ঢাকা, সোমবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ মে ২০২৪, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পেঁপে-চালকুমড়া কেজিতে, জিলাপি পিস দরে বিক্রি

এইচ এম নাঈম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৮ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২২
পেঁপে-চালকুমড়া কেজিতে, জিলাপি পিস দরে বিক্রি

ঝালকাঠি: 'কী যে হবে ভবিষ্যতে, উল্টো পথে উল্টো মতে চলছি সবাই উল্টো রথে। ফলশূন্য হয়েছে তরু নদী হলো মধুময়, মেঘনার বুকে চলবে গাড়ি সেদিন বেশি দূরে নয়।

' নকুল কুমার বিশ্বাসের এ গানটি যেন এখন হাটে বাজারে পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে যথোপযোগী হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শুক্রবার (১৩ মে) ঝালকাঠি সদর উপজেলার ছত্রকান্দা সাপ্তাহিক বাজারে দেখা গেছে বেচা-বিক্রির উল্টো চিত্র। পেঁপে ও চালকুমড়া বিক্রি হচ্ছে কেজিতে আর জিলাপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস হিসেবে। বিক্রির এমন উল্টো নিয়মে ক্রেতাদের সঙ্গে বিক্রেতার বাগবিতণ্ডাও হয়েছে অনেক।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ছত্রকান্দা ব্রিজের উত্তর-পূর্ব দিকে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি ও পাকা পেঁপের পসরা সাজিয়ে বসেছেন রানা নামের এক ব্যবসায়ী। তার কাছে পানি কচু, কাঁচা কলা, লাউ শাক, কলমি শাক, পুঁই শাক, চালকুমড়া ও কাঁচা-পাকা পেঁপেও রয়েছে। চালকুমড়া ও পেঁপে কেজি দরে বিক্রি করলেও অন্যান্য সবজি আন্দাজ করে দাম রেখে বিক্রি করছেন। চালকুমড়া ও কাঁচা পেঁপে কেজি প্রতি দর ৪০ টাকা আর পাকা পেঁপে ১০০ টাকা কেজিদরে দাড়িপাল্লায় ওজন দিয়ে বিক্রি করছেন।

আবার কোনো ক্রেতা প্রয়োজন অনুযায়ী ২০০ গ্রাম বা আধাকেজি নিতে চাইলে সেভাবে বিক্রি করছেন না। একটি চালকুমড়া বা পেঁপে ওজন দিয়ে পুরোটাই নিতে হচ্ছে।

পেঁপে বা চালকুমড়া পিস হিসেবে কৃষকের কাছ থেকে কিনে সেটি ক্রেতাদের কাছে কেজিদরে বিক্রি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।

বিক্রেতা রানা জানান, চালকুমড়া ও পেঁপে প্রতি পিস ওজনে যা হবে তাই নির্ধারিত দাম দিয়ে নিতে হবে। ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী ওজনে বিক্রি করা হয় না। এমন ব্যবসা শুধু আমিই করি না, আরও অনেক ব্যবসায়ী এমনভাবেই বিক্রি করছেন। পিস হিসেবে বিক্রি করলে ক্রেতার সঙ্গে দর কষাকষি করতে হয়। কিন্তু ওজনে বিক্রি করলে সহজেই বিক্রি করা যায়।

এদিকে দোকানটির পাশেই একটি ভ্রাম্যমাণ ভ্যানে বিক্রি করতে দেখা যায় চটপটি, রান্না ছোলাবুট ও জিলাপি। সবখানে জিলাপি কেজিদরে বিক্রি হলেও এ দোকানে বিক্রি হচ্ছে প্রতিপিস ১০ টাকা দরে। আর ওজনে নিতে চাইলে দাম হাঁকা হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি। যেখানে ঝালকাঠির অন্যান্য দোকানে বিক্রি হয় ১২০ টাকা দরে।

পরিচয় না দিতে চেয়ে ওই দোকানি জানান, রমজান মাসে এ গাড়িতে ইফতার সামগ্রী বিক্রি করেছি। তখন জিলাপির পিস ১০ টাকা করে বিক্রি হতো। এখনও সেই দরেই বিক্রি চলছে। যদি কেউ ওজনে নিতে চান তবে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হবে।

বিক্রির এমন ভিন্ন নিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যার মনে চাইবে কিনবে, মনে না চাইলে চলে যাবে। কারো কাছে জোর করে বিক্রি করি না।

বাজারে বিভিন্ন ক্রেতারা জানান, দেশটা যেন মগের মুল্লুক হয়ে গেছে। বড় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি করছেন। এখন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও মন মতো দাম রেখে পণ্য বিক্রি করছেন। ক্রেতারা যেন ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানান ক্রেতারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৬ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২২
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।