ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

চালুর প্রহর গুনছে স্বপ্নের রূপসা রেলসেতু!

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৪ ঘণ্টা, মে ৪, ২০২২
চালুর প্রহর গুনছে স্বপ্নের রূপসা রেলসেতু! রূপসা রেলসেতু

খুলনা: স্বপ্নের রূপসা রেলসেতুর ৯৮ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। নানা প্রতিকূলতা কাটিয়ে এখন একেবারে শেষের পথে রেলসেতুর নির্মাণকাজ।

দেশের দীর্ঘতম রূপসা রেলসেতু এখন চালুর প্রহর গুনছে।

প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের দক্ষিণের অন্যতম মেগা প্রজেক্ট ছিল রূপসা রেলসেতুর নির্মাণকাজ। কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনায় আশা করা হচ্ছে চলতি বছর জুনেই দেশের দীর্ঘতম এই রেলসেতুর উপর দিয়ে চলবে ট্রেন। এই সেতু ঘিরে ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পাশাপাশি সুন্দরবনের পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা বাড়বে।  

এ সেতু চালু হলে মোংলা বন্দরের ব্যবহার বাড়বে। সেতু বাস্তবায়নে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শিল্পায়নসহ অর্থনৈতিক কার্যক্রম বৃদ্ধি পাবে। যা জাতীয় অর্থনীতিতে যুক্ত হবে। ভাগ্য খুলবে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির। সেতু চালু হলে অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়নের অনেক দ্বার খুলবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খুলনা-মোংলা রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে কম খরচে ভারত, নেপাল ও ভুটানে মালামাল পরিবহন সহজ হবে। বিভিন্ন স্থান থেকে দেশি-বিদেশি পর্যটকরাও সহজে সুন্দরবন ভ্রমণ করতে পারবেন।

নির্মাণাধীন রেলসেতুর পশ্চিম পাড় (খুলনা সাইড) বটিয়াঘাটা উপজেলার পুটিমারী ও পূর্ব পাড় খারাবাদ (মোংলা সাইড) এলাকায় দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এসে সেতু দেখছেন।  

দীর্ঘদিনের লালন করা স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। অধরা স্বপ্ন বাস্তবায়ন দেখে বেজায় খুশি খুলনাঞ্চলের মানুষ।  

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পটির কাজ ৩টি ভাগে বিভক্ত। এর একটি রূপসা নদীর ওপর রেলসেতু, অপরটি রেললাইন এবং অন্যটি টেলিকমিউনিকেশন ও সিগন্যালিং। প্রকল্পের আওতায় লুপ লাইনসহ রেলওয়ে ট্র্যাকের দৈর্ঘ্য ৮৬ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ। রূপসা নদীর উপরে যুক্ত হচ্ছে ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার রেল সেতু।  

এছাড়া ২১টি ছোটখাটো ব্রিজ ও ১১০টি কালভার্ট নির্মাণ এবং খুলনার ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত ৮টি স্টেশন নির্মাণের কাজ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লারসেন অ্যান্ড টুব্রো রূপসা নদীর ওপর রেলসেতুর নির্মাণকাজ করছে। বাকি কাজ করছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ইরকন ইন্টারন্যাশনাল। জমি অধিগ্রহণ, রেললাইন ও রেলসেতু নির্মাণসহ সমগ্র প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ৩ হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এই রেলসেতুটি হবে দেশের দীর্ঘতম রেলসেতু। ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন করে। ২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর রূপসা রেলসেতুর পাইলিংয়ের কাজের উদ্বোধন করেন রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন।

সেতুর অগ্রগতি সম্পর্কে রূপসা রেলসেতুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশন ম্যানেজার সুব্রত জানা বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পের সার্বিক ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৯৮ শতাংশ। চলতি বছরের জুনের মধ্যে কাজ শেষ হবে। রেলসেতুর ভায়াডাক্টের ৮৫৬টি পাইলের মধ্যে সব কয়টি, পাইল বেস-গ্রাউটিং ৮৫৬টির সব কয়টি, পাইল ক্যাপ ১৩৬টির মধ্যে সব কয়টি, পিয়ার ১৩৬টির মধ্যে সব কয়টি, স্প্যান ইর‌্যাকশান ১৩৬টির সবকয়টি এবং ব্যাক স্লাব ১৩৬টির মধ্যে সবকয়টির কাজ শেষ হয়েছে। এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মূল সেতুর পাইল ৭২টির মধ্যে সবকয়টি, পাইল ক্যাপ ৮টির মধ্যে ৫টি, বিয়ারিং ২৮টির মধ্যে ১২টি সম্পন্ন হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮২০ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০২২
এমআরএম/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।