ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রেলে যুক্ত হলো ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর ও ৪৬টি নতুন ইঞ্জিন 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২২
রেলে যুক্ত হলো ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর ও ৪৬টি নতুন ইঞ্জিন  ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর’, ৩০টি মিটারগেজ ও ১৬টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভের (ইঞ্জিন) উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ১১টায় রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনলাইনে যুক্ত হয়ে এগুলো উদ্বোধন করেন।

এ সময় কমলাপুর স্টেশনে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজনসহ মন্ত্রণালয় ও রেলপথ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সশরীরে উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যেকোনো দুর্যোগেও রেল এখন সেবা দিয়ে যাচ্ছে। মানুষ পরিসেবার ক্ষেত্রে রেলকেই এখন প্রথম পছন্দ হিসেবে রাখছেন। নতুন এই পরিসেবাগুলো যুক্ত হওয়ার ফলে রেলসেবা আরও সুন্দর ও উন্নত হবে। ঈদ সামনে রেখে মানুষ সুন্দরভাবে ঘরে ফিরতে পারবে। আর জাদুঘরের মাধ্যমে জানতে পারবে দেশের ইতিহাস।

ঈদের পর বঙ্গবন্ধু রেল জাদুঘর সবার জন্য খুলে দেওয়া হবে। রেলপথে এ ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর সারা দেশে ঘুরবে। বঙ্গবন্ধুর জীবন সংগ্রাম, স্বাধীনতা যুদ্ধ আর ইতিহাস সমন্বয়ে এ জাদুঘর নির্মাণ করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর তৈরির মূল ভূমিকায় ছিলেন রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (আরএস) মঞ্জুর-উল-আলম চৌধুরী। তিনি জানান, রেলের ইতিহাসে প্রথম ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরটি ইতোমধ্যে দর্শনার্থীদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে। জাদুঘরটিতে ১৯২০ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক জীবন, মুক্তিযুদ্ধ, সংগ্রামী ঘটনা প্রবাহ তুলে ধরা হয়েছে। ব্রডগেজ কোচের জাদুঘরটি পশ্চিমাঞ্চল ও মিটার গেজের জাদুঘরটি পূর্বাঞ্চলে ঈদের পরে প্রদর্শন করা হবে। শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষের জন্য এটি উন্মুক্ত থাকবে।

এদিকে, রেলে ইঞ্জিনের অভাবে যাত্রীদের প্রায়ই বিপাকে পড়তে হয়। চলন্ত অবস্থায় প্রায়ই বিকল হয়ে পড়ে ইঞ্জিন। এসব ইঞ্জিন পুরনো হওয়ায় নির্ধারিত গতির চেয়ে অধিকাংশ ট্রেন চলছে কম গতিতে। ফলে সিডিউল বিপর্যয়েও পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। এ সংকট কাটাতে রেলওয়েতে যুক্ত হচ্ছে নতুন ৪৬টি ইঞ্জিন। রেলে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির নতুন ইঞ্জিন যুক্ত হওয়ার ফলে সংকট অনেকটাই কেটে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবের পাশপাশি সেবার মানও বাড়বে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে রেলওয়েতে ২৬৩টি ইঞ্জিনের প্রায় ৭৩ শতাংশেরই আয়ুষ্কাল শেষ হয়েছে অনেক আগেই। সেগুলো মেরামতের মাধ্যমে সচল রাখা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে রেলওয়ের উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে অত্যাধুনিক ৪০টি ব্রডগেজ এবং ১০টি মিটারগেজ এবং ২০টি মিটারগেজ ডিজেল ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিন ক্রয় করেছে সরকার। এতে অর্থায়ন করেছে এশীয় ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) এবং ইডিসিএফ কোরিয়া।

নতুন যুক্ত হওয়া ৪৬টি ইঞ্জিনের মধ্যে মিটারগেজ ৩০টি ও ব্রডগেজ ১৬টি। মিটারগেজ ইঞ্জিনের মধ্যে ৩০টি বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে। আর ৪০টি ব্রডগেজের মধ্যে ১৬টি এসেছে এবং যা এরই মধ্যে পরীক্ষামূলক চলাচলও সম্পন্ন হয়েছে। উদ্বোধন হওয়া ১৬ ব্রডগেজ লোকমোটিভই পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে যোগ করা হবে। ইতোমধ্যে সাতটি পশ্চিমাঞ্চলে হস্তান্তরও করা হয়েছে। বাকিগুলোও পর্যায়ক্রমে সেখানে যোগ করা হবে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি এই ব্রডগেজ ডিজেল ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিনগুলোর ক্ষমতা ৩২৫০ বিএইচপি হর্সপাওয়ার। ঘণ্টায় চলতে পারবে ১৪০ কিলোমিটার গতিতে। প্রতিটি ইঞ্জিনের এক্সেল লোড ১৮ দশমিক ৮ টন। নতুন ইঞ্জিনের সামনে ও পেছনে রয়েছে সিসি ক্যামেরা। চালকের বসার স্থান শীততাপনিয়ন্ত্রিত। রাতে আলোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে এলইডি লাইট। এসব ইঞ্জিন পরিবেশবান্ধব ও জ্বালানি সাশ্রয় করবে এবং উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন হওয়ায় এগুলোর নির্ভরযোগ্যতা আগের তুলনায় অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২২
এইচএমএস/এসআইএস


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।