ঢাকা, শুক্রবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

সন্তানের বিরুদ্ধে মায়ের সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২২
সন্তানের বিরুদ্ধে মায়ের সংবাদ সম্মেলন

বরিশাল: বিধবা বৃদ্ধা মায়ের ভরণপোষণ ও বয়স্কভাতার টাকা ঠিকমত না দেওয়াসহ ছোট ২ সন্তানের সম্পত্তি আত্মাসাতের অভিযোগ এনে বড় ও মেঝ ছেলের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নগরের মড়ক খোলার পুল সংলগ্ন এলাকার মৃত. শাজাহান ডাকুয়া স্ত্রী মোসা. আয়শা বেগম (৬২)।  

মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ জননী সাহান আরা বেগম স্মৃতি মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আয়শা বেগমের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার ছোট ছেলে হাছান ডাকুয়া।

লিখিত বক্ত‌ব্যে তি‌নি ব‌লেন, তার ৪ ছেলে ১ মেয়ে। বর্তমানে তিনি তার ছোট ছেলে অটোচালক হাছান ডাকুয়ার সংসারে থাকেন। সেঝ ছেলে ও একমাত্র মেয়ে তার খোঁজ-খবর নিলেও বড় ও মেঝ ছেলে কোন খোঁজখবর নেয় না।

বড় ছেলে মো. মোশারেফ ডাকুয়া এবং মেঝ ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন ডাকুয়া। এ দুইজন মিলে তারা তাদের ভাই-বোন মো. হাছান ডাকুয়া, রাবেয়া বেগম ও মো. মোজাম্মেল হোসেন ডাকুয়ার নগদ অর্থসহ অর্ধ কোটি টাকার বেশি সম্পত্তি কূটকৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে। সর্বশেষ আয়শা বেগমের স্বামী ও তার ৩ বোন অর্থাৎ আয়শার ৩ ননদসহ ৪ ছেলে মিলিত হয়ে স্ট্যাম্প চুক্তিতে পারিবারিক মীমাংসায় বসে। চুক্তি অনুযায়ী মোশারেফ ও আনোয়ার মিলে ৮ লাখ টাকা মোজাম্মেল ও হাছানকে দেবে এবং তাদের বাবা শাজাহান ডাকুয়াকে ৩ লাখ দেবে ছেলে মোশারেফ ও আনোয়ার। কিন্ত সেই চুক্তির ওয়াদা রাখেনি মোশারেফ ও আনোয়ার। ২ ভাইকে সম্পত্তি বুঝিয়ে না দেওয়ায় বড় ভাই মোশারেফ ও মেঝ ভাই আনোয়ারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেয় ছোট ভাই হাছান ডাকুয়া। এরপরই আনোয়ারের স্ত্রী শিউলি বেগম বাদী হয়ে হাছানের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। বিচারক দু’পক্ষের কথা শুনে মামলাটি খারিজ করে দেন। এরপর মোশারেফ ক্ষিপ্ত হয়ে হাছানের বিরুদ্ধে আদালতে ২টি মামলা দায়ের করেন।

মোশারেফ ডাকুয়া কাশিপুর ইউনিয়নের মধ্য শারশী গ্রামের বাড়ির বাগানের গাছ বিক্রি করে প্রায় ৫ লাখ টাকা নিয়েছেন। জমি বিক্রি করে প্রায় ১০ লাখ টাকা, নতুন বাজার এলাকায় ৩টি স্টলে ১২ বছর, ৬ বছর ও ৪ বছরে ভাড়া বাবদ প্রায় ২০ লাখ টাকা, ডিপিএস বাবদ ২ লাখ টাকা, সমিতির ২০ হাজার, মোজাম্মেল হোসেন ডাকুয়া ১১ বছর বাহরাই দেশে থাকা অবস্থায় তার বড় ভাই মোশারেফ ডাকুয়ার কাছে নানাভাবে পাঠিয়েছে ১৮ লাখ টাকা। কারণ, মোশারেফ কাউনিয়া এলাকায় একটি ফ্ল্যাট দেওয়ার কথা ছিল মোজাম্মেলকে। কিন্তু উপরোক্ত সবকিছু মোশারেফ তার ভাই বোনদের ঠকিয়ে নিজে আত্মসাৎ করেছেন। এর সঙ্গে হাত মিলিয়েছে ২য় সন্তান মো. আনোয়ার হোসেন ডাকুয়া। এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে বড় ও মেঝ ছেলে মিলে আমাকে (আয়শা বেগম) একাধিকবার মারধর করেছে। তার স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায়ও বড় ছেলে প্রতারণাপূর্বক জাল দলিল তৈরি করে ১১ শতাংশ জমি নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্ত ছোট ২ ছেলের কারণে পারেনি।

বড় ও মেঝ ছেলের সম্পতির আয়ের উৎস কী? তা জানতে চাইলেই সব রহস্য বেরিয়ে আসবে। সন্তানদের মধ্যে বড় ছেলেই ছিল শিক্ষিত। আর সেই এমন করল। আমি এর সমাধান চাই। নয়তো মা হয়ে আমি নিজেই অপরাধী ২ সন্তানের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেবো।  

অভিযোগের বিষয়ে মোবাইলফোনে মোশারফের কাছে জানতে চাইলে, তিনি উল্টো অভিযোগ করে বলেন, বাবাকে ফেলে রেখে মা তাবলিগে চলে গিয়েছিলেন। সেই থেকে দূরত্ব। তবে, মা তার সঙ্গে থাকতে চাইলে তিনি রাখবেন। অনিয়ম দুর্নীতির বিষয় প্রশ্ন তুললে মোশারেফ সরাসরি সাক্ষাৎ করতে চান বলে ব্যক্ত করেন।

আনোয়ারের সঙ্গে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করলে তিনি রং নম্বর বলে নিজেকে গফুর বলে দাবি করেন। অথচ তার ছোট ভাই হাছান তার মেঝ ভাইয়ের মোবাইল নম্বর বলে দাবি করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২২
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।