ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রাস্তা তো নয়, যেন ধান শুকানোর চাতাল!

মো. আমিরুজ্জামান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৪ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২২
রাস্তা তো নয়, যেন ধান শুকানোর চাতাল!

নীলফামারী: নীলফামারীর সড়ক-মহাসড়কগুলো যেন ধান ও খড় শুকানোর চাতালে পরিণত হয়েছে। আর এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

এ চিত্র হরহামেশাই দেখা যাচ্ছে নীলফামারী সদর, সৈয়দপুর, জলঢাকা, ডিমলা, কিশোরগঞ্জ ও ডোমার উপজেলার প্রায় প্রতিটি সড়কে। গ্রামীণ পাকা রাস্তারও একই হাল।

বিষয়টি নিয়ে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পথচারী ও যানবাহন চালকরা।

পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে দুর্ঘটনার শিকার এক দম্পতির ভাষ্য, তারা স্বাভাবিক গতিতে মোটরসাইকেলে করে সৈয়দপুর শহর থেকে সোনাখুলিতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সড়কে শুকাতে দেওয়া খড়ে মোটরসাইকেল পিছলে অনেকটা দূরে ছিটকে পড়ে যান তারা। গতি কম থাকায় স্বামী-স্ত্রীর তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি, একটু ছুলে গেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে নীলফামারী-সৈয়দপুর মহাসড়কের ঢেলাপীর এলাকায়। সড়কে ধান-খড় শুকানোর কারণে এমন ঘটনা যেন এখন নিত্যদিনের সঙ্গী।

নীলফামারীর বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরে দেখা যায়, সৈয়দপুর-নীলফামারীর ১৫ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে ধান শুকানো হচ্ছে। এছাড়া ওই সড়কেই আবার অনেক জায়গায় চলছে খড় শুকানো ও মাড়াইয়ের কাজ। এতে সড়কটি আরও সংকুচিত হয়ে পড়েছে। অথচ সড়কটিতে নিয়মিতই চলছে দ্রুতগতির যানবাহন। আর সংকুচিত হওয়ায় বেশি ঝুঁকিতে পড়েছেন মোটরসাইকেল চালকরা।

ট্রাফিক বিভাগ বলছে, সৈয়দপুর-নীলফামারী সড়কে প্রতিদিন অন্তত ১০ হাজার যানবাহন চলাচল করে। সড়কটিতে উত্তরা ইপিজেড, ভারী শিল্প কারখানা, স্কুল-কলেজ, বিজিবি ক্যাম্প ও বেশ কিছু বাজার রয়েছে। এজন্য স্বাভাবিকভাবেই ব্যস্ত থাকে সড়কটি। আর ব্যস্ততম এ সড়কটিকে আশপাশের কৃষকরা যেন চাতাল বানিয়ে ছেড়েছেন। ফলে শঙ্কা দেখা দিয়েছে ভয়াবহ দুর্ঘটনার।

সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা রোস্তম আলী জানান, সড়কে শুকাতে দেওয়া খড়ে পিছলে গিয়ে নিয়মিতই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটছে।

সৈয়দপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অঞ্জনী রানী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বাইক চালিয়ে প্রতিদিন স্কুলে যাই। সৈয়দপুর-নীলফামারী সড়কে ধান শুকানোর কারণে আমাদের চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

কেবল সৈয়দপুর-নীলফামারী মহাসড়কই নয়, সৈয়দপুর-পার্বতীপুর, সৈয়দপুর-দিনাজপুর, সৈয়দপুর-রংপুর মহাসড়কসহ উপজেলার আঞ্চলিক সড়কগুলোতেও চলছে ধান শুকানো-মাড়াইয়ের মচ্ছব। এসব সড়ক যেন এখন কৃষকদের দখলে।

সৈয়দপুর ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক (টিআই) নাহিদ পারভেজ বাংলানিউজকে জানান, সবগুলো সড়কেই ধান শুকানো চলছে। তাদের বাধা দিয়েও কাজ হচ্ছে না।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের এ ব্যাপারে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। সেই সঙ্গে প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ করেন তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২২
এফআর/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।