ঢাকা, বুধবার, ৩১ চৈত্র ১৪৩১, ১৫ মে ২০২৪, ০৬ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ন্যায্য মজুরির জন্য আর কত অপেক্ষা নারীদের?

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২২
ন্যায্য মজুরির জন্য আর কত অপেক্ষা নারীদের?

বরিশাল: একযুগ আগেও একজন পুরুষ শ্রমিকের মজুরি ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা। গত কয়েক বছরে তা বেড়েছে তিনগুণের বেশি।

বর্তমানে একজন পুরুষ শ্রমিক মজুরি পাচ্ছেন ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। কিন্তু নারী শ্রমিকদের ক্ষেত্রে চিত্রটা ভিন্ন। একই কাজ করে তারা পাচ্ছেন ২০০ থেকে ৩০০ টাকা।

ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হওয়ার এই চিত্রটা বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার। সেখানে পুরুষ শ্রমিকদের সমান কাজ করেও বঞ্চিত হতে হচ্ছে নারীদের। অথচ দেশে প্রতিবছরই নারী অধিকার, মজুরিসহ নানা বিষয়ে সমঅধিকার নিয়ে অনেক সভা-সেমিনার হয়ে থাকে। কিন্তু মজুরি বৈষম্য কমেনি। পুরুষ শ্রমিকের সমান কাজ করেও অর্ধেক মজুরি পান নারী। মজুরি নিয়ে এই বৈষম্যের বিষয়ে প্রতিবাদ করেও ইতিবাচক ফল মিলছে না।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগৈলঝাড়ার নারী শ্রমিকরা ঘরের কাজের বাইরে গিয়ে জমিতে ধান চাষ, ইট-পাথর ভাঙা ও টানা, মা‌টি কাটা, দোকানে পা‌নি সরবরাহ, নির্মাণ শ্রমিকসহ দিনমজুরের কাজ করে অভাব ও ক্ষুধা থেকে মুক্তি পাওয়ার ‌চেষ্টা চা‌লিয়ে যাচ্ছেন। তবে হাড় ভাঙা পরিশ্রমের পরেও অন্য পুরুষ শ্রমিকদের তুলনায় কম মজুরি পাচ্ছেন তারা। এতে অতি কষ্টে জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন নারী শ্রমিকরা।

স্থানীয় সূত্র বলছে, আগৈলঝাড়ায় অনেক নারী শ্রমিক কৃষি কাজে জড়িত রয়েছেন। তারা ক্ষেতে ধান রোপণ, নিড়ানি, এমনকি ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজেও অবদান রাখছেন। কাজে ফাঁকি না দেওয়া ও কম মজুরির কারণে উপজেলার বেশ কিছু ইউনিয়নে নারী শ্রমিকদের চাহিদা পুরুষদের তুলনায় অনেক বে‌শি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারী নেত্রী সুমা কর বাংলানিউজকে বলেন, পুরুষশাসিত সমাজে তাল মিলিয়ে সমান কাজ করলেও নারীরা মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। অথচ প্রতিবছর শ্রমিক দিবস, নারী দিবস পালিত হয়। সকল কাজে নারী-পুরুষের সমঅধিকারের বলা হয়। কিন্তু ন্যায্য মজুরির বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না।

জরিনা বেগম নামে এক নারী শ্রমিক বাংলানিউজকে বলেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাজারে পানি টানার কাজ করি। পাই ৪০-৪৫ টাকা। প্রতি কলসি পানিতে ২ টাকা মজুরি দেওয়া হয়। জীবন বাঁচানোর তাগিদে এবং বাচ্চাদের ‍মুখে খাবার তুলে দিতে এই কাজ করছি।

ইট-পাথর ভাঙার কাজ করেন কাকলী ঘরামী। তিনি বলেন, ঠিকাদাররা ইট-পাথর ভাঙার জন্য প্রতিফুট হিসেবে টাকা দেয়। এতে প্রতিদিন গড়ে ৯০-১০০ টাকার কাজ করা যায়। এই আয়ে নিত্যপণ্য কেনা সম্ভব হয় না।

স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত নারী শ্রমিকরা জানান, তারা সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কাজ করেও ২০০-২৫০ টাকার বেশি আয় করতে পারেন না। একদিকে মজুরি বৈষম্য অন্যদিকে নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি। সব মিলিয়ে হাঁপিয়ে উঠেছেন নারী শ্রমিকরা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২২
এমএস/এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।