ঢাকা, সোমবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ মে ২০২৪, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

যশোর-ঝিনাইদহ সড়কের ‘সেই’ ৬ ট্রাক কাঠ মিললো মাগুরায়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২২
যশোর-ঝিনাইদহ সড়কের ‘সেই’ ৬ ট্রাক কাঠ মিললো মাগুরায়

যশোর: যশোর-ঝিনাইদহ সড়কের চুড়ামনকাঠি এলাকা থেকে ৬ ট্রাক কাঠ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। ৭ দিন পর সেই কাঠগুলোর সন্ধান মিলেছে মাগুরার শালিখা উপজেলার সীমাখালী বাজারে।

তবে অভিযুক্ত ঠিকাদার সালাহউদ্দিন এ পর্যন্ত পুলিশকে কাঠের বৈধ কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ঠিকাদার রাকিব হাসান যশোর-ঝিনাইদহ সড়কের গাছ কাটার কাজ বন্ধ রাখার জন্য যশোর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। পাশাপাশি আত্মসাতকৃত বিপুল পরিমাণ কাঠ উদ্ধারে আইনি সহায়তা পেতে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয় যশোর ও শালিখা থানায় একটি করে লিখিত এবং বন বিভাগ মাগুরায় মৌখিক অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগে রাকিব হাসান উল্লেখ করেন, যশোর-ঝিনাইদহ সড়ক উন্নয়ন কাজে খাড়া গাছগুলো বিক্রয়ের দরপত্র আহ্বান করে যশোর জেলা পরিষদ। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে সড়কের ২নং লটের ৩০১-৬০০ নং পর্যন্ত গাছ কেনার অনুমতি পান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নুসরাত এন্টারপ্রাইজের মালিক সালাহউদ্দিন। এরপর ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর গাছগুলো কাটার জন্য ৫০% ব্যবসায়িক অংশীদার হিসেবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রাকিব হোসেনের মালিক রাকিব হোসেনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। চুক্তির শর্ত সাপেক্ষে গাছ কাটার কাজ শুরু হয়। কিন্ত গত ৭ দিন আগে গোপনে যশোর সদরের চুড়ামনকাঠি এলাকায় কাজের সাইট থেকে ২ গাড়ি (৯০০ সেফটি) কাঠ ট্রাকে করে নিয়ে যান সালাহউদ্দিন। এতে উভয় ঠিকাদারের মধ্যে সুসম্পর্ক ব্যাহত হয় এবং বাকি গাছগুলো কাটায় প্রতিবন্ধকা সৃষ্টি হয়। এরপর বিষয়টি সমাধানের জন্য গত ১২ এপ্রিল উভয় পক্ষ বসার দিন ধার্য করে। কিন্তু ১১ এপ্রিল সকালে গোপনে ২টি ক্রেন দিয়ে রাকিব হাসানের ভাগের ৪ ট্রাক কাঠ সালাহউদ্দিন সীমাখালী বাজারে নিয়ে এসে তার দোকানের পেছনে ও বাড়ির মসজিদের পাশে রাখেন।

বিষয়টি জানতে পেরে পরদিনই ওই সড়কের গাছ কাটার কাজ বন্ধ রাখার জন্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ঠিকাদার রাকিব হাসান। পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ কাঠ উদ্ধার ও আইনি সহায়তা পেতে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয় যশোর ও শালিখা থানায় একটি করে লিখিত এবং বন বিভাগ মাগুরায় মৌখিক অভিযোগ করেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ঠিকাদার সালাহউদ্দিনের মুঠোফোনে (০১৭০০-৭৪৩৮৪৯) একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মাগুরা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা তপেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ‘দ্বিতীয় পক্ষ সরাসরি থানায় অভিযোগ করবে। তদন্ত সাপেক্ষে পুলিশ এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। অথবা আদালতে মামলা করার পর কাঠগুলো অবৈধ প্রমাণিত হলে বনবিভাগকে তা জব্দ করতে নির্দেশ দিলে তখনই আমরা ব্যবস্থা নিতে পারব। ’

জানতে চাইলে যশোর জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমি শুনেছি কাজের সাইটে দুই পার্টনারের মধ্যে একটা সমস্যা হয়েছে। তবে কাঠ চুরি হয়েছে কিনা সরেজমিন তদন্ত না করে বলা যাচ্ছে না। ’

প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফ-উজ-জামান বলেন, ‘অভিযোগ এখনও আমি দেখিনি। অভিযোগটি দেখে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

এ ব্যাপারে শনিবার (১৬ এপ্রিল) মাগুরার শালিখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিশারুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে আত্মসাতকৃত ৬ ট্রাক কাঠের সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার এসআই তৌহিদ হোসেন।

তিনি বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর বুধবার (১৩ এপ্রিল) ওসি স্যার আমাকে পাঠিয়েছিলেন। এদিন বিকেলে সীমাখালী বাজারের কলু বাড়ির মোড়ে অভিযুক্ত ঠিকাদারের সারের দোকান ও বাড়ির মসজিদের পাশে কাঠগুলো পাওয়া গেছে। বৈধতা যাচাইয়ের জন্য উভয় পক্ষকে থানায় আসতে বলা হয়েছে। যাচাই শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

বাংলাদেশ সময়:  ১০২১ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২২
ইউজি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।