সড়কে। এছাড়া বৃষ্টি হলে সড়কের দুই পাশে থাকা কারখানাগুলো তাদের ময়লা পানি রাস্তায় ছেড়ে দেয়। পানি গড়াতে না পেরে রাস্তায় জমে থাকে। তারা এ দুর্ভোগ লাঘবে চেষ্টা করছেন। দ্রুতই কোনো সমাধান পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২২
এসএফ/এমজে