ঢাকা, সোমবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ মে ২০২৪, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শারীরিক সম্পর্কের কথা ফাঁসের ভয় দেখানোয় প্রেমিকাকে হত্যা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২২
শারীরিক সম্পর্কের কথা ফাঁসের ভয় দেখানোয় প্রেমিকাকে হত্যা পুলিশের কবজায় মিঠুন আলী।

রাজশাহী: ‘প্রেমের সম্পর্ক ছিল আগে থেকেই। সেই সম্পর্ক গভীর হওয়ার পর বিয়ের জন্য চাপ দিয়েছিলেন প্রেমিককে।

তবে, তাকে বিয়ে করতে চাননি প্রেমিক। কিন্তু কোনোভাবেই এই বিষয়টি প্রেমিকাকে মানাতে পারেননি। উল্টো তাকে বিয়ে না করলে শারীরিক সম্পর্কের কথা ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখান। শেষ পর্যন্ত কৌশলে আবাসিক হোটেলে নিয়ে গিয়ে প্রেমিকাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন প্রেমিক। এরপর বাইরে থেকে হোটেল কক্ষের দরজায় তালা দিয়ে চলে যান। ’

রাজশাহীর আবাসিক হোটেলে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ওঠার পর রাতে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পরদিন দিন সোমবার (১৮ এপ্রিল) রাতে পাশের জেলা নাটোরের নিজ বাড়ি থেকে প্রেমিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের রহস্যের জট খোলে।

গ্রেফতার প্রেমিকের নাম মিঠুন আলী (২৮)। তিনি নাটোরের সদর থানার আগদিঘা গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি ইটভাটার কর্মচারী। তার স্ত্রী ও এক ছেলে আছে। আর হত্যাকাণ্ডের শিকার নারীর নাম জয়নব বেগম (৪০)। তিনি নাটোর সদর থানার আটঘরিয়া গ্রামের তছির প্রামাণিকের মেয়ে। তিনিও ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করতেন। জয়নবের এর আগে বিয়ে হয়েছিল। তবে, বনিবনা না হওয়া স্বামীর সঙ্গে তার তালাক হয়ে গিয়েছিল। এর আগে, রোববার (১৭ এপ্রিল) রাতে রাজশাহী মহানগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় ড্রিম হ্যাভেন আবাসিক হোটেল থেকে এই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও আসামি গ্রেফতারের বিষয়টি জানাতে মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে রাজশাহী মহানগর পুলিশের সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে ঘটনার বিস্তারিত তুলে উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক।

রাজশাহীর পুলিশ কমিশনার বলেন, তিন মাস ধরে জয়নব ও মিঠুনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাদের মধ্যে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে জয়নব বিয়ের জন্য চাপ দিয়ে শারীরিক সম্পর্কের কথা ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছিলেন মিঠুনকে। এই করণেই বিয়ের কথা বলে পরিকল্পিতভাবে রাজশাহীর একটি হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয় প্রেমিকা জয়নবকে। সকালে হোটেলে নিয়ে তোলার পর মিঠুন তার সঙ্গে আবারও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। এরপর তাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে ওই হোটেলের কক্ষে বাইরে থেকে তালা দিয়ে সবার অগোচরে পালিয়ে যায়। পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, মিঠুনকে গ্রেফতারের সময় তার ঘরে তল্লাশি করে ঘটনার দিন ব্যবহৃত পোশাক ও নিহত জয়নবের মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের বড় ভাই তছলিম প্রামাণিকের দায়ের করা হত্যা মামলায় আজ মিঠুকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

এর রোববার সকাল ১০টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার ড্রিম হ্যাভেন নামের ওই আবাসিক হোটেলে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ৪০৩ নম্বর কক্ষ ভাড়া নেন এক কথিত দম্পতি। পরে দিনগত রাত ১টার দিকে তার হোটেল কক্ষের মধ্যে এক নারীর মরদেহ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে রাজপাড়া থানা পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এর আগে, ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে সিআইডি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২২
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।