ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

টিটিই শফিকুল বললেন, ‘সত্যের জয় হয়েছে’

ডিষ্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৩ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২২
টিটিই শফিকুল বললেন, ‘সত্যের জয় হয়েছে’ টিটিই শফিকুল ইসলাম

পাবনা: রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের আত্মীয় পরিচয়ে বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণ এবং এ ঘটনায় যাত্রীদের জরিমানা করার ঘটনায় সম্পূর্ণ নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) শফিকুল ইসলাম। এতে সত্যের জয় হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সোমবার (১৬ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল পাকশী বিভাগী ব্যবস্থাপকের কাছে শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে আনা অসদাচরণের অভিযোগ তদন্তের প্রতিবেদন জমা দেয় তিন সদস্যের কমিটি। পরে কমিটির প্রধান বিভাগীয় সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম অন্য দুই সদস্য সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী শিপন আলী ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বিভাগের সহকারী কমান্ডেন্ট আবু হেণা মোস্তফার উপস্থিতিতে টিটিই শফিকুলকে নির্দোষ বলে ঘোষণা দেন বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক শাহিদুল ইসলাম। এরপর বিষয়টি নিয়ে সঙ্গে কথা হলে সত্যের জয় হয়েছে বলে মন্তব্য করেন শফিকুল।

ট্রেনের এ টিটিই বলেন, আমার নিজের প্রতি বিশ্বাস ছিল। আমি কোনো অন্যায় কাজ করিনি। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা।

এ সময় খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের (৭২৫ নম্বর) গার্ড শরিফুলের সঙ্গে কিছুই হয়নি বলে জানান টিটিই শফিকুল। আগামী দিনেও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন বলে তিনি জানান।

এর আগে তদন্ত প্রতিবেদন হতে পেয়ে গণমাধ্যমকে শাহিদুল ইসলাম বলেন, তদন্তে টিটিই শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগের কোনো ভিত্তি পাওয়া যায়নি। আনিত অভিযোগ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, তদন্তে উঠে এসেছে ট্রেনের গার্ড শরিফুল ইসলাম ওই যাত্রীকে দিয়ে টিটিই শফিকুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে উস্কানি দিয়েছিলেন। কোনো কারণে টিটিই শফিকুলের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন শরিফুল। তার বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।

এ ঘটনায় রেলমন্ত্রীর স্ত্রী বা তার মামাতো বোনের কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল কিনা জানতে চাইলে সাংবাদিকদের বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক বলেন, ট্রেনের মধ্যে যাত্রীর সঙ্গে টিটিই শফিকুলের খারাপ আচরণ করেছেন, এমন অভিযোগ ছিল। শুধু এ বিষয়টিতেই তদন্ত করা হয়েছে। এর বাইরে কোনো বিষয় আনা হয়নি। আর তদন্তে অভিযোগকারী বা অভিযুক্ত ব্যক্তিসহ কারো বক্তব্যে এ বিষয়ে কোনো কথা বা অভিযোগ উঠে আসেনি।

তদন্ত কমিটির প্রধান বিভাগীয় সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম বলেন, মূল প্রতিবেদন ৭ পৃষ্ঠার সঙ্গে আরও চল্লিশ পৃষ্ঠার তথ্য উপাত্ত যুক্ত করা হয়েছে। তদন্তে শফিকুলের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি। অভিযোগকারী ট্রেনযাত্রী ইমরুল কায়েস প্রান্তের তোলা অভিযোগ সঠিক ছিল না। প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তাকে রেলওয়ে বিভাগীয় কার্যালয়ে এসে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ৫ মে বৃহস্পতিবার রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে বিনা টিকিটে ভ্রমণরত তিন যাত্রীকে জরিমানাসহ ভাড়া আদায় করেন টিটিই শফিকুল ইসলাম। পরে রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর ফোনে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন পাকশী বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) নাসির উদ্দিন। এ ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ও পাকশী রেল বিভাগ বখাস্ত করা শফিকুল ইসলামকে স্বপদে কাজে যোগদানের নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। ১০ কার্যদিবসে প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি। শফিকুলকে বরখাস্তকারী ডিসিও নাসির উদ্দিনকে বিচার বিশ্লেষণ না করেই কেন এ সিদ্ধান্ত নেন, সে কারণ দর্শাতে শোকজ করা হয়। আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তাকে কারণ দর্শাতে হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, ১৬ মে, ২০২২
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।